শরীয়তের বিধিবিধান মেনেই করোনা রোগীর দাফন

মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল
মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল , বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৫:০১ পিএম, ২২ মার্চ ২০২০

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দেশের প্রথম মৃত্যুবরণকারী বাসাবোর বাসিন্দা সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধকে মুসলিম রীতি মেনে জানাজা শেষে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়।

দাফন শেষে মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করে আল্লাহর দরবারে মোনাজাতও করা হয়। আজিমপুর কবরস্থানে বৃদ্ধের জানাজায় সাতজন উপস্থিত ছিলেন। বৃদ্ধের ছেলেমেয়েরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও লন্ডন প্রবাসী হওয়ায় তারা কেউ উপস্থিত থাকতে পারেননি। তবে বৃদ্ধের দূর সম্পর্কের একজন নাতজামাই জানাজায় অংশ নেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে করোনা রোগীর জানাজা ও দাফন ঠিকমতো হয়নি বলে যে অপপ্রচার চলছে তা সর্বৈব মিথ্যা।

রোববার দুপুরে আজিমপুর কবরস্থানের মোহরার হাফিজুর রহমানের কাছে দেশের প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর দাফন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি এসব কথা বলেন।

হাফিজুর রহমান বলেন, যেদিন করোনা রোগীটি মারা যান সেদিন দুপুরেই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা তাকে জানান, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত ব্যক্তিকে দাফনের জন্য আজিমপুর কবরস্থানে আনা হবে। এজন্য তাদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে বলেন।

তিনি তাৎক্ষণিক কবর খোঁড়ার ব্যবস্থা করেন। তারপর মরদেহটি আসার জন্য এশার নামাজের পর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে থাকেন। আনুমানিক রাত ৯টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে মরদেহ আসে। এ সময় হাফিজুর মরদেহ দাফনের জন্য জানাজাসহ অন্যান্য কার্যাবলি সম্পন্ন হয়েছে কিনা জানতে চাইলে জানাজা হয়নি বলে তাকে অবহিত করা হয়। আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামের স্ট্রেচারে রাখা অবস্থায় তিনি ওই ব্যক্তির জানাজা পড়ান। জানাজা শেষে স্ট্রেচারে করে মরদেহটি কবরের সামনে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় গোরখোদকদের সঙ্গে বৃদ্ধের নাতজামাই পরিচয়ে একজন উপস্থিত থেকে অন্য দশটা মরদেহের মতোই তাকে দাফন করা হয়। দাফন শেষে তিনি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনায় মোনাজাত করার পাশাপাশি করোনা সংক্রমণ থেকে মুক্ত থাকতে দেশবাসীর জন্য দোয়া করেন। সামগ্রিক দাফন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করায় জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান সমাজকল্যাণ কর্মকর্তা, একটি বেসরকারি টেলিভিশনের ক্যামেরাম্যান উপস্থিত ছিলেন।

হাফিজুর রহমান জানান, করোনা আক্রান্ত রোগীর স্বজনরা প্রবাসী হওয়ায় তারা উদ্যোগী হয়ে কবরে সবুজ ঘাস লাগিয়ে দিয়েছেন। সরেজমিন পরিদর্শনকালে কবরটি সবুজ ঘাসে আচ্ছাদিত করার ব্যাপারে তার কথার সত্যতা মেলে।

এমইউ/এমএফ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।