গায়েবি মামলায় অব্যাহতি পেলেন জবির ১১ শিক্ষার্থী
২০২২ সালে রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় করা একটি গায়েবি মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ১১ জন শিক্ষার্থী। একই সঙ্গে মামলার অন্য ৬৪ জন অভিযুক্তকেও অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) এ মামলায় আসামিদের অব্যাহতির সুপারিশ করে পুলিশের দাখিল করা চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে আসামিদের অব্যাহতি দেন ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মো. জাকির হোসেন গালিব।
এর আগে ২০২৪ সালের ২১ অক্টোবর তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালতে আসামিদের অব্যাহতির সুপারিশ করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ। আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদুর রাজ্জাক এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, এটি ২০২২ সালের ২৪ মার্চ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা একটি গায়েবি মিথ্যা মামলা। গত বছর এ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়। আজ প্রতিবেদন গ্রহণ করে আদালত আসামিদের অব্যাহতি দেন।
অব্যাহতিপ্রাপ্ত জবি শিক্ষার্থীরা হলেন, হিসাববিজ্ঞান বিভাগের রওশন-উল ফেরদৌস ও শাহীন ইসলাম, বাংলা বিভাগের শ্রাবণ ইসলাম রাহাত, ব্যবস্থাপনা বিভাগের ফাহাদ হোসেন, মনোবিজ্ঞান বিভাগের আব্দুর রহমান অলি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ইব্রাহিম আলী, মেহেদী হাসান ও ওবায়দুল, ইতিহাস বিভাগের ইসরাফিল, লোকপ্রশাসন বিভাগের মেহেদী হাসান ও সংগীত বিভাগের আল মামুন রিপন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালে পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতাল এলাকায় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধের দাবিতে হওয়া মিছিলে অংশ নেওয়ার অভিযোগে ছাত্রশিবির সন্দেহে গ্রেফতার করা হয় এই ১১ শিক্ষার্থীকে। গেন্ডারিয়ার একটি ছাত্রাবাস থেকে ওই বছরের ২৪ মার্চ দিনগত রাতে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫ (৩) ধারায় তাদের গ্রেফতার করা হয়।
অব্যাহতি পাওয়া শিক্ষার্থী রওশন-উল ফেরদৌস বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ঢাকায় আসার পরপরই আমি গ্রেফতার হই। আমার জীবন থেকে একটি বছর শেষ হয়ে গেছে এই মিথ্যা মামলায়। গ্রেফতারের খবর শুনে আমার বাবা হার্ট অ্যাটাক করেন। আমি পড়াশোনা ও বন্ধুবান্ধব সবই হারিয়েছি।
আরেক ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী শাহীন ইসলাম বলেন, আমি ঢাকায় এসেছি ২০২২ সালের ১ মার্চ। আমাকে গ্রেফতার করা হয় ২৪ মার্চ। কোনো ধরনের প্রমাণ ছাড়াই আমাকে গ্রেফতার করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের সাময়িক বহিষ্কার করে। ঢাকায় আসার এক মাস পূর্ণ না হলেও এক বছর আগের মামলায় আমাদের আসামি হিসেবে দেখানো হয়। মামলাটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং মিথ্যা। আমাদের পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হয়েছিল।
এমআইএন/এমকেআর/এএসএম