গৃহকর্মী নিয়ে ‘বৈষম্যমূলক’ মন্তব্যে বিপাকে কুয়েতি তারকা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:২৯ এএম, ০৩ আগস্ট ২০১৮

কুয়েতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রাম তারকা সুন্দোস আল কাত্তান গৃহকর্মীদের নিয়ে ‘বৈষম্যমূলক’ মন্তব্য করে বিপাকে পড়েছেন। তবে দমে না গিয়ে নিজের মতামতের ওপর অটল রয়েছেন সুন্দোস।

সুন্দোস আল কাত্তান মূলত ব্লগে রূপচর্চা নিয়ে লেখেন। আরবীয় অঞ্চলের নারীদের রূপচর্চা ও ফ্যাশন নিয়ে তিনি দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছেন। কুয়েতের মডেল সুন্দোস আল কাত্তানের ইনস্টাগ্রামে ২৩ লাখ ফলোয়ার। গত ১০ জুলাই তিনি একটি ভিডিও পোস্ট করেন। সেখানে কুয়েতে অবস্থান করা ফিলিপাইনের গৃহকর্মীদের সাপ্তাহিক ছুটি মঞ্জুর করা নিয়ে বিধিমালার কঠোর সমালোচনা করেন তিনি।

ভিডিও বার্তায় সুন্দোস বলেন, ‘এটি কিভাবে সম্ভব যে, আপনার বাড়িতে একজন গৃহকর্মী থাকবেন আর তার পাসপোর্ট তিনি নিজের কাছে রাখবেন! এর চেয়েও অদ্ভুত বিষয়, প্রতি সপ্তাহে তাদের একদিন ছুটি দিতে হবে! গৃহকর্মী যদি পালিয়ে যায় তাহলে আমার ক্ষতিপূরণ দেবে কে? এ কথা সত্য আমি এ আইনের সাথে একমত না, এখন থেকে আমার ফিলিপাইনের আর কোনো গৃহকর্মীই লাগবে না।’

তিনি বলেন, ‘সব দিক বিবেচনা করেই আমি গৃহকর্মীদের পাসপোর্ট তার কর্তৃপক্ষের কছে রাখতে বলেছি। আর আমার এ ব্যক্তব্যের সাথে কাতার ও আরব উপসাগরীয় দেশগুলোর মানুষও সমর্থন দেবে। একজন কফিল তার নিয়োজিত কর্মচারীর পাসপোর্ট কফিলের কাছে রাখার অধিকার তার রয়েছে। আমরা তো কর্মচারীকে বঞ্চিত করছি না বা তার টাকা মেরে দিচ্ছি না। তাই এটা মানবাধিকার লঙ্ঘন হতে পারে না।’

ভিডিও প্রকাশের পরই তা ভাইরাল হয়ে যায়। মধ্যপ্রাচ্য ও ফিলিপাইনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ব্যবহারকারী তার এমন কথায় আক্রমণাত্নক মন্তব্য শুরু করেন। সুন্দোসের এমন মন্তব্যকে ‘বৈষম্যমূলক’ আখ্যা দিয়ে আরবের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় ব্যাপক সমালোচনা।

তবে সমালোচনার মুখে তিনি আরও এক ভিডিওবার্তায় এসব সমালোচনাকে গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। বলেন, তিনি তার কর্মচারীদের সাথে ন্যায্যতা বজায় রাখেন ও তাদেরকে দীর্ঘ সময়ের জন্য কাজে লাগিয়ে রাখেন না। যারা তাকে বাইরে থেকেই সুন্দরী বলে সমালোচনা করেছে তিনি তাদেরকে ধন্যবাদ দিয়েছেন। কিন্তু সমালোচকদের কাছে মাথা নত করেননি।

এদিকে ‘বৈষম্যমূলক’ এমন মন্তব্যের পর তিনি যেসব আন্তর্জাতিক রুপচর্চা সামগ্রীর সৌজন্যে ব্লগ লিখতেন ও ভিডিও প্রকাশ করতেন তারা এখন মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। সুন্দোসের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দিয়েছে আন্তর্জাতিক রূপচর্চা সামগ্রীর প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ফ্যাক্টর আরাবিয়া। এছাড়া আরেকটি জাপানি প্রসাধনী কোম্পানিও সুন্দোসের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।

উল্লেখ্য, কাতারে ৬ লাখ ৬০ হাজার গৃহকর্মী রয়েছে। দেশটিদে ফিলিপাইনের গৃহকর্মীদের সুরক্ষার জন্য সম্প্রতি নতুন কিছু আইন করা হয়েছে। এছাড়া গত ফেব্রুয়ারিতে ফিলিপাইন সাময়িকভাবে কাতারে গৃহকর্মী পাঠানো নিষিদ্ধ করেছে।

আরএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।