ঢাকা এখনো ফাঁকা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:১৩ পিএম, ০৩ এপ্রিল ২০২৫

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গ্রামে যাওয়া কর্মব্যস্ত মানুষগুলো আবার ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছেন। তবে ঈদের আগে যে পরিমাণ মানুষ ঢাকা ছেড়েছে এখনো সবাই ফেরেননি। আবার সরকারি বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকায় যারা ঢাকায় ফিরেছেন, তারা বাইরে খুব একটা বের হচ্ছেন না। ফলে রাজধানী ঢাকার রাস্তাগুলো এখনো প্রায়ই ফাঁকা।

রাস্তায় মানুষের চলাচল যেমন কম তেমনি গণপরিবহন, ব্যক্তিগত গাড়ি, রিকশা, মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশার চলাচলও বেশ কম। ফলে যানজটের নগরী ঢাকার কোথাও এখন যানজট নেই। ঢাকার এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় খুব সহজেই যাতায়াত করতে পারছেন ঘর থেকে বের হওয়া মানুষ।

বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, গুলিস্তান, মতিঝিল, শাহবাগ, নিউমার্কেট, ধানমন্ডি, মিরপুর, রামপুরা, বাড্ডা, মালিবাগ, মৌচাক ও কাকরাইল ঘুরে কোথাও কোনো যানজট চোখে পড়েনি। প্রতিটি এলাকার সড়কেই যানবাহনের সংখ্যা বেশ কম দেখা গেছে।

ঢাকা এখনও ফাঁকা

নতুনবাজার থেকে মোটরসাইকেলে গুলিস্তান আসা মো. ইসরাফিল বলেন, একটি মোবাইল ঠিক করার জন্য গুলিস্তানে এসেছিলাম। রাস্তা একেবারে ফাঁকা। নতুনবাজার থেকে গুলিস্তান আসতে কোথাও কোনো সিগন্যালে পড়তে হয়নি। ২০ মিনিটের মধ্যে চলে এসেছি। অফিস খোলার দিন এই রাস্তাটুকু আসতে এক ঘণ্টার বেশি সময় লাগে।

তিনি বলেন, রাস্তা ফাঁকা হওয়ায় ঢাকার রাস্তায় চলাচল করে খুব শান্তি পাচ্ছি। কিন্তু গুলিস্তানে এসে হতাশ হয়েছি। যে কাজে এসেছিলাম, সেই কাজ হয়নি। কারণ দোকান বন্ধ। সবাই নাকি ঈদের ছুটিতে। এখন আবার আগামী রোববার আসতে হবে।

আরও পড়ুন:

খুলনা থেকে ঢাকায় আসা বেসরকারি চাকরিজীবী মো. খায়রুল হোসেন বলেন, আমাদের অফিস শনিবার থেকে খোলা। আগামীকালও ছুটি। রাস্তার ভোগান্তি এড়াতে একদিন আগেই চলে এলাম। কারণ আমাদের ধারণা আগামীকাল শুক্রবার ও পরের দিন শনিবার রাস্তায় মানুষের প্রচুর চাপ থাকবে। ঈদের আগে শুক্র ও শনিবার রাস্তায় মানুষের প্রচুর চাপ দেখেছিলাম।

তিনি বলেন, গ্রামের বাড়িতে বাবা, মা, ভাই, বোন আছে। জীবিকার তাগিদে এই যান্ত্রিক নগরী ঢাকায় পড়ে থাকি। ১০ বছর ধরে ঢাকায় আছি। প্রতিবারই ঈদে বাড়ি যাই। এবারও গ্রামের বাড়ি গিয়ে সবাই একসঙ্গে ঈদ উদযাপন করেছি। পদ্মা সেতুর কারণে এখন বাড়ি যেতে অনেক কম সময় লাগে। এবার লম্বা ছুটি পেয়েছিলাম, প্রায় এক সপ্তাহ গ্রামে থেকে এলাম। এত লম্বা ছুটি সাধারণত আমরা পাই না। ছুটি শেষে এখন আবার কাজে যোগ দিতে হবে।

ঢাকা এখনো ফাঁকা

তিনি আরও বলেন, ঈদ উপলক্ষে যারা গ্রামের বাড়ি গেছেন, তাদের বেশির ভাগই এখনো ফিরে আসেননি। ফলে ঢাকার রাস্তায় এখনো ঈদের আমেজ। রাস্তায় মানুষের চলাচল অনেক কম। গাড়িও কম চলছে। সিএনজিচালিত অটোরিকশা পাওয়া একটু কষ্টকর। তবে রিকশা পাওয়া যাচ্ছে। যেহেতু গাড়ির পরিমাণ কম তাই রাস্তায় কোনো যানজট নেই।

শনির আখড়া থেকে মিরপুর-১০ নম্বরে আসা হৃদয় বলেন, মোটরসাইকেলে আধাঘণ্টার মধ্যে শনির আখড়া থেকে মিরপুর-১০ চলে এসেছি। বন্ধুরা মিলে আড্ডা দেওয়ার জন্য এখানে এসেছি। বন্ধুরা মিলে সন্ধ্যা পর্যন্ত আড্ডা দিয়ে বাসায় ফিরে যাবো। ফাঁকা ঢাকায় বাইকে ঘুরে বেড়াতে খুব ভালো লাগে। আমরা তো এমন সুযোগ খুব একটা পাই না। যে রাস্তা পাড়ি দিতে সাধারণত দেড়-দুই ঘণ্টা লাগে, এখন সেই রাস্তা ২০-৩০ মিনিটে পাড়ি দেওয়া যাচ্ছে।

আকাশ পরিবহনের চালক মো. হামজার আলী বলেন, আমাদের গাড়ি যে রাস্তায় চলাচল করে তার পুরোটাই যানজটের রাস্তা। অফিস চলাকালে সব সময় যানজট লেগেই থাকে। শুক্র-শনিবারও এই রাস্তায় যানজট থাকে। তবে ঈদের ছুটিতে এ রাস্তা এখন প্রায় ফাঁকা্। কোথাও কোনো যানজট নেই। আগামীকাল শুক্রবারও এমন ফাঁকা থাকবে বলে আমরা ধারণা করছি। শনিবারও অনেকটাই ফাঁকা থাকতে পারে। তবে রোববার থেকে আবার সেই চিরচেনা যানজট শুরু হবে।

এমএএস/এসএনআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।