কোরবানির পশুর হাড়-চর্বি বিক্রি করা কি জায়েজ?

আমাদের দেশে অনেক এলাকায় কোরবানির ঈদের মৌসুমে ফেরিওয়ালারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে কোরবানির পশুর হাড় ও চর্বি কেনেন। মানুষও না জানার কারণে কোরবানির পশুর হাড় ও চর্বি তাদের কাছে বিক্রি করে ওই টাকা নিজের প্রয়োজনে খরচ করেন। এটা সম্পূর্ণ নাজায়েজ।

কোরবানির পশুর মাংস যেমন বিক্রি করা নিষিদ্ধ, এর চামড়া, হাড়, চর্বিসহ সব অংশই সদকার নিয়ত ছাড়া বিক্রি করা নিষিদ্ধ। কোরবানির পশুর মাংস, চামড়াসহ সব অংশ নিজে খাওয়া যাবে, নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করা যাবে, মানুষকে খাওয়ানো যাবে বা হাদিয়া দেওয়া যাবে, দান করা যাবে, কিন্তু সদকার নিয়ত ছাড়া বিক্রি করা যাবে না।

কোরবানির পশুর কোনো অংশ নিজে না খেলে বা নিজের কাজে ব্যবহার না করলে তা সদকা করে দেওয়াই ভালো। যদি সদকা করার মতো কাউকে না পাওয়া না যায়, তাহলে সদকা করার নিয়তে বিক্রি করে ওই অর্থ সদকা করে দিতে হবে।

কোরবানির পশুর কোনো অংশ বিক্রয়ের পর বিক্রয়লব্ধ অর্থ যেমন নিজের কাজে ব্যবহার করা যাবে না, কোনো সম্পদশালী ব্যক্তিকে হাদিয়া হিসেবেও দেওয়া যাবে না। জাকাত গ্রহণের উপযুক্ত কোনো ব্যক্তিকে দান করতে হবে।

কোরবানির পশুর হাড়, চর্বি পারিশ্রমিক হিসেবেও দেওয়া যাবে না

কোরবানির পশুর হাড় ও চর্বি সদকার নিয়ত ছাড়া বিক্রি করা যেমন নাজায়েজ, কাউকে পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়াও নাজায়েজ। কসাই বা অন্যান্য কাজের লোকদের পারিশ্রমিক হিসেবে কোরবানির পশুর হাড়-চর্বি দেওয়া যাবে না।

হজরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন,

أَمَرَنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ أَقُومَ عَلَى بُدْنِهِ وَأَنْ أَتَصَدَّقَ بِلَحْمِهَا وَجُلُودِهَا وَأَجِلَّتِهَا وَأَنْ لَا أُعْطِيَ الْجَزَّارَ مِنْهَا قَالَ: نَحْنُ نُعْطِيهِ مِنْ عِنْدِنَا

রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে (বিদায় হজে) তার কোরবানির উটগুলো দেখাশুনা করতে, তার মাংস, চামড়া ও ঝুল দরিদ্রদের মধ্যে বণ্টন করে দিতে এবং কসাইকে কিছু না দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, আমরা আমাদের পক্ষ থেকে কসাইয়ের পারিশ্রমিক দেবো। (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)

এ হাদিসে নবিজি (সা.) কসাইকে পারিশ্রমিক হিসেবে চামড়া দিতে নিষেধ করেছেন। এই নিষেধাজ্ঞা হাড়-চর্বির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।

ওএফএফ/জেআইএম