মানবতাবিরোধী অপরাধ
কুড়িগ্রামের ১১ জনের পক্ষে সাফাই সাক্ষ্য ২৯ নভেম্বর
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালীন সংঘটিত হত্যা, গণহত্যা, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে কুড়িগ্রামের উলিপুর ও রাজারহাটের ১১ জনের পক্ষে প্রথম সাফাই সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের আগামী ২৯ নভেম্বর পরবর্তী দিন ঠিক করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
এ মামলায় বর্তমানে আসামি সংখ্যা ১১ জন। তাদের মধ্যে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন-মো. নুরুল ইসলাম ওরফে নুর ইসলাম (৭১), এছাহাক আলী ওরফে এছাহাক কাজী (৭৩), মো. ইসমাইল হোসেন (৭০), মো. ওছমান আলী (৭০), মো. আব্দুর রহমান (৬৫), মো. আব্দুর রহিম ওরফে রহিম মৌলানা (৬৫), মো. শেখ মফিজুল হক (৮১), মো. ছাইয়েদুর রহমান মিয়া ওরফে মো. সাইদুর রহমান (৬৪) ও আব্দুল কাদের (৬৭)। অন্য দুজন পলাতক। গ্রেফতারের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করেননি রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।
এর আগে গ্রেফতার আসামিদের মধ্যে মো. শাহজাহান আলী ও মকবুল হোসেন ওরফে দেওয়ানী মকবুল নামে দুজন মারা যান।
সাক্ষ্যগ্রহণের নির্ধারিত দিন রোববার (২২ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ দিন ঠিক করে আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন-বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন জাগো নিউজকে জানান, আমাদের সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করা হয়েছে। এখন আসামি পক্ষের সাফাই সাক্ষীর জন্য ২৯ নভেম্বর দিন ঠিক করা হয়েছে। ওইদিন আসামির পক্ষের সাফাই সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে।
তিনি জানান, এ মামলায় মোট আসামির সংখ্যা ছিল ১৩ জন। তাদের মধ্যে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে থাকা মো. শাহজাহান আলী ও মকবুল হোসেন নামের দুই আসামি সম্প্রতি মারা যান। এখন মামলায় গ্রেফতার ও পলাতক আসামি মোট ১১ জন। এর মধ্যে গ্রেফতার ৯ জন কারাগারে আর অন্য দুজন পলাতক।
আদালতে এ দিন রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন ও প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল। অন্যদিকে আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আব্দুস শুকুরি খান, অ্যাডভোকেট গাজী এম এইচ তামিম ও অ্যাডভোকেট আব্দুস সাত্তার পালোয়ান।
প্রসিকিউটর জানান, এর আগে মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) গঠন করে ওপেনিং স্ট্রেটমেন্ট ও সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ঠিক করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এরই ধারাবাহিকতায় মামলায় সাক্ষীর জবানবন্দি নেওয়া শুরু হয়।
২০২১ সালের ২৫ অক্টোবর মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে উলিপুর ও রাজারহাট উপজেলার ১৩ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
সংস্থার ৮০তম প্রতিবেদন জমার পর এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এ মামলার ১৩ আসামির মধ্যে ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দুজন পলাতক রয়েছেন। তদন্ত প্রতিবেদনের তিন ভলিউমে ৩৭৫ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ওই প্রতিবেদন তুলে ধরেন তদন্ত সংস্থার প্রধান এম সানাউল হক। এসময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) মো. রুহুল আমীনসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ১৩ আসামির বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারি থেকে তদন্ত শুরু হয়ে একই বছরের ২৪ অক্টোবর শেষ হয়। আটক, নির্যাতন, অপহরণ, গণহত্যা ও অগ্নিসংযোগের ১৬টি অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে ৭৪৫ জনকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে।
এফএইচ/এমআইএইচএস/জিকেএস