কুমিল্লায় ডাবল রেললাইন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০২:৫৮ পিএম, ১৭ এপ্রিল ২০১৫

শনিবার কুমিল্লার লাকসাম থেকে চট্টগ্রামের চিনকি আস্তানা পর্যন্ত  ১৬০৭.৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬১ কিলোমিটার নবনির্মিত ডাবল রেলপথের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী এক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ পথে ট্রেন সার্ভিসের উদ্বোধন করবেন।

একই সময়ে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন ইয়ার্ড রিমডেলিং কাজের উদ্বোধনও করবেন তিনি। এছাড়া প্রায় ৬ হাজার ৫০৫ কোটি টাকা ব্যয়ে লাকসাম থেকে আখাউড়া পর্যন্ত  ডুয়েল গেজ ডাবল রেললাইন নির্মাণ এবং বিদ্যমান রেললাইনকে ডুয়েল গেজে রূপান্তর কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনও করবেন তিনি।
 
এ বিষয়ে শুক্রবার রেলপথ মন্ত্রী মো. মুজিবুল হক কুমিল্লার লাকসামে ডাবল রেললাইন পরিদর্শন করেন। এ সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য তাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক আমজাদ হোসেনসহ বাংলাদেশ রেলওয়ে ও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।  

এ বিষয়ে রেলপথ মন্ত্রী মুজিবুল হক মুজিব সাংবাদিকদের জানান, পর্যায়ক্রমে পুরো রেলওয়ে ডাবল লাইন নির্মাণ করা হবে। তিনি আরো বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে প্রায় ৩২১ কিলোমিটার রেলপথের মধ্যে ২০৪ কিলোমিটার রেলপথে সিঙ্গেল লাইন রয়েছে। সিঙ্গেল লাইন থাকায় এ লাইনে প্রতিদিন ৩৬ জোড়া ট্রেন চলাচল করতে পারত। শনিবার ডাবল লাইন উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে এ লাইনে ৭০ জোড়া ট্রেন চলাচল করতে পারবে। ডাবল লাইনে উন্নীত হওয়ায় এখন থেকে দুর্ঘটনা বা অন্য কোন কারণে একটি লাইন বন্ধ থাকলেও ট্রেন চলাচল চালু রাখা সম্ভব হবে।
 
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ১৬০৭.৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে কুমিল্লার লাকসাম থেকে চট্টগ্রামের চিনকি আস্তানা পর্যন্ত ৬১ কিলোমিটার ডাবল লাইন নির্মাণের কাজ শেষ হয় চলতি বছরের ৩১ মার্চ। ২০১১ সালের ২ নভেম্বর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ ডাবল লাইনে উন্নীত হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৬১ কিলোমিটার রেলপথের কাজ শেষ হয়েছে। তিনি বলেন, ওই পথে ৮টি বড় সেতু, ৩৪টি কালভার্ট এবং ১১টি পাইপ কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে।

শর্শদী, গুণবতী, হাসানপুর ও চিনকি আস্তনায় ৪টি স্টেশনে নতুন স্টেশন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। ৮টি স্টেশনে ফুটওভার ব্রিজ, ৪টি স্টেশনে ক্যানোপি এবং ১৩টি নতুন প্ল্যাটফর্ম নির্মাণ করা হয়েছে। ১২টি স্টেশনে টেলিকমিউনিকেশন ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ করা হয়েছে।

জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ও বাংলাদেশ সরকারের (জিওবি) অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়। নতুন এ লাইন দিয়ে ১০০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চালানো সম্ভব। তবে অনুমোদিত স্পিড ৮০ কিলোমিটার নির্ধারণ করা হয়েছে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ ডাবল লাইনে উন্নীত হওয়ার কারণে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন ইয়ার্ড রিমডেলিং কাজও শেষ হয়েছে। যা একইদিনে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করবেন। স্টেশন বড় করতে, প্ল্যাটফর্ম তথা লাইন বাড়াতে প্রায় ২৬৩ কোটি টাকা ব্যয়ে স্টেশনের বাড়তি ৩টি লুপ ও ১টি শেডসহ প্ল্যাটফর্ম নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়েছে। ইঞ্জিন ঘোরানোর জন্য নতুন ত্রিকোণ লাইন নির্মাণ করা হয়েছে।

এছাড়া চট্টগ্রাম মার্শালিং ইয়ার্ড ও পাহাড়তলী স্টেশনের মধ্যে ৮০০ মিটিার রেলওয়ে ট্র্যাক পুনর্বাসন করা হয়েছে। ফুটওভারব্রিজসহ ৩০০ বর্গফুট প্ল্যাটফর্ম ক্যানোপি, ১০০০ মিটার বাউন্ডারি ওয়াল, ২৭০০ বর্গফুট সংযোগ সড়ক ও ২০০০ মিলিমিটার পানি সরবরাহ ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর ফলে আগে যেখানে ২৩ জোড়া ট্রেন পরিচালনা করা যেত এখন সেখানে ৫০ জোড়া ট্রেন পরিচালনা করা সম্ভব হবে। ডাবল লাইন নির্মাণ ও স্টেশন ইয়ার্ড রিমডেলিংয়ের কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে ট্রেন চলাচলে প্রায় ২ ঘণ্টা সময় সাশ্রয় হবে।

একই দিন লাকসাম থেকে আখাউড়া পর্যন্ত ডুয়েল গেজ ডাবল রেল লাইন নির্মাণ এবং বিদ্যমান রেললাইনকে ডুয়েল গেজে রূপান্ত কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রায় ৬ হাজার ৫০৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হবে ২০২০ সালের জুন মাসে। এ প্রকল্পে ৭২ কিলোমিটার সিঙ্গেল লাইনকে ডাবল লাইনে রূপান্তর করা হবে। মেইন লাইন ১৪৪ কিলোমিটার ও লুপ লাইন ৪০ কিলোমিটার মোট ১৮৪ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হবে। নির্মাণ শেষে এ লাইনে ১২০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চালানো সম্ভব হবে।

এমজেড/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।