দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা পর্নো-তারকা যুগলের ছিল বিলাসবহুল জীবন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৫৬ পিএম, ২০ অক্টোবর ২০২৫
বান্দরবানে গ্রেফতার পর্নো-তারকা যুগল

বাংলাদেশ থেকে পরিচালিত একটি আন্তর্জাতিক পর্নোগ্রাফি ওয়েবসাইটের সঙ্গে যুক্ত থেকে অশ্লীল কনটেন্ট তৈরি ও প্রচারের অভিযোগে এক দম্পতিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এসময় তাদের কাছ থেকে মোবাইল, সিমকার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ পর্নো ভিডিও তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জামাদি আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়।

সিআইডি বলছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পার হতে না পারা এ যুগল দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এলেও অনলাইনে রয়েছে তাদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি ও প্রমাণ।

সোমবার (২০ অক্টোবর) বিকেলে মালিবাগের সিআইডি সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান।

তিনি বলেন, দেশে অবস্থান করা আন্তর্জাতিক পর্নো ইন্ডাস্ট্রিতে অন্যতম শীর্ষস্থানে থাকা আলোচিত যুগলকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। সংস্থাটির এলআইসি এবং সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিট সোমবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে বান্দরবান জেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে।

আরও পড়ুন

বিশ্বে ৮ নম্বরে বাংলাদেশি সেই যুগল, ১১২ ভিডিওতে ভিউ ২ কোটিরও বেশি
পর্ন-তারকা যুগল অন্য বাংলাদেশিদেরও যুক্ত করে, বলছে সিআইডি

শুধু নিজেরাই পর্নো ভিডিও তৈরি করা নয় বরং অন্য মানুষদের এ জগতে সম্পৃক্ত করার মতো বেআইনি কর্মকাণ্ডের অভিযোগও রয়েছে গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে। এরইমধ্যে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এই পর্নো-তারকা যুগলকে নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ প্রকাশিত হয়। এসব প্রকাশিত তথ্যেই উঠে আসে, গ্রেফতার এই যুগল এক বছরেই পর্নো-তারকাদের আন্তর্জাতিক পারফর্মার র‍্যাংকিংয়ে শীর্ষস্থানীয়দের মধ্যে রয়েছেন এবং ২০২৫ সালের অক্টোবর পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী পারফর্মারদের মধ্যে তাদের অবস্থান অষ্টম।

বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান আরও বলেন, ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে তাদের প্রথম ভিডিও প্রকাশ হয়। পরে এক বছরে তাদের প্রকাশিত মোট ১১২টি ভিডিও ২ কোটি ৬৭ লাখেরও বেশি বার দেখা হয়েছে এবং বিশ্বব্যাপী পারফর্মারদের মধ্যে তাদের অবস্থান অষ্টম বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসে।

তাদের দুজনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, একাধিক আন্তর্জাতিক পর্নো ওয়েবসাইটে তারা ভিডিও আপলোড করতেন। এভাবে খোলাখুলি প্রচারণার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রাম, ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করেও তারা প্রচারণা চালাতেন। এসব প্রচারণায় ইন্ডাস্ট্রিতে যুক্ত হওয়ার জন্য অন্যদেরকে প্রলুব্ধ করে বিভিন্ন বার্তা প্রকাশ করতো তারা। আগ্রহীরা নতুন ক্রিয়েটর হওয়ার জন্য তাদের সঙ্গে টেলিগ্রামের মাধ্যমে যোগাযোগ করলে নতুনদের নানাভাবে উদ্বুদ্ধ করাও ছিল তাদের কাজ। যেমন- টেলিগ্রাম চ্যানেলে নতুন ক্রিয়েটর অ্যাড করলে নগদ অর্থ দেওয়া হবে বলে তারা বিজ্ঞাপন দিতেন।

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান আরও বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পার হতে না পারা এ যুগল দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এলেও অনলাইনে রয়েছে তাদের বিলাসবহুল জীবনধারার বহু ছবি। বিষয়টি সামাজিক ও নৈতিকভাবে উদ্বেগজনক এবং একইসঙ্গে বেআইনি হওয়ায় সিআইডির এলআইসি এবং সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিট দ্রুততার সঙ্গে এই পর্নো তারকা যুগলকে গ্রেফতার করে। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অপরাপর সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেফতার করার স্বার্থে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

টিটি/এএমএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।