প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট বন্ধ নিয়ে যা বললো স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:৫৪ পিএম, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

রাজধানীর বনানীতে অবস্থিত ‘প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট লিমিটেড ও ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টার’ গত ২০ সেপ্টেম্বর বন্ধ করে দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তবে মালিকপক্ষের দাবি উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে স্বার্থ হাসিলের জন্য প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করা হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে হাসপাতাল বন্ধের কারণ জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক সমূহ) ডা. মো. হাবিবুল আহসান তালুকদার সই করা এক বিবৃতিতে কারণগুলো জানানো হয়।

যেসব অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

১. লাইসেন্স ছাড়া রক্ত পরিসঞ্চালন কার্যক্রম পরিচালনা করা, যা নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন আইন-২০০২ এর ধারা ১৮ (১) অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ।

২. মানহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ রি-এজেন্ট ব্যবহার করা।

৩. সেবা গ্রহীতাদের নিকট থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফি বাবদ অতিরিক্ত অর্থ আদায়।

৪. মেডিকেল চেকআপ সেন্টারের লাইসেন্স না থাকা সত্ত্বেও বিদেশগামী যাত্রীদের পরীক্ষার সনদ দেওয়া।

৫. হাসপাতালের লাইসেন্স ছাড়া জরুরি বিভাগের কার্যক্রম চালু রাখা।

৬. অদক্ষ ও প্রশিক্ষণবিহীন জনবল দিয়ে ল্যাবরেটরিতে কার্যক্রম পরিচালনা করা এবং রোগীদের ভুল রিপোর্ট দিয়ে প্রতারিত করা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের যেসব পদক্ষেপ নেয়

* ১৮ মে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিদর্শন দল প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শনকালে নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন আইন অমান্য, অতিরিক্ত অর্থ আদায়, মেয়াদ উত্তীর্ণ রি-এজেন্ট এবং অদক্ষ জনবলের মাধ্যমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার অভিযোগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্মারক নং-স্বা. অধি./হাস./বিবিধ/২০২৩/৯২৬ মূলে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম বন্ধ এবং লাইসেন্স স্থগিত করা হয়।

* রেজিস্ট্রেশন স্থগিত করা ও কার্যক্রম বন্ধ করার কারণে প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট রিটপিটিশন ৬৫৬১/২০২৩ দায়ের করে।

* প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট কর্তৃপক্ষ রেজিস্ট্রেশন স্থগিত করা ও কার্যক্রম বন্ধ করার কারণে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আপিল করে। আপিল নিষ্পত্তি করা হয় আদালতের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে।

৪. আদালত রুলটি খারিজের জন্য তারিখ ঘোষণা করলে প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট কর্তৃপক্ষ সময়ের আবেদন করে।

৫. পরবর্তীতে সম্পূরক জবাব দায়ের করলে আদালত মূল কোর্টের জন্য নির্দেশনা দেন এবং সাতদিনের মধ্যে প্রার্থীর আবেদন নিষ্পত্তির জন্য রুল জারি করেন।

৬. পরবর্তীতে প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট অন্য আদালতে পুনরায় ১২১২৬/২০২৩ রিটপিটিশন দায়ের করেন।

৭. আদালতের নির্দেশনার কারণে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ ১৯ সেপ্টেম্বর তাদের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে অবহিত করে।

৮. এরপর প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট কর্তৃপক্ষ আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কে আপত্তিকর, মানহানিকর বক্তব্য দেয়।

৯. সারাদেশে বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার যেগুলো অবৈধ ও লাইসেন্সবিহীন অনিয়মের মধ্যে চলছে তাদের কার্যক্রম বন্ধের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে যাতে জনগণ হয়রানির স্বীকার না হয়।

১০. চলমান কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করে জনমনে বিভ্রান্তির জন্য প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট কর্তৃপক্ষ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মিথ্যা বানোয়াট বক্তব্য উপস্থাপন করে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে।

এর আগে ২৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে (ক্র্যাব) সংবাদ সম্মেলন করে প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট। এসময় প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক খন্দকার আবুল খায়ের প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট দখল করার অভিযোগ করেন।

এএএম/জেডএইচ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।