দ্য ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন

কর্মজীবী নারীদের জন্য সবচেয়ে ভালো দেশ কোনগুলো

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:২০ পিএম, ০৭ মার্চ ২০২৫
ছবি: এএফপি (ফাইল)

প্রত্যেক বছর নারী দিবসের আগে কর্মজীবী নারীদের জন্য ভালো দেশের সূচক প্রকাশ করে দ্য ইকোনমিস্ট। এতে ওইসিডিভুক্ত ২৯টি দেশে নারীদের কাজের পরিবেশের তুলনা করা হয়ে থাকে। শ্রমশক্তির অংশগ্রহণ, বেতন, প্যারেন্টাল ছুটি ও রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্বসহ মোট দশটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে এই সূচক তৈরি করা হয়।

সবশেষ পরিসংখ্যানে এক্ষেত্রে প্রথম স্থানে উঠে এসেছে সুইডেন। এর আগে টানা দুই বছর প্রথম ছিল আইসল্যান্ড। সূচকে সব সময়ই নর্ডিক দেশটি ভালো অবস্থানে থাকে। ওসিডিভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে নিচের দিকে থাকে দক্ষিণ কোরিয়া। তবে এবার দেশটির এক ধাপ উন্নতি হয়েছে। কারণ এ বছর একদম নিচে অবস্থান হয়েছে তুরস্কের। সূচকে সবচেয়ে বেশি উন্নতি হয়েছে নিউজিল্যান্ডের। আট ধাপ উন্নতি হয়ে নিউজিল্যান্ডের অবস্থান পঞ্চম।

ওইসিডিভুক্ত দেশগুলোতে শিক্ষায় নারীরা অনেক এগিয়ে রয়েছে। গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে দেশগুলোতে দেখা গেছে, ৪৫ শতাংশ নারী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রিধারী। যা পুরুষের ৩৬ দমশকি ৯ শতাংশ থেকে অনেক বেশি।

তবে শিক্ষায় ভালো অবস্থান থাকলেও দেশগুলোতে শ্রম শক্তিতে নারীদের অংশগ্রহণ পুরুষের তুলনায় কম। সবশেষ প্রকাশিত তথ্যে দেখা যাচ্ছে, কর্মের জন্য যোগ্য এমন নারীদের মধ্যে ৬৬ শতাংশের কর্মসংস্থান রয়েছে, যা পুরুষের ক্ষেত্রে ৮১ শতাংশ। তবে দেশ অনুযায়ী এক্ষেত্রে চিত্র ভিন্ন। যেমন আইসল্যান্ড ও সুইডেনে ৮০ শতাংশ নারী কর্মজীবী। তবে ইতালিতে এই হার ৫৮ শতাংশ।

তাছাড়া বেতনের ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। ওইসিডিভুক্ত দেশগুলোতে পুরুষদের তুলনায় নারীদের মজুরি এখনো ১১ দশমিক ৪ শতাংশ কম।

ব্যবসা ও রাজনীতিতে নারীদের অগ্রগতি চোখে পড়ার মতো। কোম্পানির বোর্ডে নারীদের অংশগ্রহণ ২০১৬ সালের ২১ শতাংশ থেকে বেড়ে এখন ৩৩ শতাংশ হয়েছে। নিউজিল্যান্ড, ফ্রান্স এবং ব্রিটেনে নারীরা এখন পুরুষদের সমান সংখ্যক বোর্ড পদে অধিষ্ঠিত। একইভাবে সুইডেন, লাটভিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রে নারীরা এখন সব ব্যবস্থাপনা পদের প্রায় অর্ধেক দখল করে আছে। ব্রিটেন আগের বছরের তুলনায় এই সূচকগুলোতে বিশেষভাবে ভালো পারফর্ম করেছে, যার ফলে তাদের সামগ্রিক স্কোর বেশি।

রাজনীতিতেও ওইসিডিজুড়ে নারীদের প্রতিনিধিত্ব বাড়ছে। গত বছরের নির্বাচনী জমজমাট আয়োজনের পর সূচকের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সংসদে নারীদের আসনের হার ৩৪ শতাংশ এর উপরে পৌঁছেছে।

২০২৪ সালের জুলাই মাসে ব্রিটেনে অতিরিক্ত ৪৩ জন নারী এমপি নির্বাচিত হওয়ার ফলে তাদের আসনের হার ৩৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ৪১ শতাংশ হয়েছে। জাপানি আইন প্রণেতাদের মধ্যে মাত্র ১৬ শতাংশ নারী, যদিও এটি দেশটিতে রেকর্ড সর্বোচ্চ।

প্যারেন্টাল সুযোগ-সুবিধার দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পারফর্মেন্স বিশেষভাবে খারাপ। এটিই একমাত্র ধনী দেশ যেখানে জাতীয়ভাবে বাধ্যতামূলকভাবে পিতামাতার ছুটি দেওয়া হয় না এবং শিশু যত্নের ব্যয় গড় মজুরির ৩০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়।

এক্ষেত্রে হাঙ্গেরি ও স্লোভাকিয়ায় উদার নীতি রয়েছে, যেখানে যথাক্রমে ৭৯ সপ্তাহ ও ৬৯ সপ্তাহের জন্য পূর্ণ বেতনের মাতৃত্বকালীন ছুটি দেওয়া হয়। জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার উদার পিতৃত্বকালীন ছুটির নীতি রয়েছে।

সূত্র: দ্য ইকোনমিস্ট

এমএসএম

 

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।