ঢাকায় এসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার

তিনজনের দায় স্বীকার, দুইজন রিমান্ডে

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:৪৮ পিএম, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
গ্রেফতার পাঁচজন

যশোরের গ্রামের বাড়ি থেকে সন্তান-স্বামীর সাক্ষাৎ পেতে ঢাকায় এসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন এক নারী (২৯)। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তিনজন দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। অন্য দুইজনের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এর আগে গতকাল শনিবার রাতে রাজধানীর গাবতলী, ডেমরা, বসিলা ও ভোলার তজুমুদ্দিন এলাকা থেকে অভিযুক্ত পাঁচজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) তাদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় আল-আমিন হোসেন (২৬), সবুজ (২৬) ও শফিকুল ইসলাম (২৬) দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শেখ সাদী আসামি শফিকুলের, ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল হুদা চৌধুরী আসামি সবুজের এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল ইসলাম আসামি আল আমিনের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

অন্যদিকে আসামি বিল্লাল হোসেন (২৫) ও রাসেল ওরফে মোল্লা রাসেলের (২৪) মামলার সুষ্ঠুতদন্তের জন্য তাদের সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শান্তা আক্তার তাদের দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আরও পড়ুন: সন্তানদের দেখতে ঢাকায় এসে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণের’ শিকার নারী

এর আগে শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজধানীর গাবতলী, ডেমরা, বসিলা ও ভোলার তজুমুদ্দিন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

ঘটনার বিবরণে থেকে জানা যায়, ভুক্তভোগী নারী (২৯) স্বামী-সন্তানসহ মোহাম্মদপুরের বসিলায় বসবাস করতেন। ৪ মাস আগে শারীরিক অসুস্থতাজনিত কারণে সন্তানদের স্বামীর কাছে রেখে তিনি গ্রামের বাড়িতে চলে যান। এর মধ্যে কিছু না জানিয়েই স্বামী তাকে তালাক দেন।

গত ২৫ জানুয়ারি তালাকের কারণ জানতে ও এ বিষয়ে আলোচনা করতে স্বামীর সাক্ষাতের জন্য ঢাকায় আসেন তিনি। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে তিনি তার আগের বাসায় এসে তার স্বামী-সন্তানকে না পেয়ে আশপাশে খোঁজাখুজি করতে থাকেন। বাড়ির মালিক, পার্শ্ববর্তী ভাড়াটিয়াদের কেউই তার স্বামী-সন্তানদের কোনো ঠিকানা দিতে পারেননি। এভাবে রাত প্রায় ৯টা পর্যন্ত বসিলা চল্লিশফিট, ফিউচার হাউজিং, গার্ডেনসিটি হাউজিং, স্বপ্নধারা হাউজিং ও আশপাশের এলাকায় খোঁজাখুজি করে সন্তানদের সন্ধান না পেয়ে গ্রামের বাড়ি ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। রাত সাড়ে নয়টার দিকে তিনি বসিলা চল্লিশফিট তিনরাস্তার মোড় থেকে গাবতলী যাওয়ার জন্য একটি রিকশা নেন।

আরও পড়ুন: ঢাকায় সন্তানদের দেখতে এসে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণের’ শিকার নারী

রিকশাচালক ওই নারীকে গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে না নিয়ে ঢাকা উদ্যান ও বসিলা এলাকার বিভিন্ন রাস্তায় ঘোরাতে থাকে এবং বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে মোবাইলে কথা বলে। ওই নারীকে তার স্বামীর বাসা খুঁজে বের করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ও তার অসহায়ত্বকে পুঁজি করে সময় ক্ষেপণ করতে থাকে।

প্রায় তিন ঘণ্টা রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে রাত প্রায় সাড়ে ১২টার দিকে বসিলা ফিউচার টাউনের একটি জায়গায় গিয়ে রিকশাচালক তার সঙ্গীরাসহ ওই নারীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে শ্রমিকদের জন্য তৈরি একটি অস্থায়ী টিনের ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে ৫ জন মিলে ভিকটিমকে হত্যার হুমকি দিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে নারীর চিৎকারে এলাকায় কর্তব্যরত সিকিউরিটি গার্ড ও লোকজনের উপস্থিতি টের পেয়ে আসামিরা ভিকটিম নারীকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। এরপর মোহাম্মদপুর থানা পুলিশকে খবর দিলে ওই নারীকে উদ্ধার করে হেফাজতে নেয় ও চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে পাঠানো হয়। মোহাম্মদপুর থানার এ ঘটনায় একটি মামলা করা হয়।

জেএ/জেএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।