জানেন কি আমেরিকায় ডিমের দাম কত
সুপারশপ থেকে ডিম কিনছেন এক নারী, প্রতিকী ছবি
আপনি যদি সকালবেলার প্যানকেকের জন্য বাজারে গিয়ে দেখেন যে ডিমের দাম আগের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে, তাহলে আফসোস করবেন না। কারণ এই ভোগান্তি শুধু আপনার একার নয়। ২০২৫ সালে আমেরিকার রসায়ন-প্রধান বাজারগুলোতে ডিম শুধু একটি খাদ্যপণ্য নয়, স্বল্প সময়ের মধ্যে জীবনযাত্রার পরিবর্তনের প্রতীক হয়ে উঠেছে।
ফিড-ফুড চেন, বার্ড ফ্লু ঝুঁকি, পরিবহন ব্যয় ও বাজারে চাহিদার ওঠানামা-সব মিলিয়ে এক ডজন (গ্রেড-এ) ডিমের মূল্য এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে ঐতিহ্যবাহী নৈমিত্তিক নিত্যদিনের নাশতার আয়োজনেও খরচের হিসাব বের করতে হচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে, আমেরিকায় ‘ডিমের দাম কত?’ শুধু একটি তথ্য নয়, বরং আমাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তনবোধের একটি আয়না।
আমেরিকায় ডিমের দাম
- জানুয়ারি ২০২৫-এ ‘গ্রেড এ লার্জ এগস’ ধরনের এক ডজন ডিমের গড় খুচরা মূল্য ছিল ৪.৯৫ ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৫৯৭ টাকা।
- ২০২৫ এর মার্চে রেকর্ড ভাঙে ডিমের দাম। ইকোনমিক রিসার্স সার্ভিসের তথ্যমতে, এক ডজন ডিমের দাম হয়েছিল ৬.২৩ ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৭৫৯ টাকা। তবে এপ্রিলের দিকে দাম কিছুটা কমেছিল। তখন প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হয়েছে ৫.১২ ডলারে (৬২০ টাকা)।

- রাজ্যভেদে দামে অনেক পার্থক্য আছে। যেমন-হাওয়াইতে দাম সবচেয়ে বেশি, প্রতি ডজন প্রায় ৯.৭৩ ডলার (প্রায় ১ হাজার ১৮২ টাকা)।
আরও পড়ুন
ফার্মগেট ফুটওভার ব্রিজ এখন ভোগান্তির প্রতিচ্ছবি
ফুটওভার ব্রিজ যেন ‘ছোট্ট শপিংমল’
- ডিমের বাজারে হঠাৎ ঊর্ধ্বমুখী দামের পেছনে একাধিক জটিল কারণ জড়িত। শুধু মুদ্রাস্ফীতি নয়, বার্ড ফ্লুর ঝুঁকি, খামারে উৎপাদন কমে যাওয়া, খাদ্য ও পরিবহন খরচ বৃদ্ধি-সব মিলিয়ে বাজারে সরবরাহ কমে গেছে, আর সেই সুযোগে চাহিদা বেড়েছে আগের চেয়ে অনেক বেশি। ফলে আমেরিকার ভোক্তাদের এখন এক ডজন ডিম কিনতে গুনতে হচ্ছে আগের চেয়ে দ্বিগুণ পর্যন্ত দাম।
দাম বাড়ার প্রধান কারণ
- বার্ড ফ্লু: অনেক ডিম পাড়া পোল্ট্রি মারা গেছে, এতে পশু-পাখি খামারগুলো ধ্বংস হয়েছে। ফলে সরবারহ কমে গেছে।
- চাহিদা ও উৎসব-সময়ের অতিরিক্ত ক্রয়: উৎসব, পোশাক, বেকারি, রেস্তোঁরা ইত্যাদির চাহিদা বেড়ে গেছে। সেই সঙ্গে খুচরা দোকানগুলো উৎসবের আগে স্টক বাড়াতে চায়, যা দাম বাড়তে সাহায্য করে।
- মহামারি ও প্রাকৃতিক পরিস্থিতি: ‘এইচপিএআই’ ছাড়াও শীত বা অপ্রত্যাশিত আবহাওয়ার কারণে পরিবহন ও উৎপাদন ব্যয় বাড়ে।
- মুদ্রাস্ফীতি: সাধারণভাবে খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ছে, খামার শ্রম, ফিড (চারা, চাল, ভিটামিন ইত্যাদির খরচ) বাড়ছে। এগুলো সব মিলিয়ে উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে।
দাম কেমন পরিবর্তন হয়েছে
- ২০২২-এর তুলনায় দাম অনেক বেশি বেড়েছে। ২০২৪-এর প্রথম দিকে দাম ছিল ২-৩ ডলারের মধ্যে (বিভিন্ন রাজ্যে ও বিভিন্ন ধরনের ডিমের জন্য), কিন্তু ২০২৫-এ বড় পরিবর্তন এসেছে। মার্চে দাম সবচেয়ে বেশি; পরে কিছুটা কমেছে তবে আগের বছরের তুলনায় এখনো বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
ফুটওভার ব্রিজের দোকানে কি আছে আপনার জন্য?
বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যতের ঝুঁকি
- ডিমের দাম কিছুটা কমেছে। কিন্তু খুচরা বাজারে দাম দ্রুত কমে না, কারণ রিটেইলাররা স্টক ও ব্র্যান্ড পার্থক্য বিবেচনায় রেখে মূল্য পরিবর্তন করে। তবে কিছু রাজ্যে ও দোকানে এ ধরনের রেকর্ডের দাম এখনো চোখে পড়ছে।
- ভবিষ্যতে দাম কমার সম্ভাবনা আছে যদি বার্ড ফ্লু নিয়ন্ত্রণে আসে, খামারগুলো পুনরুদ্ধার হয় এবং খামার ফিড ও শ্রম ব্যয় কমে।
তথ্যসূত্র: এপি নিউজ, ফার্ম ব্যুরো, ইকোনমিক রিসার্স সার্ভিস
জেএস/জিকেএস
