‘আমি কি গর্ভবতী বউটারে হাঁটাইয়া লইয়া হাসপাতালে যামু’

মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল
মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল , বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৩:৫১ পিএম, ৩০ মার্চ ২০২০

‘ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান, আপনি তো এ কথা বলেই খালাস। বাস, উবার, প্রাইভেটকার ও সিএনজিসহ সব গণপরিবহন বন্ধ। আমি কি গর্ভবতী বউটারে হাঁটাইয়া লইয়া যামু।’

সোমবার (৩০ মার্চ) দুপুর আনুমানিক ১টা। রাজধানীর সরকারি কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের প্রবেশ পথের নিরাপত্তারক্ষীকে উদ্দেশ করে এ কথাগুলো বলছিলেন গর্ভবতী এক গৃহবধূর তরুণ স্বামী। এ হাসপাতালে গাইনি বিভাগে নিয়মিত স্ত্রীর চেকআপ করিয়ে আসছিলেন তিনি। প্রেসক্রিপশনে চিকিৎসক আজ আসার দিন লিখে দিয়েছিলেন। তাই স্ত্রীকে নিয়ে এসেছেন। প্রবেশ পথেই বাধার মুখে পড়ে অসহায় দৃষ্টিতে একবার নিরাপত্তারক্ষী আরেকবার স্ত্রীর মুখের দিকে তাকাচ্ছিলেন।

এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে ওই গৃহবধূর স্বামী ক্ষোভমিশ্রিত কণ্ঠে বলেন, করোনা রোগী ছাড়া কাউকে চিকিৎসা দেয়া হবে না-এ কেমন সিদ্ধান্ত। গণপরিবহনও বন্ধ। এখন আমি স্ত্রীকে নিয়ে কোথায় যাবো, কোন ডাক্তার দেখাবো।

করোনাভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহভাজন ও ভর্তি রোগীদের চিকিৎসার জন্য রোববার (২৯ মার্চ) থেকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে অন্য সব বিভাগের চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। এ খবর না জানতে পেরে সকাল থেকে অনেক রোগী ও তাদের অভিভাবক হাসপাতালে এসে চিকিৎসা না ফিরে গেছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, রেডিসন হোটেলের উল্টো দিকে হাসপাতালের প্র্রবেশ পথের অদূরে একজন কর্মচারী কিছুক্ষণ পর পর হ্যান্ডমাইকে বলছিলেন, ‘সর্বসাধারণকে জানানো যাইতেছে যে, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে করোনা রোগী ছাড়া অন্য কোনো রোগী দেখা হবে না। জ্বর, ঠান্ডা, হাঁচি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি করোনার পূর্ব লক্ষণ যদি থাকে তাহলেই শুধু ওই রোগী দেখা হবে। অন্য কোনো রোগী দেখা হবে না। আদেশক্রমে কর্তৃপক্ষ।’

এদিকে আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা সোমবার করোনা নিয়ে নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে জানান, কুর্মিটোলার সাধারণ রোগীদের অন্য হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা দেয়া হবে।

এমইউ/এএইচ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।