আকর্ষণীয় কভার লেটার লেখার কৌশল
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের জন্য প্রার্থীর জীবন বৃত্তান্ত চাওয়া হয়। সেখান থেকেই শিক্ষাগত এবং ব্যক্তিগত সব তথ্যই জানতে পারেন নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান। নিয়োগকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চমৎকার একটি কভার লেটার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আকর্ষণীয় একটি কভার লেটার আপনার সম্পর্কে আরও ভালো ধারণা দিতে পারে।
কভার লেটারের মাধ্যমে খুব সংক্ষেপে তুলে ধরা হয় আবেদনকারী সুনির্দিষ্ট কোনো পোস্টের জন্য কেন যোগ্য। আরেকটি দিক হলো, কভার লেটার মূলত সম্পূর্ণ সিভির সারসংক্ষেপ। কভার লেটার পড়ার মাধ্যমে নিয়োগকর্তা আবেদনকারীর সব যোগ্যতা এক দৃষ্টিতে দেখতে পারেন। যা আবেদনকারীর ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিতে তাকে উৎসাহিত করে।
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও গ্রেড অন দ্য জবের লেখক যোগি গ্লিকম্যান বলেছেন, কভার লেটার একজন এইচআর বা নিয়োগকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করার সেরা সুযোগ। যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ক্যারিয়ার কৌশলবিদ এবং নকআউট সিভির লেখক জন লিস বলেছেন চাকরির কঠিন বাজারে নিজেকে আলাদা করে প্রেজেন্ট করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর অন্যতম উপায় হচ্ছে একটি সঠিক ও আকর্ষণীয় কভার লেটার তৈরি করা।
>> কভার লেটার লেখার সময় অবশ্যই চাকরির বিজ্ঞাপন ভালোভাবে পড়ে নিন। যে প্রতিষ্ঠানে আপনার সিভি পাঠাচ্ছেন সেটির সম্পর্কে খুব ভালোভাবে রিসার্স করুন। কোম্পানিটি কী কাজ করে, সেখানে কাজের যোগ্যতা, কোম্পানির পেছনের সাফল্য, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জেনে নিন। এখন ইন্টারনেটে প্রায় সব ধরনের প্রতিষ্ঠানেরই তথ্য থাকে।
>> একই সিভি সব জায়গায় পাঠাবেন না। কভার লেটারে লেখা পরিবর্তন করুন। পদ ও প্রতিষ্ঠান অনুযায়ী আলাদাভাবে উপস্থাপন করুন। ১০টি প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলে ১০ রকম লিখতে হবে। একেক প্রতিষ্ঠান, একেক কাজের কভার লেটারের বিষয় ভিন্ন রকম। ধরুন কোনো ব্যাংকে আবেদন করবেন সে ক্ষেত্রে আপনার সিভি হবে এক রকম। আবার যখন আপনি কোনো মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে সিভি পাঠাচ্ছেন তার ধরন হবে অন্যরকম।
>> সিভিতে খুব স্পষ্ট করে আপনার কাজের পূর্ব অভিজ্ঞতা যদি থাকে তাহলে উল্লেখ করুন। এবং আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাও উল্লেখ করুন সেখানে। যে প্রতিষ্ঠানে যে কাজের জন্য আবেদন করছেন তার মূল্যবোধ, পেশাদারত্ব, লক্ষ্য-উদ্দেশ্যের সঙ্গে কীভাবে মানিয়ে নিতে পারবেন, কীভাবে দলের সদস্য হিসেবে আপনি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবেন। স্পষ্ট ভাষায় এটি উল্লেখ করতে হবে।
>> যতটা সম্ভব ছোট করে লেখার চেষ্টা করুন। তবে লেখার ভাষা যেন হয় স্পষ্ট। কভার লেটার পড়ে যেন বিরক্তি না আসে, সেদিকে খেয়াল রাখুন। চেষ্টা করুন ছোট ছোট বাক্যে নিজের আগ্রহ ও উদ্দীপনা প্রকাশ করতে। নিয়োগকর্তা যেন আপনার সঙ্গে কথা বলছেন, এমনভাবে কভার লেটার তৈরি করুন।
>> সম্বোধনের বেলায় প্রচলিত ‘ডেয়ার স্যার’ দিয়ে শুরু করতে যাবেন না। যে প্রতিষ্ঠান বরাবর কভার লেটারটি লিখছেন ওয়েবসাইট থেকে প্রতিষ্ঠানের প্রধান বা নিয়োগকর্তার পদবি জেনে নিন। সেটি ব্যবহার করুন। এতে নিয়োগদাতা খানিকটা বেশি আকর্ষিত হবে আপনার কভার লেটারে। মূল কথা হচ্ছে প্রথম লাইন থেকেই আপনাকে নিয়োগকর্তাকে আগ্রহী করে তুলতে হবে।
>> সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ইন্টারনেট থেকে কোনো কভার লেটার হুবহু অনুকরণ না করে নিজের আগ্রহ ও উৎসাহ প্রকাশ পায়, এমন বাক্য দিয়ে কভার লেটার শুরু করুন। বানান বা বাক্যে যেন কোনো গ্রামারটিক্যাল ভুল না থাকে সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখুন।
সূত্র: হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ
কেএসকে/জিকেএস