শাহবাগে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ

এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে লাঠিপেটা, জলকামান ও বলপ্রয়োগ করেও শাহবাগে আন্দোলনকারীদের দমাতে পারেনি পুলিশ। সবশেষ এবার টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করা হয়েছে।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টা ৫৮ মিনিটের দিকে বেশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারগ্যাস ছোড়া হয়। এসময় আন্দোলনকারীদের ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘পুলিশের হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘পুলিশ দিয়ে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবে না’, ‘আমার ভাই আহত কেন, প্রশাসন জবাব চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
এর আগে দুপুর ১টা ৫০ মিনিটের দিকে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। পরে আন্দোলনকারীরা ফের জড়ো হতে থাকেন।
দুপুর ১টা ২০ মিনিটে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন তারা। তাদের দাবি, প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপে সুপারিশপ্রাপ্ত ৬ হাজার ৫৩১ জনের অনতিবিলম্বে যোগদান নিশ্চিত করা এবং এনটিআরসিএ'র নিবন্ধিত (প্রথম-১২তম) নিয়োগপ্রত্যাশী শিক্ষকদের নিয়োগ নিশ্চিত করা।
এনটিআরসিএ'র নিয়োগ প্রত্যাশীরা বলছেন, শিক্ষক নিয়োগচক্রে (প্রথম-পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তিতে) আবেদনকৃতদের বৈষম্যের শিকার ও সিস্টেম দুর্নীতিজনিত কারণে তারা নিয়োগবঞ্চিত হয়েছেন। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম থেকে ১২তম ব্যাচে উত্তীর্ণ যোগ্য নিবন্ধিত শিক্ষকদের ডাটাবেজ পৃথক করে এন্ট্রি লেভেল বয়স বিবেচনা করে এবং বিগত ১৭ অক্টোবর ও ২৩ ডিসেম্বরে প্রধান উপদেষ্টার পক্ষে এপিএস সাব্বির আহমেদের প্রতিশ্রুতি অবিলম্বে বাস্তবায়ন চান তারা। এছাড়া আমলাতান্ত্রিক সকল জটিলতা নিরসন করে নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন তারা।
- আরও পড়ুন
- শাহবাগে পুলিশের লাঠিপেটা, আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ
- প্রাথমিক ও এনটিআরসিএ নিয়োগপ্রত্যাশীদের শাহবাগ অবরোধ
- তৃতীয় ধাপে প্রাথমিকের ৬৫৩১ শিক্ষকের নিয়োগ হাইকোর্টে বাতিল
গত ৬ ফেব্রুয়ারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের ছয় হাজার ৫৩১ জন প্রার্থীকে নিয়োগের ক্ষেত্রে নিয়োগপত্র প্রদানসহ এ সংক্রান্ত সরকারি সিদ্ধান্ত বাতিল করে রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজির সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় দেন।
২০২৩ সালের ১৪ জুন ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এরপর ৬ হাজার ৫৩১ জন প্রার্থীকে নির্বাচন করে গত বছরের ৩১ অক্টোবর নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গত ১১ নভেম্বরের এ-সংক্রান্ত আদেশ অনুসারে নির্বাচিত প্রার্থীদের অনুকূলে ২০ নভেম্বর নিয়োগপত্র ইস্যু করার কথা ছিল। তবে ওই নিয়োগে কোটা অনুসরণের অভিযোগ তুলে ফলাফল প্রকাশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে নিয়োগবঞ্চিত ৩১ প্রার্থী গত নভেম্বরে রিটটি করেন।
রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট গত ১৯ নভেম্বর রুল দেন। পাশাপাশি গত ৩১ অক্টোবর ও গত ১১ নভেম্বরের সিদ্ধান্তের কার্যক্রম স্থগিত করেন। হাইকোর্টের আদেশের পর নিয়োগপত্র ইস্যু হয়নি।
রুলে গত ৩১ অক্টোবরের ফলাফল প্রকাশের বিজ্ঞপ্তি ও নিয়োগ বিষয়ে গত ১১ নভেম্বরের নির্দেশনা-সংবলিত স্মারক কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, মহাপরিচালকসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়। এ রুল এখন হাইকোর্টে নিষ্পত্তি হচ্ছে।
এনএস/বিএ/জিকেএস