১১৮ বছরে মারা গেলেন বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক মানুষ

জানাশোনা বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক মানুষ ফরাসি নান লুসাইল র্যান্ডন মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ১১৮ বছর। র্যান্ডনের এক মুখপাত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের খবরে জানা যায়, লুসাইল র্যান্ডন সিস্টার আন্দ্রে নামেও পরিচিত ছিলেন। ১৯০৪ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলে তার জন্ম হয়েছিল।
মুখপাত্র ডেভিড তাভেলা গত মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) বার্তা সংস্থা এএফপি’কে জানিয়েছেন, ফ্রান্সের টাউলন শহরে একটি নার্সিং হোমে ঘুমের মধ্যেই মারা গেছেন র্যান্ডন।
ডেভিড বলেন, ‘এটি খুবই দুঃখজনক। কিন্তু… প্রিয় ভাইয়ের সঙ্গে যোগ দেওয়ার জন্য এর (মৃত্যু) ইচ্ছাও ছিল তার। র্যান্ডনের কাছে এটি একধরনের মুক্তি।’
লুসাইল র্যান্ডনকে দীর্ঘদিন ইউরোপের সবচেয়ে বয়স্ক মানুষ বলে মনে করা হতো। গত বছর জাপানের কেন তানাকা ১১৯ বছর বয়সে মারা যাওয়ার পর তিনি হয়ে ওঠেন পৃথিবীর জানাশোনা লোকদের মধ্যে সবচেয়ে বয়স্ক মানুষ।
গত এপ্রিলে সেন্ট-ক্যাথরিন-লেবার নার্সিং হোমে নিজ কক্ষে লুসাইল র্যান্ডন। ছবি সংগৃহীত
র্যান্ডন যখন জন্ম নেন, সে বছর নিউইয়র্কে প্রথম পাতাল রেল চালু হয়েছিল এবং ট্যুর ডি ফ্রান্স মাত্র একবার মঞ্চস্থ হয়েছিল।
একসময় গভর্নর ও গৃহশিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন দীর্ঘজীবী ফরাসি এ নারী। ১৯৪৪ সালে মাত্র ৪০ বছর বয়সে সন্ন্যাসের পথে পা বাড়ান তিনি।
২০২১ সালে র্যান্ডন যে নার্সিং হোমে থাকতেন, সেখানে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে অন্তত ১০ জন প্রাণ হারান। ওই সময় আক্রান্ত হন র্যান্ডনও। কিন্তু করোনা তাকে কাবু করতে পারেনি।
সেই সময়ে র্যান্ডন ভার-মাটিন পত্রিকাকে বলেছিলেন, ‘আমি বুঝতেও পারিনি যে, আমার এটি (কোভিড-১৯) ছিল।’
করোনাভাইরাসকে ভয় করেছিল কি না জানতে চাইলে বিএফএম টেলিভিশনকে এ বৃদ্ধা বলেন, ‘না, ভয় পাইনি। কারণ, আমি মরতে ভয় পাই না। আমি [আজ] আপনার সঙ্গে থাকতে পেরে খুশি, তবে অন্য কোথাও থাকার আশাও করি। আমার বড় ভাই, আমার দাদা এবং দাদির সঙ্গে যোগ দিতে চাই।’
২০২০ সালের এক সাক্ষাৎকারে র্যান্ডন ফরাসি রেডিওকে বলেছিলেন, এতদিন বেঁচে থাকার কারণ সম্পর্কে তার কোনো ধারণা নেই। তিনি বলেন, ‘আমি জানি না রহস্য কী। একমাত্র ঈশ্বরই এ প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেন।’
বৃদ্ধা বলেন, ‘জীবনে প্রচুর কষ্ট পেয়েছি। ১৯১৪-১৯১৮ সালের যুদ্ধের সময় আমি ছোট ছিলাম। অন্য সবার মতো আমিও কষ্ট পেয়েছিলাম।’
কেএএ/