চাকরির পাশাপাশি বিসিএসের প্রস্তুতি নিয়েছেন নিশাত

আনিসুল ইসলাম নাঈম
আনিসুল ইসলাম নাঈম আনিসুল ইসলাম নাঈম , ফিচার লেখক
প্রকাশিত: ০৪:২৬ পিএম, ০৬ নভেম্বর ২০২২

মতিন সরকার নিশাত ৪০তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে (অ্যাকাউন্টিং) উত্তীর্ণ হয়েছেন। তার শৈশব ও বেড়ে ওঠা মেঘনা নদীর তীরবর্তী চাঁদপুর শহরে। খেলাধুলা আর আনন্দের মাঝেই শৈশব কেটেছে। তিনি হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং চাঁদপুর সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

সম্প্রতি তার বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া, সফলতার গল্প ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানিয়েছেন জাগো নিউজকে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আনিসুল ইসলাম নাঈম—

জাগো নিউজ: ৪০তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডার পেয়েছেন, আপনার অনুভূতি কেমন?
মতিন সরকার নিশাত: আলহামদুলিল্লাহ, অনেক ভালো লাগছে। বিশেষ করে ভালো লাগছে দীর্ঘদিনের একটি স্বপ্ন পূরণ হয়েছে এই ভেবে। ভবিষ্যতে সবার দোয়া নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই।

জাগো নিউজ: বিসিএসের স্বপ্ন দেখেছিলেন কখন থেকে?
মতিন সরকার নিশাত: ভার্সিটিতে হলে থাকার সময় মূলত এই স্বপ্নের যাত্রা। তখন দেখতাম আশেপাশের সিনিয়র ভাইয়েরা বিসিএস ক্যাডার হয়ে সেটেল্ড হচ্ছেন। এরমধ্যে অনেকে ভালো কাজ করে খুব সুনাম কুড়াচ্ছেন। তখন খুব ইচ্ছে করতো আমি যেন তাদের মতো হতে পারি। পাশাপাশি বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিসিএস ক্যাডারদের বেশি পরিমাণে সামাজিক স্বীকৃতিও আমাকে এ স্বপ্নের দিকে ধাবিত করেছে।

jagonews24

জাগো নিউজ: বিসিএস যাত্রায় প্রস্তুতি কীভাবে নিয়েছেন?
মতিন সরকার নিশাত: আমার বিসিএস যাত্রাটা একটু অন্যরকম। আমি বিবিএ শেষ করে প্রথমে ৩৪তম বিসিএস দিই এবং নন-ক্যাডারে নিয়োগ পাই। তবে জয়েন করিনি। এরপর ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি হিসেবে এনসিসি ব্যাংকে জয়েন করি। ব্যাংকের স্যালারি ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা দেখে সিদ্ধান্ত নিই আর বিসিএস দেবো না, ব্যাংকেই ক্যারিয়ার গড়বো। এরপর ব্যাংকিং প্রফেশনে কেটে যায় পাঁচ বছর। এরমধ্যে আমার সামগ্রিক চিন্তাধারায় পরিবর্তন আসে। অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যারের বক্তব্য ভালো লাগে। তার একটি বক্তব্য আমার খুব পছন্দ হয়। আমি সিদ্ধান্ত নিই, আমাকে তার মতো হতে হবে। মাঠপর্যায়ে জনগণের সঙ্গে থাকা যায় এমন কিছু করতে হবে। নতুন উদ্যমে আবার বিসিএস দেওয়া শুরু করি। ৩৪তম বিসিএসের পর আবার নতুন করে প্রিপারেশন নিয়ে ৪০তম বিসিএসে অবতীর্ণ হয়ে সফলতা পাই। চাকরির পাশাপাশি বিসিএসের প্রস্তুতি নিয়েছি। সাম্প্রতিক বিষয়গুলোতে অনেক গুরুত্ব দিয়েছি। মার্কস বেশি পাওয়া যায় এমন বিষয়গুলো বেশি বেশি পড়েছি। প্রিলি আর লিখিত বিষয়গুলো ভাগ করে প্রস্তুতি নিয়েছিলাম।

জাগো নিউজ: পর্দার আড়াল থেকে কেউ অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন?
মতিন সরকার নিশাত: আমার ভাই সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা। মূলত তার উৎসাহে আমি প্রতিনিয়ত সামনে এগিয়ে যাই। আমি অনেক ভাগ্যবান, তার মতো একজন বড় ভাই পেয়েছি। তিনি আমাকে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন।

জাগো নিউজ: নতুনরা বিসিএস প্রিলির জন্য কীভাবে প্রস্তুতি নেবেন?
মতিন সরকার নিশাত: বিসিএস একটি লম্বা সফর। নতুনদের আমি বলবো, বিসিএসে কোন শর্টকাট না খুঁজতে। ধৈর্য ধরে প্রথমে বেসিক ভালো করতে হবে। এরপর বাকি প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করতে হবে। নিয়মিত মডেল টেস্ট (বিষয়ভিত্তিক) দিলে নতুনরা তাদের স্ট্রং জোন এবং উইক জোন সম্পর্কে বুঝতে পারবেন।

jagonews24

জাগো নিউজ: প্রিলির পর লিখিত প্রস্তুতি নিয়ে আপনার পরামর্শ কী?
মতিন সরকার নিশাত: লিখিত প্রস্তুতি নিতে হবে ম্যারাথন দৌড়ের মতো। নিয়মিত পড়ার পাশাপাশি লেখার অভ্যাস করতে হবে। গোছানো লেখা ভালো মার্কস এনে দেয়। বিজ্ঞান, গণিত ও মানসিক দক্ষতা বিষয়ে বেশি মার্কস পাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। লিখিত পরীক্ষায় এ বিষয়গুলোই পরীক্ষার্থীদের মধ্যে পার্থক্য তৈরি করে।

জাগো নিউজ: বিসিএস ভাইবার প্রস্তুতি কেমন হতে হয়?
মতিন সরকার নিশাত: ভাইবার প্রস্তুতি নিতে হবে টপিকওয়াইজ। এ ক্ষেত্রে নিজ জেলা, মুক্তিযুদ্ধ, পঠিত বিষয়, সাম্প্রতিক ঘটনা প্রবাহ ভালোভাবে মনে রাখতে হবে। নিজেকে সাবলীলভাবে উপস্থাপন করার জন্য বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।

জাগো নিউজ: আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
মতিন সরকার নিশাত: আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে চাই। পাশাপাশি আমার পড়াশোনাও চালিয়ে যেতে চাই। বর্তমানে আমি দ্য ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টস অব বাংলাদেশে অধ্যয়নরত। তা ছাড়া ভবিষ্যতে ডক্টরেট ডিগ্রি নেওয়ার স্বপ্ন দেখি।

এসইউ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।