শেখ হাসিনার মামলায় নাহিদ ইসলামের পরবর্তী জেরা ২১ সেপ্টেম্বর
জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের জেরা অব্যাহত রয়েছে। নাহিদ ইসলামকে পরবর্তী জেরার জন্য রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন।
ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্যরা হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। আদালতে আজ জেরা করেন শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রীয় খরচে নিয়োজিত (স্টেট ডিফেন্স) আইনজীবী মো. আমির হোসেন।
সাক্ষী দ্বিতীয় দিন বেলা সোয়া ১১টার পর থেকে ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের ৪৭তম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষীর জবানবন্দি পেশ করেন নাহিদ ইসলাম। দুপুরে তার জবানবন্দি গ্রহণ শেষে বিরতিতে যান আদালত। বিরতির পর দুপুর আড়াইটার পর থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত তাকে জেরা করেন আইনজীবী মো. আমির হোসেন। তবে জেরা শেষ না হওয়ায় রোববার পর্যন্ত মুলতবি করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম। উপস্থিত ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর সহিদুল ইসলাম, প্রসিকিউটর আবদুস সাত্তার পালোয়ান, প্রসিকিউটর মামুনুর রশীদসহ অন্যরা। এর আগে ১৭ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দেন নাহিদ ইসলাম। তার অবশিষ্ট সাক্ষী আজ শেষ করা হয়।
বুধবার বেলা পৌনে ১১টা থেকে দ্বিতীয় দিনের মতো দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে জেরা করেন স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী। এখন পর্যন্ত সাক্ষী দিয়েছেন ৪৭ জন। আজ সকালেও ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয় মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলার অন্যতম আসামি থেকে রাজসাক্ষী হয়ে জবানবন্দি দেওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে।
গত ২ সেপ্টেম্বর ৩৬ নম্বর সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন চৌধুরী মামুন। তার সাক্ষ্য শেষ হয় ৪ সেপ্টেম্বর। শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের নির্দেশে জুলাই-আগস্টে গণহত্যা চালানো হয়েছে জানিয়ে তিনি ক্ষমা চেয়েছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে রাষ্ট্রপক্ষের আরো ৪৫ জন সাক্ষীর জবানবন্দি থেকে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে দেশজুড়ে হত্যাযজ্ঞ চালানোর বীভৎস বর্ণনা উঠে এসেছে। আর এসবের জন্য দায়ী করে শেখ হাসিনা, কামালসহ জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন শহীদ পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীরা।
গত ১০ জুলাই শেখ হাসিনা, কামাল ও মামুনের বিরুদ্ধে ৫টি অভিযোগ নিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। এর আগে মামলায় তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন। এরপর ৩ আগস্ট থেকে সাক্ষী গ্রহণ শুরু হয়। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ মোট আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে তথ্যসূত্র দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠার, জব্দ তালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠার এবং শহীদদের তালিকার বিবরণ দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠার রয়েছে। সাক্ষী হিসেবে রয়েছেন ৮১ জন। গত ১২ মে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
এফএইচ/এমএএইচ/জেআইএম