তাইওয়ানে অস্ত্র বিক্রি

মার্কিন ২০ কোম্পানি ও ১০ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চীনের নিষেধাজ্ঞা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:০১ পিএম, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫
মার্কিন ২০ কোম্পানি ও ১০ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চীনের নিষেধাজ্ঞা / ছবি : আনাদোলু এজেন্সি

তাইওয়ানে রেকর্ড পরিমাণ অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা জানিয়েছে চীন। শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) মার্কিন প্রতিরক্ষা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ২০টি কোম্পানি ও ১০ জন শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা করেছে বেইজিং।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বৃহৎ পরিসরের অস্ত্র বিক্রির ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় চীন বিদেশি নিষেধাজ্ঞা বিরোধী আইনের আওতায় তাইওয়ানে অস্ত্র সরবরাহে জড়িত ২০টি মার্কিন প্রতিরক্ষা কোম্পানি এবং ১০ জন শীর্ষ নির্বাহীর বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

চলতি মাসের শুরুতে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন তাইওয়ানের জন্য এককালীন রেকর্ড অস্ত্র বিক্রির প্যাকেজ অনুমোদন দেয়। আটটি পৃথক অস্ত্র প্যাকেজের মোট মূল্য ১১ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি বলে জানানো হয় যা তাইপের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অস্ত্র বিক্রি।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের অনুমোদিত এসব অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে, ৪ বিলিয়ন ডলারের বেশি মূল্যের ৬০টি এম১০৭এ৭ স্বচালিত হাউইটজার ও সংশ্লিষ্ট সরঞ্জাম, ৮২টি এম১৪২ হিমার্স মাল্টিপল রকেট লঞ্চার, ৪২০টি আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেম, ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি মূল্যের আলটিউস টিউব-লঞ্চড লয়টারিং ড্রোন মিউনিশন, ৩৫৩ মিলিয়ন ডলারের টোয় অ্যান্টি-ট্যাংক ক্ষেপণাস্ত্র।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই পদক্ষেপকে তীব্র ভাষায় নিন্দা জানিয়ে বলেছে, তাইওয়ান প্রশ্ন চীনের মূল স্বার্থের একেবারে কেন্দ্রে রয়েছে এবং চীন–যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটি এমন একটি রেডলাইন যা কোনোভাবেই অতিক্রম করা যাবে না।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, তাইওয়ান ইস্যুতে উসকানি দেওয়ার বা এই লাল রেখা অতিক্রমের যেকোনো প্রচেষ্টার জবাব চীন কঠোরভাবে দেবে। চীনা সরকার ও জনগণের জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষার সংকল্প, ইচ্ছা ও সক্ষমতাকে কেউ কখনোই অবমূল্যায়ন করতে পারবে না।

চীনের ঘোষিত পাল্টা ব্যবস্থার আওতায় সংশ্লিষ্ট মার্কিন কোম্পানি ও ব্যক্তিদের-চীনের ভেতরে থাকা স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ জব্দ করা হবে এবং চীনের ভেতরে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তাদের সঙ্গে লেনদেন, সহযোগিতা বা অন্য কোনো কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবে না।

এছাড়া ওয়াশিংটনকে ‘ওয়ান-চায়না নীতি’ ও চীন–যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে স্বাক্ষরিত তিনটি যৌথ ঘোষণাপত্র মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে বেইজিং। একই সঙ্গে তাইওয়ানে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ এবং তাইওয়ান প্রণালীর শান্তি ও স্থিতিশীলতা ক্ষুণ্ন হয়-এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, তাইওয়ান ইস্যুকে কেন্দ্র করে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কূটনৈতিক ও সামরিক উত্তেজনা আরও তীব্র হচ্ছে। এই পরিস্থিতি পূর্ব এশিয়া ও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও অনিশ্চিত করে তুলতে পারে।

সূত্র : সিনহুয়া
কেএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।