অনন্ত পৃথ্বীরাজের কবিতা
বিজয়গাথা এবং অন্যান্য

বিজয়গাথা
জুলাই-আগস্ট এলে মনে পড়ে যায়
ছাত্র আন্দোলনের কথা
রক্তগঙ্গায় ভাসিয়ে ছিলাম
প্রিয় হারানোর ব্যথা।
শোকের নদীতে কূল কিনারা নেই
কেবলি হাহাকার—
শহীদ পরিবার বেদনাবিধুর
কে বোঝে দুঃখ কার!
****
নৈঃশব্দের নৈঋত
ঘূর্ণনগতির অবয়বে রাখাইন মন;
দোলাচল স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যায়—
একটি নিঃসঙ্গ তালগাছ; পাশে বসে
একটি শকুনের আহাজারি।
ক্রৌঞ্চের ঠোঁটে ভর করে আছে
প্রাণী জন্মের দায়,
লোকায়ত ভাবনার অধরা
স্বপ্ন গিলে খায়।
****
দ্য ফ্রিডম অব এক্সপ্রেশান
আসুন না, আসুন, বসুন প্লিজ...
আমরা দেশকে ভালো রাখতে চাই, ঠিক তো!
সামনে ইলেকশন, কী ভাবছেন এবার?
এই ওয়েটার, আচ্ছা কী খাবেন বলুন!
দেশের তো বারোটা বেজে গেছে, আহা রে—
এই যে কদিন আগেও বয়লার মুরগি ছিল ১২৫
এবার আপনার কথা বলুন। চা না কফি!
ওয়েটার এদিকে একবার...
****
একটি সফল আন্দোলন নববিপ্লবের জন্ম দেয়
আবার জনতা জেগে উঠবে
সেদিন ঊর্মি হবে টালমাটাল
স্রোতের বিপরীত ঝাপ্টা এসে
ভেস্তে দেবে যত সাজানো রং।
ম্যালথাসের তত্ত্ব পড়ে বিপ্লব হবে না
যেদিন রক্তে কাঁপন লাগবে আবার
ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির মতো
ঘর থেকে বেরিয়ে আসবে লাল পিঁপড়ে
দলবেঁধে ছয় পায়ে পিলপিল করে।
****
মসনদ লুটিয়ে পড়ে পায়ে
(কবি অনিকেত শামীমকে)
‘লোক’ থেকে লোকান্তরিত হওয়ার আগে
বুঝে নিতে হবে গুরুপাক, মর্ত্যধামের রতিক্রিয়া।
একদিন মাটির ঘরের টেম্পার চলে যাবে,
ধুলোয় লুটিয়ে যাবে রাজার মসনদ, শাহিগদি—
বিজন অথবা বেগানা হয়ে যাবে জনবহুল লোকালয়—
খাঁজকাটা প্রাসাদ অকেজো পরে রবে সুরম্য অট্টালিকা।
কেবল সময়ের অপেক্ষায় কিছুকাল।
কবিগণ মরে না রাজার মতো, কবিরা ত্রিকালদর্শী হন।
এসইউ/এমএস