জুলাই গণঅভ্যুত্থান

দোসরদের শাস্তি ও ভিকটিমদের মানসিক ক্ষত পূরণে কমিশন গঠনের আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৫৯ পিএম, ০৯ মার্চ ২০২৫
গোলটেবিল বৈঠকে বিশিষ্টজনরা

জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে খুনি ও তাদের দোসরদের বিচার নিশ্চিত এবং ভিকটিমদের মানসিক ক্ষত থেকে সারিয়ে তোলার অংশ হিসেবে ট্রুথ অ্যান্ড হিলিং কমিশন (টিএইচসি) গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন বিশিষ্টজনরা।

ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল অ্যান্ড ডিপ্লোমেসি (আইআইএলডি) এবং বাংলাদেশ ২.০ ইনিশিয়েটিভ যৌথভাবে ‘ট্রুথ অ্যান্ড হিলিং কমিশন (টিএইচসি) বিরোধ-পরবর্তী বাংলাদেশ: একটি ভিকটিম-কেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তারা এই আহ্বান জানান।

রোববার (৯ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে অবস্থিত ড. আব্দুল্লাহ ফারুক কনফারেন্স হলে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার তাজরিয়ান আকরামের সঞ্চালনায় বৈঠকে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক তাতসুসি আরা, আলোকচিত্রী ও অ্যাক্টিভিস্ট শহিদুল আলম, ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ মানবাধিকারবিষয়ক উপদেষ্টা হুমা খান, বিএনপি নেতা হুম্মাম কাদের চৌধুরী।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কেন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক তাতসুসি আরা। তিনি সুদীর্ঘ সময় নেপাল, ভারত এবং পাকিস্তানে কাজ করেছেন। তার আলোচনায় তিনি ট্রুথ এবং হিলিং সংক্রান্ত ধারণাগুলোর ব্যাখ্যা প্রদান করেন এবং এ কমিশনের জন্য অভিজ্ঞতালব্ধ পরামর্শ প্রদান করেন।

আরও পড়ুন

অ্যাক্টিভিস্ট শহিদুল আলম বলেন, ভিকটিমরা ন্যায়বিচার চান, যার জন্য প্রয়োজন জাতীয় ডায়ালগ এবং তাদের গল্পগুলো তুলে আনার জন্য প্রয়োজন নির্দিষ্ট ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি।

জুলাই অভ্যুত্থানে সরকারের একটা অংশেরই কেবল পরিবর্তন হয়েছে উল্লেখ করে হুমা খান বলেন, পুলিশ, বিচার বিভাগসহ অধিকাংশ জায়গায় পূর্ববর্তী লোকদের উপস্থিতিতে কীভাবে ভিকটিমদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। এই অঞ্চলের নির্যাতনের ইতিহাস কেবল ১৬ বছরের নয়, বরং দক্ষিণ এশিয়ার সুদীর্ঘ সময়ের এমন নিভৃত অনেক রাজনৈতিক, ঐতিহাসিক নির্যাতন রয়েছে।

ব্যারিস্টার ইমরান আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী নির্যাতনকারী এবং ভিক্টিমের পাশাপাশি মিডিয়া, বিচার বিভাগ, সিভিল সোসাইটিকেও এ প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করতে বলেন।

বিএনপি নেতা হুম্মাম কাদের চৌধুরী আয়নাঘরে থাকার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন এবং এ জাতীয় কমিশনের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করেন।

এ সময় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বিশিষ্ট নেতা, অ্যাক্টিভিস্ট আলী আহসান জুনায়েদ জুলাই আন্দোলনে যাত্রাবাড়ীতে তার লোমহর্ষক অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন।

ট্রুথ অ্যান্ড হিলিং কমিশনের (টিএইচসি) ওপর আইআইএলডি এর নির্বাহী পরিচালক শফিউল আলম শাহীনের প্রস্তাবনায় একটি ওয়ার্কিং কমিটি গঠিত হয়। কমিটির সদস্যরা হলেন- মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ, হুমা খান, সাইফুদ্দিন আহমেদ, আতাউর রহমান তালুকদার, আলী আহসান জুনায়েদ, সাকীব সরকার, হারুন অর রশীদ, তাজরিয়ান আকরাম, নওশিন শর্মিলা রিতু, শফিউল আলম শাহীন এবং রাজীব মন্ডল।

বৈঠকে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আতাউর রহমান তালুকদার, ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম ট্রাইব্যুনালের সিনিয়র গবেষক খন্দকার রাকীব, সাংবাদিক সাকিব সরকার, নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক ওমর নাসিফ আব্দুল্লাহ ও জাহিদুল ইসলাম মিয়াজি, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক খন্দকার রাকিব, ওমর নাফিস আব্দুল্লাহ, জাহিদুল ইসলাম মিয়াজী, বিইউপির শিক্ষক আতাউর রহমান অপূর্বসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

এসআরএস/ইএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।