অবৈধ অভিবাসী ইস্যুতে কঠোর হচ্ছে বাইডেন প্রশাসন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:৪৮ পিএম, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
রিও গ্রান্ডে সীমান্তের কাটতার পেরিয়ে মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকছে একদল অভিবাসনপ্রত্যাশী/ ছবি: সংগৃহীত

অবৈধ অভিবাসন ইস্যুতে আরও কঠোর হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন। জানা গেছে, আগামী নির্বাচনে তরুণ ভোটারদের ভোট পেতে ও অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ডেমোক্রেটিক পার্টির অবস্থান আরও শক্ত করতে বাইডেন প্রশাসনের এ পরিকল্পনা।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গকে বাইডেন প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ ও দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ঢল বন্ধ করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা প্রায় চুড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে, যা খুব কম সময়ের মধ্যে বাস্তবায়িত হবে।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে অবৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ করতে মার্কিন সংবিধানে ২১২ (এফ) নামের একটি ধারা যুক্ত করা হয়েছিল। সেসময় অবশ্য এই ধারাটির কার্যকারিতা নিয়ে ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টির মধ্যেই আপত্তি ওঠে। ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেন জয়ী হওয়ার পর গত প্রায় সাড়ে তিন বছরে কোনো আলোচনার মধ্যে ছিল না সেই ধারাটি। তবে, এখন সেই ধারাটি ফের পুনরুজ্জীবিত করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রিও গ্র্যান্ডে সীমান্ত অতিক্রম করার পর মার্কিন কর্তৃপক্ষের কাছে আত্মসমর্পণ করে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীরাসোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রিও গ্র্যান্ডে সীমান্ত অতিক্রম করার পর মার্কিন কর্তৃপক্ষের কাছে আত্মসমর্পণ করে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীরা/ ছবি: সংগৃহীত

জানা গেছে, ডেমোক্রেটিক রাজনীতিবিদরাই তাদের শহরের ক্রমবর্ধমান সংকট তুলে ধরেছেন। ব্যক্তিগতভাবে, তারা হোয়াইট হাউজ অফিস অব ইন্টারগভর্নমেন্টাল অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক টম পেরেজ ও অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে অভিবাসননীতি নিয়ে নিয়মিত যোগাযোগ করছেন। তবে রিপাবলিকানরা সীমান্তে যে ধরনের কঠোর বিধিনিষেধের দাবি করছেন, তারা তেমনটা করছেন না। ডেমোক্রেট নেতারা শুধু অবৈধ অভিবাসীদের সামলাতে সাহায্য চাচ্ছেন।

প্রকৃতপক্ষে, অভিবাসী ও অভিবাসন ইস্যুতে রাজনৈতিক মতাদর্শগতভাবে ডেমোক্রেটিক পার্টি রিপাবলিকান পার্টির চেয়ে অনেক উদার। কিন্তু সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি ও অভ্যন্তরীণ রাজনীতি বিবেচনায় নিয়ে এবার এই ইস্যুতে কঠোর হতে যাচ্ছেন ডেমোক্রেট প্রেসিডেন্ট বাইডেন। ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের মধ্যে ইমিগ্রেশন নীতি নিয়ে দলীয়ভাবে বিভক্তি রয়েছে ও আদর্শিক লড়াই ছিল। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে এটি এখন দ্বিদলীয় দাবিতে পরিণত হয়েছে। প্রেসিডেন্ট বাইডেনের ওপর তীব্র চাপ প্রয়োগ করছেন বোস্টন, ডেনভার, শিকাগো ও নিউইয়র্কের মেয়রেরা।

যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভা কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে ডেমোক্রেটিক পার্টির সদস্যরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস রিপাবলিকান পার্টির দখলে। সম্প্রতি ইউক্রেন, ইসরায়েল ও তাইওয়ানে সামরিক সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে একটি বিল সিনেটে পাঠিয়েছিল হোয়াইট হাউজ। সিনেট থেকে অনুমোদন পাওয়ার পরে সেটি নিম্নকক্ষে পাঠানো হয়। কিন্তু সেখানে বিলটি এখনও পাস হয়নি। মার্কিন রাজনীতি বিশ্লেষকদের একাংশের মতে— এই ব্যাপারটি প্রমাণ করে যে আইনসভায় নিজের নিয়ন্ত্রণ অনেকাংশে হারিয়েছে বাইডেন প্রশাসন।

এছাড়া সাম্প্রতিক একাধিক জরিপে দেখা গেছে, মার্কিন তরুণ ভোটারদের বড় অংশই অভিবাসন ও অভিবাসীবিরোধী। চলতি বছর নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। মার্কিন রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, যদি বাইডেন অভিবাসন ইস্যুতে কঠোর পদক্ষেপ না নেন, তাহলে আগামী নির্বাচনে তার জয়ের সম্ভাবনা অনেক কমে যাবে। কারণ তরুণ ভোটারদের অধিকাংশ ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দেবে।

সূত্র: ব্লুমবার্গ

এসএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।