আঙ্গুলের ইশারায় পদ্মা পাড়ি দেয় যে জাহাজ
মাওয়া ঘাট থেকে পদ্মা নদী পাড়ি দেয়ার সবচেয়ে ছোট ফেরিটির নাম ‘ডিএফ লেংটিং ডি ৮০৬১’। ফেরিটির নিজস্ব ইঞ্জিন নেই। এটিকে টেনে নিয়ে চলে ৪০ বছরের পুরোনো একটি জাপানি টাগ জাহাজ। শুনতে অবিশ্বাস্য হলেও টাগ জাহাজটি চলে ওয়াটার মাস্টারের এক আঙ্গুলের ইশারায়। প্রায় দুই ঘণ্টার যাত্রাকালিন সময়ে সার্বক্ষণিক তার হাত থাকে নির্দিষ্ট একটি সুইচের নবের ওপর। আঙ্গুলের ডানে বামে ইশারার মাধ্যমেই নির্ধারিত হয় জাহাজের গন্তব্য।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে লেংটিং ফেরির ওয়াটার মাস্টার মো. শাহিন জানান, মাওয়া থেকে ওপারে চলাচলের লক্ষ্যে বিআইডব্লিউটি এর মোট সাতটি ফেরি রয়েছে। এগুলো হলো- রানীক্ষেত, রায়পুরা, রাজশ্রী, যমুনা, কর্ণফুলী টাফলু ও লেংটিং ডি। এ সব জাহাজের মধ্যে সবচেয়ে ছোট জাহাজ লেংটিং ডি ৮০৬১। মাত্র ৯টি যানবাহন নিয়ে চলাচল করে। প্রতিদিন গড়ে তিন থেকে চার বার এপার ওপার যাতায়াত করে।
তিনি জানান, বহু বছরের পুরোনো এ ফেরির নিজস্ব ইঞ্জিন না থাকায় এটিকে একটি টাগ জাহাজ টেনে নিয়ে যায়। এক সময় জাহাজটি পরিচালনার জন্য নানা ধরনের সুইচ ব্যবহৃত হলেও বর্তমানে মাত্র ১টি সুইচের মাধ্যমে জাহাজটি দিক নির্ধারিত হয়।
গত ১০ বছর যাবত বিআইডব্লিউটিসিতে চাকরি করছেন ওয়াটার মাস্টার মো. শাহিন। শুরুটা মংলা বন্দরে হলেও কিছুদিন পরে মাওয়ায় বদলি হন। গত দুই বছর যাবত টাগ জাহাজে ডিউটি করছেন।
বিআইডব্লিউটিসির নিয়মানুসারে দুই বছর পর পর কর্মচারীদের অন্য জাহাজে বদলি হয়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, পদ্মা প্রমত্তা নদীতে বহুবার ঝড়ঝঞ্চা বিপদের মধ্যে পড়েছেন কিন্তু কখনও জাহাজ ডুবে যায়নি। ঝড়ের সময় যে দিকে বাতাস ছুটে সে দিকে তাল মিলিয়ে জাহাজ নিয়ে এগিয়ে যান। সুযোগ মতো নিকটবর্তী কোনো নিরাপদ স্থানে জাহাজ নোঙ্গর করেন।
সাড়ে তিন বছরের পুত্র সন্তানের জনক শাহিন। ছুটি পেলেই মংলায় স্ত্রী ও সন্তানের কাছে ছুটে যান। এভাবে চলছে মাওয়া রুটের ছোট ফেরি টানার কাজে ব্যবহৃত টাগ জাহাজের ওয়াটার মাস্টারের জীবন।
এমইউ/আরএস/পিআর