ইতালি জয় করে ফিরলেন রোনালদো-জিদান
১৯৮৭ সালের পর গত প্রায় ২৯টি বছর- ইতালির মাটি হয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদের জন্য অপয়া। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউট পর্বে ইতালিয়ান কোন দলের মুখোমুখি হওয়া মানেই রিয়ালের বিদায়। ইতালির কোন ক্লাবকেই হারাতে পারেনি রিয়াল। আর জিনেদিন জিদানের জন্য বিষয়টা হয়ে দাঁড়িয়েছিল অন্যরকম। ২০০৬ বিশ্বকাপের ফাইনালে ইতালিয়ান ফুটবলার মার্কো মাতেরাজ্জিকে ঢুঁস মেরেই চিরতরের জন্য বুটজোড়া তুলে রেখেছিলেন জিদান।
এক দশক পর সেই মাতেরাজ্জির ঢেরায় জিদানের যাওয়াটা নিয়েই কৌতুহলের শেষ ছিল না। আবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে জিদানের ছিল অভিষেক। খেলোয়াড়, সহকারী কোচ হিসেবে জিতেছেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা। এবার মূল কোচ হয়ে একই মিশনে নামলেন তিনি। শুরুটা কেমন হয় জিজুর, সেটার জন্যই মুখিয়েছিলেন রিয়াল সমর্থকরা।
শেষ পর্যন্ত জিদান পারলেন। রিয়ালের ২৯ বছরের খাঁড়া কাটালেন। জয় করে আসলেন ইতালি। মার্কো মাতেরাজ্জিদের স্তব্ধ করে দিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দারুণ এক অভিষেক ঘটালেন ফ্রান্সের বিশ্বকাপজয়ী ফুটবলার। তার হয়ে আসল কাজটি করে দিলেন জিজুর মূল অস্ত্র ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। সিরি-আ লিগের দল এএস রোমাকে ২-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ আটে এক পা দিয়ে রাখলো রিয়াল মাদ্রিদ।
জিদানের চেয়েও যেন এই ম্যাচটা বেশি চ্যালেঞ্জিং ছিল ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর জন্য। আগেরদিনই অ্যাওয়ে ম্যাচে গোল না পাওয়া নিয়ে রোনালদোর সমালোচনা করে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেছিলেন। রেগে-মেগে সংবাদ সম্মেলন ছেড়ে উঠেই গিয়েছিলেন সিআর সেভেন। তখন না দিয়ে, জবাবটা বুঝি মাঠে দেয়ার জন্যই জমা রেখেছিলেন তিনি! রোমের স্টাডিও অলিম্পিকে এএস রোমার বিপক্ষে প্রথম গোলটিই যে করলেন রোনালদো। এই একটি গোল করেই সমালোচকদের মুখে কড়া একটি চপেটাঘাত করলেন যেন রিয়াল মাদ্রিদের পর্তুগিজ তারকা।
দুর্দান্ত এই জয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ আটে ওঠার রাস্তাটা প্রায় পরিষ্কার করে ফেলেছে রিয়াল। অ্যাওয়ে ম্যাচে জিতল ২-০ গোলে। নিজেদের মাঠে রোমার কাছে ১-০ গোলে হারলেও কোন চিন্তা নেই, রিয়াল উঠে যাবে সেরা আটে। ২-০ গোলে হারলে হবে টাইব্রেকার। ২-১ গোলে হারলেও রিয়ালের কোন সমস্যা হবে না।
রোমে রিয়াল মাদ্রিদ, জিদান-রোনালদোর অনেক প্রশ্নের জবাব দেয়ার এই ম্যাচের প্রথমার্ধ ছিল গোলশূন্যই। রিয়ালের আক্রমণের ধার যেন এসে থেমে যাচ্ছিল রোমার গোলমুখে এসে। দ্বিতীয়ার্ধ শুরুর ১২ মিনিট পরই গোলের দেখা পেলো লজ ব্লাঙ্কোজরা। মার্সেলোর পাস ধরে জাদু দেখান রোনালদো। রোমার অধিনায়ক ফ্লোরেন্তসিকে কাটিয়ে ডান পায়ের দুর্দান্ত শটে রোমার জাল ভেদ করেন সিআর সেভেন। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে চলতি মৌসুমে এটা রোনালদোর ১২তম গোল।
খেলার ৮৬তম মিনিটে রোমার ম্যাচে ফেরার আশা শেষ করে দেন হামেস রদ্রিগেজের পরিবর্তে মাঠে হেসে রদ্রিগেজ। মাঠে নামার চার মিনিট মাথায় দারুণ এক গোল করেন তিনি। ডান দিক থেকে একক প্রচেষ্টায় বল নিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে কোনাকুনি শটে রোমার গোলরক্ষকে পরাস্ত করেন স্পেনের এই ফরোয়ার্ড।
আইএইচএস/আরআইপি