দেশজুড়ে

ব্যবসায়ীকে অপহরণ, জীবিত ফেরত পেতে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি

ব্যবসায়ীকে অপহরণ, জীবিত ফেরত পেতে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি

কুষ্টিয়ায় ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবিতে জাহা বক্স (৩৮) নামের এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ করেছে দুর্বৃত্তরা।

Advertisement

রোববার (১৫ জুন) দিনগত রাত ৩টার দিকে সদর উপজেলার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার পশ্চিম আব্দালপুর গ্রামের স্কুলপাড়ায় এ অপহরণের ঘটনা ঘটে।

ঘটনাস্থল থেকে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবির একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ আব্দালপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলী হায়দার স্বপন মাস্টারকে আটক করেছে।

আলী হায়দার স্বপন চরমপন্থি সংগঠন জাসদ গণবাহিনীর আঞ্চলিক নেতা দাবি করা আলী রেজা সিদ্দিক কালুর ভাই।

Advertisement

অপহরণের শিকার মুদিদোকানি জাহা বক্স (৩৮) আব্দালপুর গ্রামের স্কুলপাড়ার কুদ্দুস আলীর ছেলে। বাড়ির পাশেই তিনি ‘প্রান্ত স্টোর’ নামে একটি মুদিদোকান চালাতেন।

জাহা বক্সের স্ত্রী সাথী খাতুন বলেন, ‘আমরা সবাই ঘুমাচ্ছিলাম। রাত ১টার দিকে অপরিচিত একজন স্যালাইন কেনার জন্য স্বামীকে ডাক দেয়। তিনি দোকান খুলে স্যালাইন দেওয়ার জন্য বাইরে যান। বেশ কিছু সময় পার হলেও তিনি ফিরে না আসায় তাকে খুঁজতে ঘরের দরজা খুলতে গেলে বুঝতে পারি বাইরে থেকে ছিটকানি আটকানো। এসময় আমার চিৎকারে শ্বাশুড়ি এসে ছিটকানি খুলে দেন। সঙ্গে সঙ্গে দোকানে গিয়ে আমার স্বামীকে আর পাইনি। দোকানের তালা খোলা ছিল এবং ক্যাশ বাক্সও খালি ছিল। এসময় দোকানের বাইরে বেঞ্চের ওপর আঠা দিয়ে আটকানো খামের মধ্যে একটি চিঠি পাই। চিঠিতে পাঁচ দিনের মধ্যে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছে। টাকা না দিলে আর পুলিশকে বললে লাশ পাবো না লিখেছে।’

ছেলে প্রান্ত বলেন, ‘আমার ঘরের দরজাও বাইরে থেকে আটকানো ছিল। বাইরে বেরিয়ে সঙ্গে সঙ্গে বাবার ফোনে কল দিয়ে বন্ধ পাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজ দোকানে হালখাতা ছিল। অন্যান্য দোকানিরা যারা সপ্তাহে বাকি পরিশোধ করতেন, তারাও টাকা দিয়ে গিয়েছিলেন। আনুমানিক চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা ক্যাশ বাক্সের নিচে রাখা ছিল। সে টাকাও পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা পুলিশকে জানিয়েছে। পুলিশ বাবাকে খুঁজছে।’

Advertisement

ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা একটি চিঠি থেকে অপহরণের বিষয়টি ধারণা করছে পুলিশ ও পরিবার। চিরকুটে লেখা রয়েছে, ‘আমরা দোকানদারকে তুলিয়ে নিয়ে গেলাম। পাঁচ দিনের ভেতরে ১৫ লাখ টাকা গুছিয়ে রাখ। আমরা এর ভেতরে ঠিকানা লিখে পাঠাবো যেন ঠিকানায় একা যেয়ে টাকা দেবে, ওকে? যেখান থেকে এনেছি সেখানে পৌঁছে দেবো। আর যদি পুলিশ বা কোনো লোককে জানানো হয় বা বলা হয়, তাহলে টাকা দিয়েও কাজ হবে না, জীবনে খোঁজ পাবে না। তাই সাবধান, জানাজানি করবে না। আমরা ভালোভাবে পৌঁছে দেবো। কোনো চালাকি করলে লাশও পাবে না। পাঁচ দিন পার হয়ে গেলে আর খোঁজ পাবে না।’

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান বলেন, ওই দোকান থেকে উদ্ধার হওয়া চিঠি যাচাই-বাছাই করে ধারণা করা হচ্ছে অপহরণ হয়েছে। অপহরণের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পরিবারের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরইমধ্যে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে আটক করেছে।

আল-মামুন সাগর/এসআর/এএসএম