পাড়া-মহল্লায় খেলাধুলার সুযোগ রাখতে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ দরকার: আইপিডি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:২১ পিএম, ২৫ এপ্রিল ২০২২

রাজধানীর কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠ নিয়ে সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে পাড়া-মহল্লায় শিশু-কিশোরদের খেলাধুলার সুযোগ করে দিতে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের তাগিদ দিয়েছে ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি)।

সোমবার (২৫ এপ্রিল) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আইপিডি জানায়, তেঁতুলতলা মাঠ রক্ষার আন্দোলনকর্মী সৈয়দা রত্না ও তার ছেলেকে পুলিশের আটক ও পরবর্তী সময়ে মুচলেকা দিয়ে মুক্তি পাওয়ার ঘটনাসমূহ অনাকাঙ্ক্ষিত, অনভিপ্রেত ও নিন্দনীয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এ মাঠ রক্ষার জন্য স্থানীয় এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের আন্দোলনকে আন্তরিকভাবে আমলে নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সিটি করপোরেশনের মেয়রসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে সমাধানের আন্তরিক উদ্যোগ থাকলে এসব অনভিপ্রেত ঘটনা এড়ানো যেতো।

তেঁতুলতলা মাঠে থানা ভবন না করে অন্য বিকল্প কোনো জায়গা খুঁজে বের করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বানকে স্বাগত জানায় আইপিডি।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিশু-কিশোরদের শারীরিক-মানসিক বিকাশের জন্য খেলাধুলার গুরুত্বের কথা আমরা সবসময়ই বলি। ঢাকা শহরে দিন দিন শিশু-কিশোরদের বিনোদন এবং খেলাধুলার স্থান সংকুচিত হচ্ছে। হাতে গোনা যে কয়টি উন্মুক্ত স্থান অবশিষ্ট আছে, সেগুলোর অধিকাংশই দখল বা নানা কারণে খেলার মাঠ হিসেবে আর উপযোগী নেই। তেঁতুলতলা মাঠটি কলাবাগানের শিশুদের খেলাধুলার একমাত্র স্থান।

আইপিডি জানায়, আদর্শগতভাবে নগর পরিকল্পনায় দুই থেকে তিন হাজার মানুষের জন্য ন্যূনতম একটা খেলার মাঠ তৈরি করতে হয়, যার আয়তন ন্যূনতম এক একর (তিন বিঘা) হওয়ার কথা। আমাদের ঢাকা শহরের বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনার মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি পাড়া-মহল্লায় প্রতি ১২ হাজার ৫০০ মানুষের জন্য দুই থেকে তিনটি খেলার মাঠ থাকা উচিত, যার মোট আয়তন হওয়ার কথা তিন একর।

আইপিডি আরও জানায়, তেঁতুলতলা মাঠের আয়তন এক বিঘার মত, ফলে এ স্থানটিও পরিকল্পনার মানদণ্ড অনুযায়ী শিশু-কিশোরদের খেলাধুলার জন্য পর্যাপ্ত নয়। মাঠ রক্ষার আন্দোলন নিয়ে স্থানীয় জনগণ ও আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর মুখোমুখি অবস্থান রাষ্ট্রের জন্য যেমন কল্যাণকর নয়, তেমনই কোমলমতি শিশু-কিশোরদের মানসিক বিকাশ ও রাষ্ট্রের প্রতি আন্তরিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলার পক্ষেও অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে।

আইপিডি মনে করে, নগর এলাকাসমূহ গড়ে তোলার পরিকল্পনা ও নগরসমূহ বেড়ে উঠার ক্ষেত্রে উন্নয়ন ব্যবস্থাপনার মৌলিক দিকসমূহে দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। বিদ্যালয়-পার্ক-খেলার মাঠ-থানা প্রভৃতি মৌলিক নাগরিক সেবাসমূহের জন্য ভূমি নির্ধারণ ও সংরক্ষণ ব্যতিরেকে নগর এলাকায় যত্রতত্র বাড়িঘর নির্মাণ ও নিয়ন্ত্রণহীন জনসংখ্যা ও জনঘনত্ব বাড়তে দিয়ে বিশাল সংখ্যক জনমানুষ বসবাসের ক্ষেত্রে এক চরমতর সংকটে পতিত হচ্ছে। পাশাপাশি রাষ্ট্র ও মৌলিক নাগরিক সুবিধা সংস্থান করতে গিয়ে নানাবিধ সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ ধরনের অতি জনঘনত্বপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারী শিশু-কিশোর-বৃদ্ধসহ সব বয়সের মানুষের হাঁটা, খেলা ও বিনোদনের জায়গার অভাবে তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যহানি ও অপরাধপ্রবণতার জন্ম দিচ্ছে।

এলাকাভিত্তিক খেলার মাঠ-পার্ক-বিদ্যালয়সহ প্রয়োজনীয় নাগরিক সুবিধাসমূহ তৈরির জন্য যথাযথ পরিকল্পনা ও রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ এখনই দরকার বলে মনে করে আইপিডি।

এমএমএ/এমকেআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।