ভারতে মেডিসিন বিশেষজ্ঞদের বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে বিশেষ বক্তা স্বপ্নীল

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:৫৫ পিএম, ২৬ জানুয়ারি ২০২৩
অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল

ভারতের মেডিসিন বিশেষজ্ঞদের জাতীয় সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ফিজিশিয়ানস অব ইন্ডিয়ার ৭৮তম বাষিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে বিশেষ আমন্ত্রিত বক্তা হিসেবে কিনোট বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল।

সম্মেলনে ন্যাসভ্যাক সম্বন্ধে বিস্তারিত তথ্য ও উপাত্ত উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি ডিভিশনের ডিভিশন প্রধান ডা. স্বপ্নীল।

বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) ভারতের আহমেদাবাদের মহাত্মা মন্দির কনভেনশন অ্যান্ড এক্সিবিশন সেন্টারে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ভুপেন্দ্রভাই প্যাটেল সম্মেলন উদ্বোধন করেন।

ন্যাসভ্যাক হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের চিকিৎসায় সর্বশেষ সংযোজন। এটি একটি থেরাপিউটিক ভ্যাকসিন যা হেপাটাইটিস বি’র চিকিৎসায় নতুন সম্ভবনার দুয়ার উন্মোচন করছে। সম্প্রতি ফন্টিয়ারর্স ইন মেডিসিন নামক পৃথিবীর একটি অন্যতম শীর্ষস্থানীয় মেডিকেল জার্নালে ন্যাসভ্যাক দিয়ে চিকিৎসা পাওয়া রোগীদের চিকিৎসা শেষ হওয়ার পাঁচ বছর পরের ফলো-আপ প্রকাশিত হয়েছে।

আরও পড়ুন>>লিভারের রোগ থেকে বাঁচতে সচেতনতা জরুরি: ডা. স্বপ্নীল

এতে দেখা যাচ্ছে, এসব রোগী ন্যাসভ্যাক দিয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করার পাঁচ বছর পরও হেপাটাইটিস বি’র অন্য কোনো ওষুধ গ্রহণ না করেও সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন। এর আগে ন্যাসভ্যাক দিয়ে চিকিৎসা নেওয়া রোগীদের দুই এবং তিন বছরের ফলো-আপ ডাটাও পৃথিবীর দুটি শীর্ষ জার্নাল প্যাথোজেন্স এবং ভ্যাকসিনস-এ প্রকাশিত হয় এবং সেখানেও একই ধরনের ফলাফল পাওয়া যায়।

বর্তমানে হেপাটাইটিস বি’র চিকিৎসায় যেসব নিউক্লিওসাইড ও নিউক্লিওটাইড অ্যানালগ ওষুধ মুখে প্রয়োগ করা হচ্ছে, সেগুলো বহু বছর ধরে টানা ব্যবহার করতে হয়, আর কোনো কোনো ক্ষেত্রে আজীবন। এরপরও কোনো কোনো রোগীর লিভারের রোগ নিয়ন্ত্রণে আসে না। আর যারা অনিয়মিত ওষুধ ব্যবহার করেন তাদের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি যে শুধু অনেক বেশি তাই-ই নয়, বরং তাদের কারো কারো লিভার ফেইলিওরও ডেভেলপ করতে পারে। অন্যদিকে ন্যাস্যভ্যাকের মাত্র ১০টি ডোজ ছয় মাস ধরে ব্যবহার করে তাতেই এ ধরনের ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে।

সম্প্রতি জাপানি বিশেষজ্ঞরাও সেদেশে ন্যাসভ্যাকের ফেজ ২ ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ফলাফল হেপাটোলজি রিসার্চ নামের একটি শীর্ষস্থানীয় লিভার জার্নালে প্রকাশ করেছেন। বাংলাদেশে ন্যাসভ্যাকের ফেজ ১,২ ও ৩ ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালগুলো অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীলের নেতৃত্বে সম্পাদিত হয়। ন্যাসভ্যাক উদ্ভাবনের জন্য অধ্যাপক স্বপ্নীল এবং জাপান প্রবাসী বাংলাদেশি চিকিৎসাবিজ্ঞানী ডা. শেখ মোহাম্মদ ফজলে আকবর কয়েকজন জাপানি এবং কিউবান চিকিৎসাবিজ্ঞানী কিউবান একাডেমি অব সাইন্সেস থেকে ২০১৯ সালে প্রিমিও ন্যাশনাল পদক অর্জন করেন। আর গত বছর বাংলাদেশ একাডেমি অব সাইন্সেস অধ্যাপক ডা. স্বপ্নীলকে প্রদান করে ‘বাস গোল্ড মেডেল অ্যাওয়ার্ড’।

আরও পড়ুন>> পিএইচডি ডিগ্রি পেলেন ডা. মামুন আল মাহতাব

অধ্যাপক ডা. স্বপ্নীল বলেন, ভারতের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের বৃহত্তম সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ফিজিশিয়ানস অব ইন্ডিয়ার এবারের সম্মেলনে ন্যাসভ্যাকের ওপর বিশেষ লেকচারটি নিঃসন্দেহে চিকিৎসাবিজ্ঞানে বাংলাদেশের এই সাম্প্রতিক অর্জনটির একটি বড় স্বীকৃতি।

ডা. স্বপ্নীল ২০১৭ সালে অ্যাসোসিয়েশন অব ফিজিশিয়ানস অব ইন্ডিয়ার একাডেমিক উইং ইন্ডিয়ান কলেজ অব ফিজিশিয়ান্স থেকে সন্মানসূচক ফেলোশিপ (এফআইসিপি) অর্জন করেন।

ইএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।