রিজওয়ানা হাসান

নির্বাচনকালীন সরকারের কথা শুনিনি, নির্বাচন করবে এই সরকারই

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:৪২ পিএম, ০৮ অক্টোবর ২০২৫
সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান

নির্বাচনকালীন সরকারের কথা শোনেননি, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারই নির্বাচন করবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

বুধবার (৮ অক্টোবর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা এ কথা জানান।

সবকিছু মিলে রাজনীতি নির্বাচন কোন দিকে যাচ্ছে। নির্বাচন কি আসলে হবে? বিভিন্ন বিষয়ে দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য হচ্ছে না। নির্বাচনের আগে বিচার কতটা দৃশ্যমান হবে- এসব বিষয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি মনে করি যে পরিস্থিতি একদমই স্থিতিশীল আছে। শুধু যে অন্তর্বর্তী সরকার বলেছে ফেব্রুয়ারিতে ইলেকশন হবে তা নয়, সব রাজনৈতিক দল ফেব্রুয়ারিতে ইলেকশনের পক্ষে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। ফেব্রুয়ারিতে ইলেকশন হবে, এখানে প্রশ্নবোধক চিহ্ন তোলার আর কোনো সুযোগ বা অবকাশ আছে বলে আমরা মনে করছি না।’

তিনি বলেন, দ্বিতীয়ত হচ্ছে সংস্কার ও বিচার। এগুলো চলমান প্রক্রিয়া। বিচার বিচারের গতিতে চলছে। বিচার কীভাবে চলছে, এটা প্রত্যেকে প্রত্যক্ষ করতে পারছেন এবং বিচারের ক্ষেত্রে আমাদের যে কমিটমেন্ট সেটাও আমরা দেখিয়েছি। যখন আমরা দেখেছি এটা একটা ট্রাইব্যুনালের ওপর চাপ বেশি হয়ে যায়, আমরা আরেকটা ট্রাইব্যুনাল বাড়িয়েছি। কাজেই বিচার বিচারের গতিতে চলছে। আমরা আমাদের মত ওটাকে প্রাধান্য দিচ্ছি এবং প্রাধান্য দিয়ে সে মোতাবেক কাজ এগিয়ে যাচ্ছি।

বিচার আমরা অবশ্যই চাই। আমরা অবশ্যই চাই যে সুবিচার নিশ্চিত হোক। সেজন্য যে পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে, সেই পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন
এক্সিট খুঁজছি না, বাকি জীবনও বাংলাদেশেই কাটিয়ে যাবো
সেফ এক্সিট কেন?

রিজওয়ানা হাসান বলেন, ঐকমত্য হয়নি কথাটা তো ঠিক না। ঐকমত্য হয়েছে। অনেক বড় বড় বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। এখন যে সমস্ত বিষয়ে সংস্কার কেন্দ্রিক ঐকমত্য হয়েছে, সেই সমস্ত ঐকমত্যের বাস্তবায়নটা কেমন করে হবে সেখানেও আলোচনা হয়েছে। সেখানেও মোটামুটি বিভিন্ন অপশন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দুই একটা অপশনের দিকে রাজনৈতিক দলগুলো বেশি সমর্থন দিচ্ছেন।

এখন আপনি যদি একটা রাজনৈতিক প্রসেসে একটা রাজনৈতিক পদ্ধতিতে কিছু প্রশ্নের সমাধান চান এটা আপনার আপস অ্যান্ড ডাউনস হবেই। এটা তো স্মুথ যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। স্মুথ যাচ্ছে পদ্ধতিটায়, যেখানে সবাই আলোচনায় আসছেন। সবাই আলোচনায় বসছেন। সবাই আলোচনায় মতামত দিচ্ছেন। এটা তো একটা স্মুথ প্রসেসে হচ্ছে।

পরিবেশ ও বন উপদেষ্টা আরও বলেন, কিন্তু পরিবর্তনটা কেমন করে হবে? এখানে তো রাজনৈতিক ডিবেট থাকবেই। সেখানে আশঙ্কিত, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আমরা প্রক্রিয়া অনুসরণ করছি। এজন্য যে আমরা একটা জায়গায়...এটা কোনো চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় না। চাপিয়ে দিলে কোনো কিছুই আর আপনার টেকসই হবে না। এটা আমরা এর আগেও দেখেছি।

আমরা চাপিয়ে না দিয়ে সবাই একমত হয়ে যে টুকু করতে চাইবে আমরা সেটুকু সংস্কারের ঐকমত্য ও পদ্ধতির ঐকমত্যের দিকেই যাব। এই যে এটা রাজনৈতিক আলোচনা, এখানে তো উত্তাপ থাকবে, তাপ থাকবে। এখানে একমত থাকবে। সবই থাকবে। এটা তো খুবই স্বাভাবিক।

নির্বাচনের আগে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, বিচার কখন হবে, সেটা তো আসলে পুরো শুনানি প্রক্রিয়া শেষ হবে, সাক্ষ্যগ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ হবে, তার পরে বলা যাবে। আমি তো তার আগে বলতে পারবো না যে অক্টোবর মাসে রায় হবে। প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর তারপরে বলা যাবে যে, হবে কি না। আমরা সেই পথেই এগোচ্ছি।

তিনি বলেন, আমাদের যে ক্যালেন্ডার সেই ক্যালেন্ডারে তো আমরা এখনো কোথাও ফেল করিনি। ফলে বিচারাধীন যে মামলাগুলো আছে, সেগুলোর বিচার প্রক্রিয়া শেষ হলেই হবে এবং দেড় বছরে বিচারের রায় হয় এটা তো অসম্ভব কিছু না। এর আগে তো আমরা দেখেছি যে দেড় বছরে বিচারের রায় হয়। আমরাও আশা করবো যে রায় হয়তো হবে।

এই সরকার একটা ভালো নির্বাচন করতে চাচ্ছে, ইনক্লুসিভ নির্বাচন করতে চাচ্ছে। আসলে ইনক্লুসিভ নির্বাচনের সংজ্ঞাটা আপনাদের কাছে কী? একটা বড় দল এখানে অংশ নিতে পারবে কি পারবে না সেটা নিয়েও এক ধরনের প্রশ্ন রয়েছে- এ বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, সরকার প্রথম থেকে বলেছে একটা স্বচ্ছ নির্বাচন, জনগণ যেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে সেই নির্বাচনটা চায় এবং জনগণের অংশগ্রহণের পথে যাতে কোনো কিছু কোনো অন্তরায় না হয় সেজন্য সরকার নির্বাচন কমিশনকে যতভাবে সহায়তা দেওয়া যায় ততভাবে সহায়তা দেবে। কোনো রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ করা না করার বিষয়টা আইনি হতে পারে। অংশগ্রহণ করা না করার বিষয়টা তাদের পলিটিক্যাল ওয়েটেজ অনুযায়ী ডিসাইডেড হবে।

এই অন্তর্বর্তী সরকার কি নির্বাচন করবে, নাকি ছোট আকারে আরেকটা নির্বাচনকালীন সরকার হবে? জানতে চাইলে রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমি এ রকম কোনো কথা শুনিনি। এই অন্তর্বর্তী সরকারই নির্বাচন করবে। এখনো পর্যন্ত এটাই হচ্ছে অবস্থা এবং অবস্থান।

আরএমএম/এমআইএইচএস/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।