বিধিনিষেধে কোথাও কঠোর কোথাও ঢিলেঢালা
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়েছে সাতদিনের কঠোর বিধিনিষেধ। বিধিনিষেধের মধ্যে কোথাও কঠোরতা আবার কোথাও ঢিলেঢালা অবস্থা দেখা গেছে।
পাশাপাশি সড়কের কোথাও যাচাই-বাছাই করে গাড়ি ছাড়া হলেও, অন্য সড়কে নির্দ্বিধায় চলছে গাড়ি। এক সড়কে পুলিশের কঠোর অবস্থান থাকলেও অন্য সড়কে নেই তেমন কোনো তৎপরতা।
বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) রাজধানীর, শনির আখড়া, কাজলা, যাত্রাবাড়ি, ধোলাইপাড় ও সায়দাবাদ ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
শনির আখড়া ও কাজলা থেকে যাত্রাবাড়িগামী সব গাড়িকেই থামিয়ে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। যৌক্তিক কারণ থাকলে কাউকে আটকানো হচ্ছে না। তবে মোটরসাইকেলগামী যাত্রীদের সতর্ক করা হচ্ছে। দুইজন যাত্রী নিয়ে চলাচল করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেখা গেছে।
অন্যদিকে যাত্রাবাড়ি সড়কে একেবারেই ভিন্ন চিত্র। এই সড়কে চলাচল করা প্রাইভেটকার, সিএনজিকে কোনো জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়তে হচ্ছে না। ফলে এই সড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে প্রাইভেটকার-সিএনজি। তবে ধোলাইপাড়ে কঠোরতা থাকলেও সায়দাবাদে নেই তেমন কঠোরতা।
সড়কে গাড়ি বা সিএনজি নিয়ে বের হওয়া অধিকাংশ মানুষই মেডিকেলের কারণ দেখাচ্ছেন। সত্যতা যাচাই করে সহজে ছাড়াও পাচ্ছেন তারা। কেউ কেউ মিথ্যার আশ্রয় নেয়ার চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তাদের।
বাইকে দুইজন যাত্রী চলাচল নিষেধ থাকলেও চলাচল করছেন অনেকে। এমনই একজন কুয়েত প্রবাসী আব্দুল হান্নান। পুলিশের কাছে তিনি জানিয়েছেন ভ্যাকসিন নেয়ার জন্য তিনি ঢাকা মেডিকেল যাচ্ছেন। পরে তার কাছে কাগজ চাইলে তিনি বলছেন টিকার স্লিপ নিতেই তিনি যাচ্ছেন।
আব্দুল হান্নান জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি কুয়েত প্রবাসী, জানুয়ারিতে ঢাকায় এসেছি। আমার ভিসার মেয়াদ আছে, প্রবাসীদের সরকার ভ্যাকসিন দিচ্ছে। তাই আমি ঢাকা মেডিকেল যাচ্ছি, টিকার বিষয়ে জানতে আর স্লিপ নিতে। এই কারণেই বের হয়েছি।’
দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা রাব্বি জানান, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা আমাদের দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করছি। কেউ যৌক্তিক কারণে বের হলে আমরা যেতে দিচ্ছি। তবে কারণ ছাড়া তেমন কেউ বের হচ্ছেন না। আমরা গাড়িগুলো থামিয়ে যাচাই-বাছাই করছি।
শামসুল আলম নামের একজন ব্যবসায়ী জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার ছোট হোটেল ব্যবসা, আমি যাবে গুলিস্তান। কিন্তু রিকশার ভাড়া অনেক বেশি। তাই হেঁটে কুতুবখালী থেকে যাত্রাবাড়ি আসলাম। অথচ প্রাইভেটকার, সিএনজি কিন্তু রাস্তায় চলছে। এভাবে হলে তো আমাদের মতো ছোট ব্যবসায়ী বা সাধারণ মানুষদের সমস্যা। নিয়ম করলে তো কঠোর করা উচিত, কারো জন্য কঠোর কারো জন্য সহজ করা ঠিক না।’
কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে গতকাল বুধবার (৩০ জুন) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। করোনাভাইরাস সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় ২১টি শর্ত যুক্ত করে এই বিধিনিষেধ আরোপের হয়েছে বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়।
আইএইচআর/এমআরএম/এএসএম