কে এই তামিম ও মেজর জিয়া?

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:০৮ পিএম, ০২ আগস্ট ২০১৬

রাজধানীর গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে তামিম আহমেদ চৌধুরী ও সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ মো. জিয়াউল হকের কথা বলেছেন আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক। এদের প্রত্যেককে ধরিয়ে দিতে ২০ লাখ টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে তামিমকে নবগঠিত জেএমবি এবং জিয়াকে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) সদস্য দাবি করেছে পুলিশ। তবে তাদের সঙ্গে সাধারণ মানুষ ততটা পরিচিত নয়।

তামিম আহমেদ চৌধুরী
গুলশান হামলার অন্যতম ‘মাস্টারমাইন্ড’ তামিমের জন্ম কানাডায়। বাবার বাড়ি সিলেটের বিয়ানীবাজারে। কানাডার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম দাবি করছে তামিমের আরেক নাম শেখ আবু ইব্রাহীম, তিনি ইসলামিক স্টেট (আইএস) বাংলাদেশের প্রধান।

কানাডায় থাকাকালীন পুলিশি হয়রানির অভিযোগ তুললে তামিম বাংলাদেশে ফিরে আসে। তারপরই সরাসরি আইএসের হয়ে নাশকতা চালানোর পরিকল্পনা করতে থাকে। লেবানন থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদপত্রেও একই দাবি করা হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৩ সালের ৫ অক্টোবর দুবাই থেকে ইতেহাদ এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে তিনি বাংলাদেশে আসে। তবে দেশ ছেড়ে যাওয়ার বিষয়ে পুলিশের কাছে কোনো তথ্য নেই।

এদিকে টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক খবরে বলা হয়েছে, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক তামিম চৌধুরীসহ নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) কমপক্ষে পাঁচজন জঙ্গি ভারতে ঢুকে পড়েছেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

তামিম বিবাহিত ও তিন সন্তানের জনক। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে বসবাসরত আত্মীয়দের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। আইএস মুখপাত্র বলে পরিচিত ‘দাবিক’ ম্যাগাজিনের ১৪তম তামিমকে আইএসের বাংলাদেশ প্রধান দাবি করা হয়েছিল। এর পরপরই ঢাকার গুলশান ও কিশোরগঞ্জে পর পর হামলা হয়।

পুলিশের দাবি, গুলশান হামলার পূর্বে তামিম নিহত জঙ্গিদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। হামলার দিন জঙ্গিদের নানা বিষয়ে ব্রিফ করেছে।

মেজর জিয়াউল হক  
মেজর সৈয়দ মো. জিয়াউল হক বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা। ২০১১ সালে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে চাকরিচ্যুত করা হয় তাকে। এরপর থেকেই তিনি আত্মগোপনে আছেন। ২০১৩ সালে প্রথমবারের মতো এবিটির সঙ্গে জিয়াউল হকের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পায় পুলিশ। জিয়া জঙ্গিদের যুদ্ধ ও বোমা তৈরি ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেন বলে পুলিশের কাছে তথ্য আসে।

পুলিশ জানায়, ২০১৩ সালে এবিটি প্রধান মুফতি জসিমউদ্দিন রাহমানী গ্রেফতার হওয়ার পর এই নিষিদ্ধ সংগঠনের অন্যতম ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে জিয়ার নাম বেরিয়ে আসে। তখন জেএমবির একাংশের সঙ্গে এই বহিষ্কৃত সেনা কর্মকর্তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ থাকার তথ্যপ্রমাণ পায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সেই থেকেই পলাতক জীবনযাপন করছেন জিয়া। তার সঙ্গে পাকিস্তানে নিহত আরেক জঙ্গি নেতা এজাজের সঙ্গেও যোগাযোগের তথ্য মেলে।

জিয়ার গ্রামের বাড়ি মৌলভীবাজারের মোস্তফাপুরে, ঢাকায় সর্বশেষ মিরপুর সেনানিবাসের ভবন পলাশ`র ১২ তলায় থাকতেন। তার পাসপোর্ট নম্বর- X0614923.

মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই দুজনের অবস্থানের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, এ বিষয়ে এখনো নিশ্চিত না। তবে তামিম গুলশান হামলার আগে বাংলাদেশে ছিল। আমরা তামিম ও জিয়াকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছি। তাদের ধরলেই জানা যাবে তাদের উপরে কারা ছিল।

ওই দুজনকে ধরিয়ে দিলে বা তাদের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য দিলে ২০ লাখ টাকা করে মোট ৪০ লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক।
 
এআর/জেএইচ/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।