করোনার দুই বছরে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
করোনার কারণে গত দুই বছরে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্য খাতকে বর্তমানে সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। দেশে প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্য ১৮ এবং শিশু ১২ শতাংশ কোনো না কোনো মানসিক রোগে আক্রান্ত।
রোববার (৬ নভেম্বর) রাজধানী শ্যামলীর জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে কমিউনিটি পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণ পর্যালোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জাহিদ মালেক বলেন, মানসিক স্বাস্থ্যসেবা আগে পিছিয়ে থাকলেও এখন সামনে এসেছে। ইনস্টিটিউটও সম্প্রসারিত হয়েছে। এনসিডি কর্নারে মানসিক স্বাস্থ্যকেও যুক্ত করা হয়েছে। এতে করে প্রান্তিক অঞ্চলের মানুষ সহজে কাউন্সেলিং পাবেন, চিকিৎসা পাবেন। দেশের ১৮ ভাগ মানুষ কোনো না কোনোভাবে মানসিকতা সমস্যায় ভোগে, শিশুরা ১২ ভাগ। তবে চিকিৎসায় এখনো পিছিয়ে। এটি যদি সারাদেশে বিস্তৃত করতে না পারি তাহলে প্রত্যাশা অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়া যাবে না।
তিনি বলেন, করোনার কারণে সব অসংক্রামক রোগে আমরা জোর দিতে পারিনি। স্বাস্থ্যে যে বাজেট, তার মধ্যে আবার মানসিক স্বাস্থ্যে বরাদ্দ কম। কিন্তু প্রতি বছর শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ এতে আক্রান্ত হচ্ছে। বিএমডিসি এটাতে জোর দেবে বলে আমরা আশা করছি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, যুগোপযোগী এই পরিকল্পনা করোনার কারণে এতদিন বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। এরপর আসলো ডেঙ্গু। কোভিডে মানসিক সমস্যা প্রকট হয়ে দাঁড়ায়। অনেক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ে, ডমিস্টিক ভায়োলেস্স বেড়ে যায়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে টেকসইভাবে এটি নিয়ে কাজ করতে গেলে বিদ্যমান ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। বিশেষ করে বিভাগীয় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোতে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে যেসব বিভাগ রয়েছে তা আরও জোরদার করতে হবে। প্রান্তিক পর্যায়ে কীভাবে মানসিক স্বাস্থ্য পৌঁছে দেওয়া যায় সেটা নিয়েই আমাদের লক্ষ্য। মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে নীতিমালা তৈরি করে দেবে।
মূল আলোচনায় সায়মা ওয়াজেদ বলেন, বাংলাদেশে মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের স্বল্পতা প্রকট। মানসিক স্বাস্থ্যক্ষেত্রে আইন, নীতিমালা ও কৌশলপত্র প্রণয়নসহ বাংলাদেশের বেশ কিছু প্রণিধানযোগ্য কাজ রয়েছে। এখন প্রয়োজন তৃণমূল পর্যায়ে মানসিক স্বাস্থ্য সেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া। মানসিক স্বাস্থ্য সেবার পাশাপাশি জনগণের ভেতরে সুস্থতা সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করাও জরুরি।
তিনি জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য কৌশলপত্রের আলোকে ভবিষ্যত করণীয় ও কর্মকৌশল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. মুঃ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ, এনসিডিসি প্রোগ্রামের লাইন ডাইরেক্টর অধ্যাপক ডা. মো. রোবেদ আমিন, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, এনডিডি সুরক্ষা ট্রাস্টের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. গোলাম রব্বানী, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. সাইদুর রহমান, কাজী জেবুন্নেছা বেগম, মনোজ কুমার রায় প্রমুখ।
এএএম/এমআরএম/জেআইএম