অ্যান্টিজেন টেস্ট চালু হবে কবে

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০১:৪৯ পিএম, ০৭ অক্টোবর ২০২০

দ্রুত করোনা শনাক্তে দেশের সব সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা হাসপাতাল, স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও পিসিআর ল্যাবে অ্যান্টিজেন টেস্ট চালুর অনুমতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দিলেও এ নিয়ে মাথা ব্যথা নেই স্বাস্থ্য অধিদফতরের।

গত ১৭ সেপ্টেম্বর অনুমতি দেয়ার পর তিন সপ্তাহ পার হলেও কবে নাগাদ অ্যান্টিজেন টেস্ট চালু হতে পারে সে বিষয়ে সুনিশ্চিত করে কিছুই বলতে পারছে না স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বশীলরা।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ) ডা. ফরিদউদ্দিন মিঞা বলেন, এ ব্যাপারে কোনো অগ্রগতি নেই। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে অ্যান্টিজেন টেস্ট চালুর ব্যাপারে নির্দেশনা থাকলেও এটি চালুর নীতিমালা প্রয়োজন। নীতিমালা প্রণয়নের কাজ শুরু হলেও তা চূড়ান্ত হয়নি। ফলে খুব শিগগিরই এ টেস্ট চালু সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান তিনি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বরাত দিয়ে বিভিন্ন সভায় দেশে শীতাকলে সেকেন্ড ওয়েভ শুরু হতে পারে বলে আশঙ্কা করে বলছেন, সেকেন্ড ওয়েভ মোকাবিলায় পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে আইইডিসিআরের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন জানান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো সেকেন্ড ওয়েভ শুরু হলে বিপুল সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে যেসব এলাকায় অধিক সংখ্যক আক্রান্ত পাওয়া যাবে সেখানে এ টেস্ট কার্যকর হবে বলে জানান তিনি।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ড. বিলকিস বেগম স্বাক্ষরিত ১৭ সেপ্টেম্বরের এক চিঠিতে অ্যান্টিজেন টেস্টের অনুমোদনের কথা জানানো হয়।

চিঠিতে বলা হয়, সারাদেশে অ্যান্টিজেন টেস্টের চাহিদার প্রেক্ষিতে অতি স্বল্প সময়ে করোনা শনাক্তে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের প্রস্তাবনা এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১১ সেপ্টেম্বর ‘ইনটারিম গাইডেন্স’ অনুসরণপূর্বক দেশের সব সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা হাসপাতাল, সরকারি পিসিআর ল্যাব এবং সব স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে অ্যান্টিজেনভিত্তিক টেস্ট চালুর অনুমতি নির্দেশক্রমে প্রদান করা হলো।

চিঠিতে শর্ত হিসেবে বলা হয়েছে, যাচাই বাছাইয়ের লক্ষ্যে স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রক্রিয়াধীন করোনা ল্যাব সম্প্রসারণ নীতিমালাটি চূড়ান্ত হলে তা যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে করোনা মোকাবিলায় গঠিত জাতীয় পরামর্শক কমিটির সর্বশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় গত ১৭ সেপ্টেম্বর। বৈঠকে করোনা শনাক্তে চালু থাকা পিসিআর পরীক্ষার পাশাপাশি অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডি টেস্ট কার্যক্রম চালুর পরামর্শ দেয়া হয়।

কমিটির চেয়ারপারসন প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লা স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমানে পিসিআর টেস্টের মাধ্যমে করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে যার পরিমাণ তুলনামূলক কম।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনা পরীক্ষার পরিমাণ বৃদ্ধি করতে পারলে আরও বেশি সংক্রমণ শনাক্তের সম্ভাবনা রয়েছে। এ উদ্দেশ্যে জাতীয় পরামর্শক কমিটি অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডি টেস্টের জন্য একাধিকবার পরামর্শ দিয়েছে।

অ্যান্টিজেন হচ্ছে ভাইরাসের প্রোটিন, যা শরীরের ভেতর প্রবেশ করে কোষের প্রোটিন তৈরির পদ্ধতি ব্যবহার করে নিজের প্রতিলিপি তৈরিতে শুরু করে। শরীরের ভেতর ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, প্যারাসাইটস প্রবেশ করলেই শরীর সেটাকে অ্যান্টিজেন হিসেবে গণ্য করে।

কারও পরীক্ষায় অ্যান্টিজেন পাওয়া গেলে তিনি ভাইরাসে আক্রান্ত বলে ধরে নেয়া হয়।

অ্যান্টিবডি অ্যান্টিজেনকে ঠেকাতে কাজ করে। প্লাজমা থেরাপি অথবা টিকা প্রয়োগের মাধ্যমে আসলে সেই অ্যান্টিবডি তৈরিতে সহায়তা করা হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় কোনও মেশিনের প্রয়োজন নেই, শুধু কিট দিয়ে দ্রুত সময়ে নির্ণয় সম্ভব। আর অ্যান্টিজেন পরীক্ষা মূল্য সাশ্রয়ী। ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে অ্যান্টিজেন পরীক্ষার ফল পাওয়া সম্ভব।

অ্যান্টিজেন টেস্ট ব্যাপক হারে করোনা সংক্রমণ রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলেও জানান তারা।

এমইউ/এএইচ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।