ড্রেনে পড়ে শিশুর মৃত্যু: ক্ষতিপূরণ প্রশ্নে হাইকোর্টে রুল
চট্টগ্রামের কাপাসগোলা মোড়ে খোলা ড্রেনে পড়ে ছয় মাস বয়সী শিশু শেহরিশের মর্মান্তিক মৃত্যুতে তার পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে শিশুটির মৃত্যুতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলা কেন বেআইনি, স্বেচ্ছাচারী ও সংবিধানের ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদের পরিপন্থি হবে না এবং কেন সব খোলা ড্রেন অবিলম্বে ঢেকে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হবে না, রুলে তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে।
এ সংক্রান্ত রিটের শুনানি নিয়ে সোমবার (২৩ জুন) হাইকোর্টের বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি মো. বিচারপতি হামিদুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুল জারি করে আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান।
এর আগে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান গত ৪ জুন জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিটটি করেন। রিটে অভিযোগ করা হয়, নগর পরিকল্পনা ও অবকাঠামো ব্যবস্থাপনায় চরম গাফিলতি ও দায়িত্বে নিয়োজিত কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ ধরনের উদাসীনতা বাংলাদেশের সংবিধানের ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদে প্রতিশ্রুত নাগরিকের জীবনের অধিকার ও নিরাপত্তা লঙ্ঘন করে।
রিটে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত এলাকায় সব খোলা ড্রেন, খাল ও ঝুঁকিপূর্ণ জায়গার তালিকা প্রস্তুত করে, একটি পরিকল্পনা দাখিলপূর্বক ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চাওয়া হয়। একই সঙ্গে শিশুটির মৃত্যুর ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র, চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ মোট সাতজনকে রিটে বিবাদী করা হয়।
রিটের পর আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন,একটি ছয় মাসের শিশুর এমন করুণ মৃত্যু শুধু একটি দুর্ঘটনা নয়, এটি আমাদের নগর ব্যবস্থাপনার এক ভয়াবহ ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি।
তিনি আরও বলেন, খোলা ড্রেন যেন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে, অথচ দায়ী সংস্থাগুলোর নির্লিপ্ততা বেদনাদায়ক ও অগ্রহণযোগ্য। আমি এ রিটের মাধ্যমে শুধু একটি পরিবারের জন্য ন্যায়বিচার চাইছি না, বরং আমি চাইছি একটি টেকসই ও মানবিক নগর পরিবেশ, যেখানে কোনো শিশুর জীবন আর যেন এভাবে ঝরে না পড়ে।
এফএইচ/এমকেআর/এমএস
