গাজা নিয়ে ট্রাম্পের প্রস্তাবে জর্ডানের পর মিশরেরও কড়া প্রতিক্রিয়া

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:৩২ পিএম, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আবদেলাত্তি ও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও/ ছবি: এএফপি

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধে গাজা উপত্যকা নিয়ে জর্ডান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার পর এবার মিশরও তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আবদেলাত্তি জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনিদের নিজ ভূখণ্ডেই থাকতে দিতে হবে ও গাজার পুনর্গঠনের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে।

এর আগে মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদের মার্কিন প্রস্তাব সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেন। সেদিন ওয়াশিংটনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ না করেই গাজার পুনর্গঠন হবে ও এ বিষয়ে আরব বিশ্ব দৃঢ়ভাবে একমত।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে বৈঠকে মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই বার্তা দেন। বৈঠকে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, আরব দেশগুলো গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক স্থানান্তরের পরিকল্পনা কোনোভাবেই মেনে নেবে না।

মিশরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গাজায় মানবিক সংকট নিরসনের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। তবে কোনোভাবেই ফিলিস্তিনিদের তাদের ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য করা যাবে না।

অন্যদিকে, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ট্রাম্পের পরিকল্পনার নাম সরাসরি উল্লেখ না করলেও, মার্কো রুবিও গাজার ভবিষ্যৎ শাসন ও নিরাপত্তা নিয়ে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, হামাসকে গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণে থাকতে দেওয়া যাবে না ও ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদেলাত্তি জানান, মিশর নতুন মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত, তবে সেটি অবশ্যই ফিলিস্তিনিদের অধিকার ও মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতা রক্ষার ভিত্তিতে। তিনি মার্কিন মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের সঙ্গে বৈঠকেও একই বার্তা দেন।

প্রসঙ্গত, ফিলিস্তিনিরা গাজাকে তাদের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রের অংশ হিসেবে দেখে, তাই তাদের জন্য গাজা ছাড়ার প্রস্তাব একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। ট্রাম্পের পরিকল্পনার বিষয়ে আরব প্রতিবেশী দেশগুলোও পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে, তারা গাজার সংঘাতের কারণে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের নিজেদের দেশে আশ্রয় দিতে রাজি নয়।

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথমে প্রস্তাব দিয়েছিলেন, মিশর ও জর্ডান যেন গাজার ফিলিস্তিনিদের গ্রহণ করে। পরে তিনি আরও এগিয়ে গিয়ে গাজার ওপর মার্কিন নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা ঘোষণা করেন, যেখানে ফিলিস্তিনিদের নিজ দেশে ফেরার কোনো অধিকার থাকবে না।

ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা বিশ্বজুড়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে। মানবাধিকার সংগঠন ও জাতিসংঘ এটিকে জাতিগত নির্মূলের চেষ্টা হিসেবে দেখছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ঘটনার ফলে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি হতে পারে, যা যুক্তরাষ্ট্র ও আরব বিশ্বের সম্পর্কে নতুন দিক উন্মোচিত করতে পারে।

সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি

এসএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।