একুশের চেতনায় উজ্জীবিত প্রতিবন্ধী শিশুরাও
এসেছে একুশ। অজয়কে জয় করে বাংলা ভাষায় কথা বলার অধিকার ছিনিয়ে আনার দিন যে আজ। শারীরিক প্রতিবন্ধীরা নীরব। তাতে কি! অস্পষ্ট কণ্ঠেই নীরবের কণ্ঠে বেজে উঠলো একুশের গান। আমার ভাইয়ের রক্ত রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’।
তোপখানা রোডস্থ বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদ (বাশিকপ) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর এমন আবেগ আর উদ্দীপনা দেখে আগত অন্যরাও বিস্মিত।
একুশ মানে মাথা নত না করা। একুশ মানেই অসম্ভবকে সম্ভব করা। তাই একুশের চেতনায় প্রতিবন্ধী শিশুদের উজ্জীবিত করতে পিছিনে নেই বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ২১ ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে প্রতিবন্ধী শিশুদের নিয়ে শহীদ মিনারে হাজির হয়েছে কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এদের মধ্যে বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদ (বাশিকপ)।
অর্ধশত বাক প্রতিবন্ধী ও শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী শিশু নিয়ে সকাল পৌনে ১০টায় শহীদ মিনারে আসে প্রতিষ্ঠানটির কয়েকজন শিক্ষক। হুইল চেয়ারে বসা কিছু শিশুর মুখে হাসিই বলে দেয় অনেক দিন পর যেন তারা স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছে, পেয়েছে বিজয়ের আনন্দ। 
প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষিকা শাহীনা আক্তার বলছেন, ‘এমনিতেই ওদের বাইরের জগতের সঙ্গে যোগাযোগ কম। শারীরিক অক্ষমতা আর নিবিড় পরিচর্যার কারণে ওদের বাইরে আসার সুযোগ কম। বদ্ধ ঘরে আবদ্ধ এই শিশুদের জানার সুযোগ কম এই দেশ কিভাবে স্বাধীন হলো। কথা বলতে না পারলেও কিভাবে অন্যরা বাংলায় কথা বলে, বাংলা ভাষার ইতিহাস কি তা জানার জন্যই মূলত ওদের এখানে নিয়ে আসা।
তিনি বলেন, শিশুরা শহীদ মিনারে লাখো মানুষের ঢল দেখে চমকিত হবে। বাংলা ভাষার প্রতি মানুষের মমত্ব ওদের মুগ্ধ করছে। অজয়কে জয় করে বাংলা ভাষায় কথা বলার যে অধিকার আমরা অর্জন করেছি তাতে ওরাও উজ্জীবিত হবে।
শুধু এবারই নয়, প্রতিবারই আসা হয়। তবে তিনি এমন শিশু কিশোরদের নিয়ে একটু বেকায়দায় পড়েছি। ওদের জন্য বিশেষ কোনো ব্যবস্থা নেই। অনেক ভোগান্তির ভেতর থেকেই ওদের নিয়ে শহীদ মিনার বেদি পর্যন্ত যেতে হবে।
জেইউ/জেএইচ/আরআইপি