বাসে ডাকাতির কবলে চিকিৎসক, ডাকাত দলের সদস্যরা গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৩৪ পিএম, ৩০ জানুয়ারি ২০২২

গত ২০ জানুয়ারি রাতে রাজধানীতে ডাকাত দলের কবলে পড়েন শফিকুল ইসলাম সজীব নামের এক চিকিৎসক। তিনি প্রাণে বেঁচে ফিরলেও চোখ বেঁধে রাতভর তাকে বেদম পেটান ডাকাত দলের সদস্যরা। এ ঘটনায় জড়িত ডাকাতদের গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন (ডিএমপি) পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। তবে প্রাথমিকভাবে গ্রেফতার ডাকাতদের নাম-পরিচয় জানায়নি পুলিশ।

রোববার (৩০ জানুয়ারি) রাতে বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন।

তিনি বলেন, ওই ভুক্তভোগী চিকিৎসককে চোখ বেঁধে রাতভর বেদম পেটান ডাকাত দলের সদস্যরা। ওই ডাকাতদের গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি অন্য এক আন্তঃজেলা ডাকাত দলের মূলহোতাসহ পুরো ডাকাতচক্রকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে আগামীকাল সোমবার (৩১ জানুয়ারি) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

গত ২০ জানুয়ারি বন্ধুর সঙ্গে ঢাকা থেকে কর্মস্থল টাঙ্গাইলে রওনা হন ডা. শফিকুল ইসলাম। রাত সাড়ে ১২টার দিকে আব্দুল্লাহপুর থেকে ওঠেন ঢাকা-রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটের একটি বাসে। মিনিট ১৫ পর তারা বুঝতে পারেন যাত্রীবেশী থাকা বাসের অধিকাংশই ডাকাত।

রাতভর রাজধানীর আশপাশের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে যাত্রী তোলে বাসটি। মারধর করে তাদের কাছ থেকে সবকিছু ছিনিয়ে নেয় যাত্রীবেশী ডাকাতরা। পরে ভুক্তভোগীদের নামিয়ে দেওয়া হয় অজ্ঞাত স্থানে।

ভুক্তভোগী চিকিৎসক ডা. শফিকুল ইসলাম সজীব জানান, গত শুক্রবার সকালে মাতুয়াইলে রাস্তার পাশে বাসটি ফেলে পালিয়ে যায় ডাকাতরা। সেখান থেকে প্রথমে যাত্রাবাড়ী থানায়, পরে ঢাকার অন্য প্রান্ত উত্তরা পশ্চিম থানায় অভিযোগ জানাতে যান তিনি। কিন্তু আব্দুল্লাপুর থেকে বাসে ওঠায় এবং যাত্রাবাড়ীতে বাস থেমেছে এমন অজুহাতে মামলা নেয়নি পুলিশ।

এ নিয়ে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে ক্ষোভ আর কষ্টের কথাও জানান সরকারি হাসপাতালের এই চিকিৎসক।

গত বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) পুলিশ সপ্তাহে কর্মকর্তাদের সঙ্গে অভ্যন্তরীণ সভায় এ বিষয়ে প্রশ্ন রাখেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। এসময় দ্রুত মামলা নেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।

পুলিশ সপ্তাহের একটি সম্মেলনে অংশগ্রহণ করা পুলিশ সুপার পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা জাগো নিউজকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, আইজিপি স্যার সম্মেলনে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে জানতে চান, টাঙ্গাইলের ২৫০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসকের মামলা নেওয়া হলো না কেন। কর্মকর্তাদের কাছে এ নিয়ে ব্যাখ্যাও জানতে চান তিনি।

এ সময় ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার ও ঢাকা মেট্রোপলিটন (ডিএমপি) পুলিশের কর্মকর্তারা এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন।

ভুক্তভোগী চিকিৎসক ডা. শফিকুল ইসলাম সজীব ২৭ জানুয়ারি জাগো নিউজকে জানান, যাত্রাবাড়ী থানা ও উত্তরা পশ্চিম থানা থেকে পুলিশ কর্মকর্তারা ফোন দিয়েছিলেন মামলা করার জন্য। তবে ডাকাতির ঘটনার পর আমি মানসিকভাবে ট্রমার মধ্যে রয়েছি। আমি স্বাভাবিক হলে মামলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবো।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গত বৃহস্পতিবার ডিএমপির উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. মোর্শেদ আলম জাগো নিউজকে বলেন, মামলা নেওয়ার জন্য আমাদের নির্দেশনা আছে। আমি ভুক্তভোগী চিকিৎসককে বার বার ফোন দিচ্ছি, কিন্তু এখন পর্যন্ত তিনি আসেননি। গতকালও তার সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে। তিনি বলেছেন আসবেন কিন্তু আসেননি। তিনি এলে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা নেওয়া হবে।

টিটি/কেএসআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।