‘৮ তলার শর্ট সার্কিট থেকে এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ড’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:০১ পিএম, ১৬ এপ্রিল ২০১৯

রাজধানীর বনানীতে আগুন লাগা এফআর টাওয়ারে ৮ তলায় শর্ট সার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছিল বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মোহাম্মদ এনামুর রহমান। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সচিবালয়ে সাম্প্রতিক সময়ে দুর্যোগ নিয়ে করণীয় নির্ধারণ এবং দুর্যোগ মোকাবেলার পূর্ব প্রস্তুতি সম্পর্কে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।

গত ২৮ মার্চ দুপুরে বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়ের এফআর টাওয়ারে আগুন লাগে। ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ২৪ জন নিহত হন। তাদের মধ্যে একজন শ্রীলঙ্কার নাগরিকও আছেন। এছাড়া আহত হন আরও ১৩০ জন। ওই ঘটনায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি গত ৭ এপ্রিল তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এফআর টাওয়ারের ঘটনায় দেখা গেছে ৮ তলায় শর্ট সার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত। ৮, ৯ ও ১০ তলা পর্যন্ত আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ১১ ও ১২ তলায় ধোঁয়ার কারণে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।’

তিনি বলেন, ‘এফআর টাওয়ারে অগ্নি নির্বাপনের সময় ফায়ার সার্ভিসের যে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তাতে আমরা সন্তুষ্ট। আজ আমাদের মিটিংয়ে উপস্থিত মন্ত্রণালয়গুলোর প্রতিনিধিরাও সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তবে সেখানে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের অভাব ছিল।’

ডা. মোহাম্মদ এনামুর রহমান বলেন, ‘সভায় চকবাজারের চুড়িহাট্টা, বনানীর এফআর টাওয়ার, গুলশানের ডিএনসিসি মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। হতাহতের সংখ্যা, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া এসব ঘটনায় আমাদের মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপ নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।’

Anamul-Rahman

তিনি বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধের বিষয়ে প্রতিনিধিরা মতামত দিয়েছেন। অগ্নিপ্রতিরোধে প্রত্যেকটি ভবনের অনুমোদন দেয়ার আগে ফায়ার ফাইটিং ব্যবস্থা নিশ্চিতের নির্দেশনা দিয়েছেন। পানি সরবরাহে বেশি পরিমাণে ওয়াটার হাইড্রেন্ট নির্মাণ করার জন্য ওয়াসার প্রতিনিধিকে বলা হয়েছে।’

সারাদেশের অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা নিয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সেখানে ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্সের উপকরণের অভাব রয়েছে। আমরা প্রথমে এক হাজার কোটি টাকা অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ক্রয় করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু চুড়িহাট্টা এবং এফআর টাওয়ারের আগুনের ঘটনার পরে আমরা দেখছি এই বাজেটে হবে না। কারণ, আমরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা খোঁজ নিয়ে দেখেছি, সেখানে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে ভারি যন্ত্রপাতি কিনতে হবে। বিশ্বে যে পরিমাণ যন্ত্রপাতি আবিষ্কার হয়েছে সেগুলো ক্রয় করতে গেলে আরও বড় বাজেটের দরকার।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ জন্য আমরা আগামী ১৮ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট কাউন্সিলের যে মিটিং হবে সেখানে এ বাজেট বাড়াতে প্রস্তাব পেশ করব।’

এনামুর রহমান বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে সংঘটিত ঘূর্ণিঝড় এবং টর্নেডোরে সারাদেশে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেসব এলাকায় আমরা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে শুকনা খাবার, চাল, টিন এবং নগদ টাকা বরাদ্দ করেছি। আজকের বৈঠকে দেশে দুর্যোগের কারণে যাতে কৃষিতে প্রভাব না পড়ে সে জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’

হাওর অঞ্চলে আগাম বন্যায় ক্ষতি যাতে না হয় সে জন্য পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় এবং সাইক্লোন থেকে উদ্ধারের জন্য আমরা ৪২৩টি আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। ৫৫০টি মুজিব কেল্লা তৈরির জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে এবং ২২০টি সাইক্লোন সেন্টারের কাজ প্রায় শেষের দিকে।’

আরএমএম/এসআর/আরএস/পিআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।