টানা ৭২ ঘণ্টা উপসর্গ না থাকলে টেস্ট ছাড়াই করোনার ছাড়পত্র
টানা ৭২ ঘণ্টা জ্বর ও শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণজনিত উপসর্গ না থাকলে পরপর দুটি পলিমারেজ চেইন রিঅ্যাকশন (পিসিআর) টেস্ট ছাড়াই হাসপাতাল থেকে সেই রোগীকে ছাড়পত্র দেয়ার নতুন বিধান তৈরি করেছে দেশের কোভিড-১৯ কারিগরি কমিটি।
শুক্রবার (৮ মে) দুপুরে করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে এ তথ্য জানান অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
তিনি জানান, কোভিড-১৯ কারিগরি কমিটি হাসপাতাল থেকে রোগীর ছাড়পত্রের যে সুপারিশ করেছে এবং যে নির্ণায়কগুলো নির্দিষ্ট করেছেন, সেগুলো যথাযথভাবে পালিত হলেই রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাবেন।
এ বিষয়ে নাসিমা সুলতানা বলেন, ‘ক. জ্বর কমানোর ওষুধ- যেমন প্যারাসিটামল সেবন (খাওয়া) ছাড়াই জ্বর সেরে গেলে; খ. শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ বা সমস্যাজনিত উপসর্গ যেমন-শুষ্ক কাশি, কফ, নিশ্বাসে দুর্বলতা ইত্যাদি উপসর্গসমূহের লক্ষণীয় উন্নতি হলে; গ. ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে পরপর দুটি পিসিআর ফলাফল নেগেটিভ হলে। যদি দুটি পিসিআর পরীক্ষা করা সম্ভব না হয়, সেক্ষেত্রে যদি রোগীর ওপরের ক ও খ এর পরবর্তী টানা ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকে, তবে রোগীকে ছাড়পত্রের অনুমতি দেয়া যাবে।’
ছাড়পত্র পাওয়ার পর রোগীর করণীয় তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর রোগীকে অবশ্যই নিজ বাসায় অথবা মনোনীত যেকোনো জায়গায় আইসোলেশন অথবা অন্তরীণের নিয়ম মেনে চলতে হবে। হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার দিন থেকে শুরু করে পরবর্তী ১৪ দিন সেখানেই অবস্থান (আইসোলেশনে থাকা) করতে হবে। পরে সম্ভব হলে বাসায় থাকা অবস্থায় অথবা মনোনীত বা নির্দেশিত জায়গায় উপস্থিত হয়ে রোগীর পিসিআর পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় নমুনা নেয়া যেতে পারে।'
স্বাস্থ্য অধিদফতর নিয়মিতভাবে গাইডলাইন তৈরি করে যাচ্ছে। নতুন নির্দেশনা তুলে ধরে নাসিমা সুলতানা বলেন, ‘তারা সম্প্রতি আরেকটি গাইডলাইন তৈরি করেছেন। সেটা হলো কোডিভ-১৯ এর সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের কারিগরি নির্দেশনা। এই নির্দেশনায় তিনটি অধ্যায় আছে। প্রথম দুটি অধ্যায়ে ৫০টি সামাজিক ও প্রতিষ্ঠানিক স্থাপনার কোভিড-১৯ প্রতিরোধ ও করণীয়সমূহ সহজভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। যেসব প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা যেমন- চিকিৎসা, আইনশৃঙ্খলা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, জরুরি খাদ্য ও পণ্য সরবরাহ ইত্যাদি যেগুলো চালু রয়েছে, তাদের এই গাইডলাইনের প্রদত্ত নির্দেশনাসমূহ যথাযথভাবে অনুসরণ করতে স্বাস্থ্য অধিদফতর বিশেষভাবে অনুরোধ করেছে। যারা ভবিষ্যতে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান খুলবেন, তারা নির্দেশনা অনুযায়ী এখন থেকেই বিশেষভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করবেন।’
স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত এই মহাপরিচালক আরও বলেন, ‘দ্বিতীয় অধ্যায়ে বিভিন্ন বয়স পেশার মানুষের জন্য সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের নির্দেশনা দেয়া আছে। গর্ভবতী মা ও শিশু এবং বয়োজ্যেষ্ঠদের করণীয় এতে অন্তর্ভুক্ত আছে। এই কারিগরি নির্দেশনা এই ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।’
পিডি/এসআর/জেআইএম