রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:৪৫ পিএম, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের দ্বিতীয় বার্ষিকীতে রাশিয়ার ৫০০’রও বেশি ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) এক সাক্ষাৎকারে ডেপুটি মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি ওয়ালি অ্যাডেইমো এই তথ্য জানান।

ওয়ালি অ্যাডেইমো জানান, রাশিয়ার সামরিক শিল্প কারখানা ও সেগুলো সঙ্গে জড়িত অন্যান্য দেশের বিভিন্ন কোম্পানিও এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, এসব কোম্পানি রাশিয়াকে তার চাহিদা অনুযায়ী পণ্য পেতে সহায়তা করে।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারি অব স্টেট ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড জানিয়েছেন, তারা সেই দেশগুলোকেও টার্গেট করবে, যারা রাশিয়াকে নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে যেতে সাহায্য করছে। এমনকি, সেসব ব্যাংকেও লক্ষ্যবস্তু কর হবে যারা রাশিয়াকে নানাভাবে সহায়তা দেয়। আবার কিছু নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার বিরোধীদলীয় নেতা অ্যালেক্সি নাভালনির মৃত্যুর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের উপরেও বর্তাবে।

Deputy U.S. Treasury Secretary Wally Adeyemo ডেপুটি মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি ওয়ালি অ্যাডেইমো

ডেপুটি ট্রেজারি সেক্রেটারি ওয়ালি অ্যাডেইমো বলেন, শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্র শত শত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে। তবে আমাদের এটাও মনে রাখতে হবে যে যুক্তরাষ্ট্র একা এসব পদক্ষেপ নিচ্ছে না। নিষেধাজ্ঞা ও রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে রাশিয়ার অর্থনীতির গতিকে বাধাগ্রস্ত করা হবে, যাতে ইউক্রেনে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে রাশিয়াকে বেগ পেতে হয়। ইউক্রেন যুদ্ধ ও রুশ বিরোধী দলীয় নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনির মৃত্যুতে রাশিয়াকে জবাবদিহি করতে চায় ওয়াশিংটন।’

তিনি আরও বলেন, ইউক্রেনের শক্তি ও তাদের আত্মরক্ষার ক্ষমতা বাড়াতে কংগ্রেসের উচিত ইউক্রেনকে অস্ত্রসহ প্রয়োজনীয় সহায়তার বিষয়টি নিশ্চিত করা। ২০২২ সালে ইউক্রেনে ‘সামরিক অভিযান’ শুরু করার পর যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলো রাশিয়ার উপর কয়েক হাজার নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এবারের নিষেধাজ্ঞার প্যাকেজটি তার সর্বশেষ ধাপ।

আরও পড়ুন: 

মার্কিন কংগ্রেস কিয়েভের জন্য অতিরিক্ত নিরাপত্তা সহায়তা অনুমোদন করবে কি না, তা নিয়ে সংশয় থাকা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা রাশিয়ার ওপর চাপ বজায় রাখার সিদ্ধান্তে অটল। আর সে জন্যই নতুন এ নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা।

বাইডেন প্রশাসন এরই মধ্যে ইউক্রেনের জন্য পূর্বের অনুমোদিত সব অর্থ শেষ করে ফেলেছে। তাছাড়া, রিপাবলিকান-নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদে ইউক্রেনের জন্য অতিরিক্ত তহবিল গঠনের অনুরোধ স্থগিত রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, মস্কোর আক্রমণ বন্ধ করার জন্য নিষেধাজ্ঞাগুলো যথেষ্ট নয়। তবে মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট গত বছরের ডিসেম্বরে দাবি করেছিল, নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২০২২ সালে রাশিয়ার অর্থনীতি ২ দশমিক ১ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাবিষয়ক প্রধান অর্থনীতিবিদ র‍্যাচেল লিঙ্গাস ট্রেজারির ওয়েবসাইটে বলেছেন, আগের পূর্বাভাসের চেয়েও ৫ শতাংশ কমেছে রাশিয়ার অর্থনীতি।

তবে অন্যান্য পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রত্যাশার চেয়েও ভালো চলছে রাশিয়ার অর্থনীতি। ২০২৩ সালে ৩ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির পর গত বছরের অক্টোবর থেকে ১ দশমিক ৫ শতাংশ পয়েন্ট বেড়েছে রাশিয়ার। এসব পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে ২০২৪ সালে রাশিয়ার ২ দশমিক ৬ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল।

রাশিয়ার দাবি, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের দেওয়া সিরিজ নিষেধাজ্ঞাগুলো খুব একটা কার্যকর হচ্ছে না। কারণ মস্কো বাণিজ্যের জন্য বিকল্প ‘বন্ধু’ খুঁজে পেয়েছে।

সূত্র: রয়টার্স

এসএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।