এখনো নিজ কার্যালয়ে অবরুদ্ধ রেড ক্রিসেন্টের চেয়ারম্যান

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:১৫ পিএম, ১২ অক্টোবর ২০২৫
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও স্বেচ্ছাসেবকদের অবস্থান/ ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আজিজুল ইসলামের পদত্যাগের দাবিতে তার কার্যালয় ঘেরাও করে আন্দোলন করছেন সোসাইটির কর্মকর্তা-কর্মচারী ও স্বেচ্ছাসেবকরা। এতে রোববার (১২ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৭টা পর্যন্ত নিজ কার্যালয়ে অবরুদ্ধ ছিলেন তিনি। পদত্যাগ করা ছাড়া তাকে বের হতে দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

সকাল থেকে চলা এই আন্দোলনের মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি চেয়ারম্যান সমর্থকরাও কার্যালয়ে আসলেও দুপুরে তারা সরে যান৷ সহকর্মীদের সঙ্গে সংঘাতে জড়াতে চাননি তারা। এদিকে, রাত সাড়ে ৭টা নাগাদ পুলিশের উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে।

এদিকে, সকালে এই আন্দোলনের খবর পেয়ে জাগো নিউজের মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সদর দপ্তরে গেলে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীরা ঢুকতে দেয়নি। ঘটনাস্থলে উপস্থিত একাধিক কর্মকর্তা কর্মচারী জানিয়েছেন, ভেতরে পুলিশ, সাংবাদিক, আন্দোলনকারী ও আন্দোলনের বিপক্ষের সবাই আছেন। পরিস্থিতি থমথমে।

এ বিষয়ে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আজিজুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি এখন কথা বলতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন।

প্রতিষ্ঠানটির যুব বিভাগের উপ-পরিচালক মুনতাসির মাহমুন জাগো নিউজকে বলেন, আমরা ফ্যাসিস্টের দোসর এই চেয়ারম্যান চাই না৷ আমাদের নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলমান আছে। চেয়ারম্যান আমাদের মোকাবিলায় ফ্যাসিস্ট সমর্থক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জড়ো করেছেন এবং পুলিশ নিয়ে এসেছেন।

এরআগে গেল বুধবার সকাল থেকে রেড ক্রিসেন্টের সদর দপ্তরে এই বিক্ষোভ হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, শ খানেক লোক জড়ো হয়ে রেড ক্রিসেন্টের চেয়ারম্যানের দপ্তর ঘিরে স্লোগান দিচ্ছেন। এমনকি চেয়ারম্যান অফিস ত্যাগ করার সময় তার গাড়ি ঘিরেও প্রতিবাদী স্লোগান দিতে দেখা যায়।

রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবক ও যুব কমিটির একজন জাগো নিউজকে বলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম আসার পর থেকেই রেড ক্রিসেন্টে ভালো কর্মকর্তাদের সাইড করে দিয়েছেন। ভালো ভালো স্বেচ্ছাসেবকদেরও সাইড করে ফেলেছে। তার পক্ষের একটা অংশকে প্রাধান্য দিয়ে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছে। বিতর্কিত ও আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসন করছে। বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতিকেও পরিচালক করেছে। স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, মারতে তেড়ে যাওয়াসহ নানা ধরনের ঘটনা চেয়ারম্যান ঘটিয়েছেন। রেড ক্রিসেন্টের ইতিহাসে এমন নিকৃষ্ট চেয়ারম্যান আসে নাই। যার কারণে স্বেচ্ছাসেবকরা প্রতিবাদ করতে আসছে আজ। কিন্তু আমাদের ভেতরে ঢুকতে দিচ্ছে না। বহিরাগত এনে আমাদের দমনের চেষ্টা করছে।

প্রতিষ্ঠানটির যুব বিভাগের উপ-পরিচালক মুনতাসির মাহমুদ জাগো নিউজকে বলেন, রেড ক্রিসেন্টের বর্তমান চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই আওয়ামী লীগ পুনর্বাসন শুরু করেছে।তিনি দায়িত্ব নিয়েই সবার আগে বিএনপিপন্থীদের রেড ক্রিসেন্ট থেকে মাইনাস করেছেন। যারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে ছিলো তাদের সবাইকে হেডকোয়ার্টার থেকে বের করে ঢাকার বাইরে ট্রান্সফার করেছে। বর্তমানে হেডকোয়ার্টারে থাকা সব ডিরেক্টর ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের দোসর৷

মুনতাসির মাহমুদ আরও বলেন, চেয়ারম্যানের এসব দুর্নীতি এবং আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের বিরুদ্ধে যুব ও স্বেচ্ছাসেবক বিভাগের উপ-পরিচালক হিসেবে শুরু থেকেই প্রতিবাদ করায় উনি (আজিজুল ইসলাম) আমাকে তার অফিসে নিষিদ্ধ করেন। আমাকে গালি এবং হুমকি দিয়ে বলেন, রেড ক্রিসেন্টে কোনো বিএনপি বা এনসিপির জায়গা হবে না, সে নাকি জামাতের লোক। তবে জামায়াতের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা বিষয়টি অস্বীকার করেন।

তবে শুরু থেকে এই আন্দোলনকে মব আখ্যায়িত করে এর দায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও প্রতিষ্ঠানের বিএনপিপন্থী একাধিক কর্মকর্তার ওপর দায় চাপাচ্ছেন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা আজিজুল ইসলাম।

এসইউজে/এমএমকে/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।