শীতের ফুল


প্রকাশিত: ১১:০৯ এএম, ১৮ নভেম্বর ২০১৬

পৌষ আর মাঘ এই দু’মাস শীতকাল। অগ্রহায়ণের নবান্নের বার্তার সঙ্গে শীতের বার্তাও চলে আসে আমাদের মাঝে। নানা ভর্তা আর পিঠার সঙ্গে খেজুরের রস যেন -এই মৌসুমের আনন্দকে আরো একধাপ বাড়িয়ে নেয়। তবে এসব কিছু ছাড়াও এই শীতের আরেকটি চমক হচ্ছে এই মৌসুমের ফুল। যদিও এই সময়ে বাতাসের অার্দ্রতার জন্য গাছপালা নির্জীব হয়ে পড়ে, তবুও এটি প্রকৃতিতে আনে এক নতুন ছোঁয়া। এই শুষ্কতার মাঝেও বাহারি রঙের নানা ধরনের ফুল চারিদিককে বিমোহিত করে।

আমাদের দেশে জন্মালেও কিংবা আমাদের এই দেশে পাওয়া যায় বলে বেশিরভাগ ফুল কিন্তু আমাদের দেশীয় নয়। এদের জন্ম শীতপ্রধান দেশে। কোন সেই পুষ্পপ্রেমী, যার হাত ধরে ভীন দেশ থেকে এ দেশে এসেছে- এরা তা কেউ জানে না। তবে অন্য দেশ থেকে এলেও, এরা এ দেশের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে খুব সহজে। আর এসব শীতপ্রধান ফুলের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- ডালিয়া, বাটন কারেনশন, জিনিয়া, কসমস, পিটুনিয়া, পর্টুলেখা, ভার্বেনা। তবে এদের কিছু সুন্দর সুন্দর বাংলা নামও রয়েছে। যেমন বাটনকে বলা হয় বোতাম ফুল। দেশীয় ফুলের মধ্য রয়েছে কৃষ্ণকলি, গাঁদা ইত্যাদি।

শীতের ফুলের মধ্যে গাঁদা অন্যতম। এতে রয়েছে নানা রঙ আর ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতি। কোনোটা হালকা হলদে, কোনোটা হলদে-কমলা আবার কোনোটার পাপড়ির মধ্যে খয়েরি রঙ। এদের মধ্যে লাল গাঁদাও রয়েছে। আকারের ক্ষেত্রেও রয়েছে তারতম্য। হাইব্রিড জাতের গাঁদা হয়ে থাকে বিশাল আকৃতির। তবে দেখতে বেশ সুন্দর।

শীতের আরেকটি নজরকাড়া ফুল ডালিয়া। এটির রয়েছে অসংখ্য প্রজাতি। ডালিয়ার মাংসল মূল দিয়ে এর বিস্তার করানো যায়। এর আছে নানা রঙের বাহার। সবুজ আর নীল ছাড়াও এতে আছে আরো কিছু রঙ। শীতের আরেকটি ফুল কসমস। তিন থেকে চার ফুট লিম্বা এবং ফালিপাতাবিশিষ্ট এই গাছে ধরে একটি একক ফুল। কসমসে লাল, সাদা এবং গোলাপি রঙই বেশি দেখা যায়।

কৃষ্ণকলি আমাদের দেশীয় ফুল। এটি হাত-দেড়েক লম্বা এবং এতে ছোট ছোট ফুল ফোটে। কোনোটি সাদা আবার কোনোটি গোলাপি।

শীতের ফুল গাছ লাগানোর ক্ষেত্রে ৮ থেকে ১২ ইঞ্চি মাপের টবই যথেষ্ট। ছোট আকৃতির গাছ যেমন ডায়ান্থাস, গাঁদা, পিটুনিয়া, গাজানিয়া ইত্যাদি ছোট টবে লাগানো যেতে পারে। তবে ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা এগুলো ১০ থেকে ১২ ইঞ্চি টবে লাগানো যায়। টবে মাটির সঙ্গে জৈব সার, কম্পোস্ট বা ভার্মিকম্পোস্ট মেশাতে হয়। তার মধ্যে পলিব্যাগের চারা লাগিয়ে চারার গোড়ার মাটি দুই হাতের আঙুল দিয়ে চেপে শক্ত করে দিয়ে এরপর পানি দিতে হয়। গাছে পানি দেয়ার সময় শুধু গাছের গোড়ায় পানি না দিয়ে ঝাঁঝরি দিয়ে গাছের ওপর থেকে বৃষ্টির মতো গাছ-পাতা ভিজিয়ে নিয়মিত হালকা পানি দেয়া ভালো। এতে গাছ বেশি সতেজ থাকে। প্রয়োজনমতো গাছে কাঠি পুঁতে দিতে হবে, যেন হেলে না পড়ে।

কোথায় পাবেন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কার্জন হলের উল্টোদিকে হাইকোর্ট মাজারের গেটের পাশে, ঢাকা কলেজের সামনে, মোহাম্মদপুর ও আগারগাঁওয়ে টবসহ ফুলগাছ ও ফুলের চারা কিনতে বেশ কয়েকটি দোকান পাবেন। যেখান থেকে আপনার পছন্দের ফুলের চারা কিনে নিতে পারেন। এছাড়াও রাজধানীর বনানী, শেখেরটেক রিং রোড, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, নিউমার্কেটসহ বিভিন্ন স্থানে শীতকালীন ফুলের চারা পাওয়া যায়। টবসহ নিতে চাইলে দাম পড়বে একটু বেশি, যেমন ৬০ থেকে ১৮০ টাকার মধ্যে।

টিটিএন/এনএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।