উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্তদের মাত্র ৩৮ শতাংশ চিকিৎসা নেন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:২৮ পিএম, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

উচ্চ রক্তচাপে বেশিরভাগ মানুষ প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা নেন না। আক্রান্তদের (৩০-৭৯ বছর বয়সী) অর্ধেকই জানেন না তাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে। তাদের মধ্যে চিকিৎসা নেওয়ার হারও খুবই কম। মাত্র ৩৮ শতাংশ রোগী চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। এছাড়া নিয়মিত ওষুধ সেবনের মাধ্যমে রোগটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন মাত্র ১৫ শতাংশ অর্থাৎ প্রতি সাতজনে একজন।

শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর ) বিশ্ব হার্ট দিবস উপলক্ষে গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) আয়োজিত ‘বাংলাদেশে হৃদরোগ ঝুঁকি এবং করণীয়’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে জনস্বাস্থ্য ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা এসব তথ্য তুলে ধরেন। ওয়েবিনার আয়োজনে সহযোগিতা করে গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই)।

বক্তারা বলেন, বিশ্বে প্রতিবছর দুই কোটিরও বেশি মানুষ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। যার অন্যতম কারণ উচ্চ রক্তচাপ। হৃদরোগজনিত মৃত্যুর ৮০ ভাগ প্রতিরোধযোগ্য হলেও বাংলাদেশে হৃদরোগ ঝুঁকি এবং হৃদরোগজনিত মৃত্যু ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে।

তারা বলেন, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, তৃণমূল পর্যায়ে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধের সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং এ খাতে সরকারের বাজেট বৃদ্ধির মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপজনিত হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশেই মোকাবিলা করা সম্ভব।

অনুষ্ঠানে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে প্রতি চারজনে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) গ্লোবাল রিপোর্ট অন হাইপারটেনশন-২০২৩ অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতিবছর দুই লাখ ৭৩ হাজার মানুষ হৃদরোগে মৃত্যুবরণ করে, যার ৫৪ শতাংশের জন্য দায়ী উচ্চ রক্তচাপ।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ইপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, অসংক্রামক রোগে মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ উচ্চ রক্তচাপ। এটি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে আসবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ন্যাশনাল প্রফেশনাল অফিসার ডা. ফারজানা আক্তার ডরিন বলেন, বিনামূল্যে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ প্রদানের পাশাপাশি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবাকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপজনিত হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো সম্ভব।

জিএইচএআই-এর বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস বলেন, হৃদরোগ প্রতিরোধে কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ প্রদানের সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়ন করা জরুরি।

ওয়েবিনারে আলোচক হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন- প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের। এতে বাংলাদেশে উচ্চ রক্তচাপজনিত হৃদরোগের প্রকোপ ও করণীয় সম্পর্কে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রজ্ঞার হেড অব প্রোগ্রামস মো. হাসান শাহরিয়ার। ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেন প্রজ্ঞার কো-অর্ডিনেটর সাদিয়া গালিবা প্রভা। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নানা শ্রেণিপেশার মানুষ এ ওয়েবিনারে অংশ নেন।

এএএম/এমকেআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।