তিন বছর ধরে বন্ধ শাহবাগ শিশু পার্ক, সংস্কার কাজই শুরু হয়নি

মুসা আহমেদ
মুসা আহমেদ মুসা আহমেদ
প্রকাশিত: ০৫:৪২ পিএম, ০২ মে ২০২২
পার্ক চালু করতে আরও তিন বছর সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা-ছবি জাগো নিউজ

আধুনিকায়নের নামে তিন বছরের বেশি সময় ধরে রাজধানীর শাহবাগ শিশু পার্ক বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ। এতে বিনোদনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিশু–কিশোররা। এখন ঈদের ছুটিতেও পার্কটি ব্যবহারের সুযোগ পাবে না তারা। অথচ সরকারিভাবে চালু হওয়া এটিই দেশের প্রথম শিশু পার্ক।

শাহবাগ শিশু পার্কের (সাবেক শহীদ জিয়া শিশু পার্ক) জায়গার মালিক গণপূর্ত অধিদপ্তর। পার্কটি পরিচালনার দায়িত্ব ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি)। তবে এখন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্পের আওতায় পার্কটির নিচে আন্ডারগ্রাউন্ড গাড়ি পার্কিংয়ের কাজ করছে গণপূর্ত অধিদপ্তর। তাদের পার্কিং নির্মাণের কাজ শেষ হতে সময় লাগবে আরও দুই বছর। এরপর পৃথক প্রকল্পের মাধ্যমে পার্কে রাইড স্থাপন করবে ডিএসসিসির যান্ত্রিক বিভাগ। সবমিলে এ পার্ক চালু করতে আরও তিন বছর সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

তবে নগর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি শিশু পার্ক আধুনিকায়ন বা আধুনিক রাইড স্থাপনের নামে অর্ধযুগ পার করে দেবে, এটা গ্রহণযোগ্য নয়। এ সময়ে একটি প্রজন্ম শিশু পার্কের বিনোদন থেকে বঞ্চিত হবে। এতে তাদের শারীরিক-মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে। এর দায় সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও মন্ত্রণালয়কে নিতে হবে।

এদিকে পার্কটি চালু আছে বা পার্কের সংস্কার কাজ শেষ হয়েছে মনে করে প্রতিদিন সকাল-বিকেলে শিশু-কিশোরদের নিয়ে শাহবাগে যাচ্ছেন অভিভাবকেরা। বিশেষ করে শুক্র-শনিবার সরকারি ছুটির দিনে পার্কে যান অনেকেই। কিন্তু পার্কটি চালু না হওয়ায় আক্ষেপ নিয়েই ফিরে যাচ্ছেন তারা।

শিশু-কিশোর ও অভিভাবকদের অভিযোগ, শিশু-কিশোরদের মানসিক বিকাশ লাভে শিশু পার্কে আনন্দ বিনোদন একটি জরুরি বিষয়। অথচ পার্কটি সংস্কার বা আধুনিক রাইড স্থাপনের নামে সাড়ে তিন বছর ধরে তালাবদ্ধ করে রেখেছে নগর কর্তৃপক্ষ। এখন বলা হচ্ছে, রাইড স্থাপনে আরও তিন বছর লাগবে। এটি তাদের উদাসীনতা ছাড়া আর কিছুই নয়। অথচ এ অর্ধ যুগে একটি প্রজন্ম শিশু পার্কে খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হবে।

PARK-3.jpg

২০১৯ সালের জানুয়ারিতে পার্কের সামনে একটি বিজ্ঞপ্তি টাঙিয়ে এটি বন্ধ ঘোষণা করেছিল ডিএসসিসি। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতাস্তম্ভ নির্মাণ (৩য় পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় শিশু পার্কের উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের কাজ মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন থাকায় অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এড়ানোর লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় শিশু পার্ক সর্বসাধারণের জন্য বন্ধ থাকবে।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওই প্রকল্পের কার্যাদেশ অনুযায়ী স্বাধীনতাস্তম্ভ নির্মাণ (৩য় পর্যায়) প্রকল্পটি ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে শুরু হয়ে ২০১৯ সালের মধ্যেই শেষ হওয়ার কথা ছিল। একই সময়ের মধ্যে শিশুপার্কের নিচে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আগতদের গাড়ি পার্কিং ও কিছু অবকাঠামো সংস্কারকাজ শেষে এটি খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু বরাদ্দ নিয়ে জটিলতার কারণে এখন পর্যন্ত পার্কের কাজ শুরুই হয়নি। অন্যদিকে স্বাধীনতাস্তম্ভ নির্মাণ (৩য় পর্যায়) প্রকল্পের মেয়াদ কয়েক দফা বাড়িয়ে ২০২২ সালের জুন মাস পর্যন্ত করা হয়েছে। কিন্তু এখন আরও প্রায় ৪০ শতাংশ কাজ বাকি রয়েছে। বাকি কাজ শেষ করতে ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রকল্প মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

প্রকল্প–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিশুপার্কটির আধুনিক রাইড স্থাপনের কাজটি করবে ডিএসসিসি। এর জন্য স্বাধীনতাস্তম্ভ নির্মাণ (৩য় পর্যায়) প্রকল্পের মূল বরাদ্দ ২৬৫ কোটি টাকা থেকে ৭৮ কোটি টাকা ডিএসসিসি দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু ডিএসসিসি শুরু থেকেই বরাদ্দ নিয়ে আপত্তি জানায়।

PARK-3.jpg

তখন ডিএসসিসির পক্ষ থেকে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে বলা হয়, শিশু পার্কের বিদ্যমান রাইডগুলো ঝুঁকিপূর্ণ, নতুন রাইড বসাতে হবে। রাইড বসানো ও পার্কের উন্নয়নে এ বরাদ্দ অপর্যাপ্ত। এ নিয়ে দীর্ঘদিন চিঠি চালাচালি হয়। দেড় বছর আগে দক্ষিণ সিটিকে নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে শিশু পার্কের আধুনিকায়ন করতে বলে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। পরে ডিএসসিসি প্রায় সাড়ে ৬০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প তৈরি করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে।

সংস্থার প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন, ডিএসসিসির এ প্রকল্প এখনও অনুমোদন হয়নি। এর মধ্যে যদি অনুমোদন হয়, তাহলে আগামী তিন বছরের মধ্যে পার্কটি চালু করার লক্ষ্য নিয়ে তারা কাজ করবেন। সেই হিসেবে ২০২৫ সালের আগে শিশুপার্কটি চালু হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।

ডিএসসিসির যান্ত্রিক বিভাগের তথ্য মতে, ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের উদ্যোগে শাহবাগে ১৫ একর জায়গার ওপর শহীদ জিয়া শিশু পার্ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮৩ সাল থেকে শিশুদের বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে যাত্রা শুরু করে। তখন থেকে পার্কটি তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব পালন করছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। পার্কটিতে একটি খেলনা ট্রেন, একটি গোলাকার মেরি গো রাউন্ড রাইড ও একাধিক হুইলসহ ১২টি রাইড ছিল। ১৯৯২ সালে এ পার্কে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর পক্ষ থেকে সৌজন্য হিসেবে একটি জেট বিমান দেওয়া হয়েছিল।

গত শনিবার (৩০ এপ্রিল) সরেজমিনে দেখা যায়, আগে শিশু পার্কটি যে জায়গায় ছিল, তার বেশির ভাগ অংশেই স্বাধীনতাস্তম্ভ নির্মাণ (৩য় পর্যায়) প্রকল্পের আওতায় ভূগর্ভস্থ গাড়ি পার্কিংয়ের কাজ চলছে। আন্ডারগ্রাউন্ড এ পার্কিংয়ের ছাদ মাটি থেকে প্রায় চার ফুট উঁচু। এর মধ্যে কোন মডেলে পার্কিং হবে বা শিশু পার্কের নকশা কেমন হবে তার কোনো তথ্য বা থ্রিডি ছবি টানানো নেই। শুধু ফটকে ছোট্ট একটা টিনে লেখা ‘সাবধান পার্কের উন্নয়নের কাজ চলিতেছে।‘

সাংবাদিক পরিচয়ে ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, শিশু পার্কের ভেতরে যে রাইডগুলো ছিল এখন তার অধিকাংশ রাইডের অস্তিত্ব নেই। চরকি জাতীয় পৃথক দুটি রাইড আট ফুট উঁচু টিন দিয়ে ঘেরা। পার্কের পশ্চিম পাশে ঝোপঝাঁড়ে ফেলে রাখা হয়েছে বিমানবাহিনীর উপহার দেওয়া সেই জেট বিমান। বিমানের উপর ধুলাবালিসহ লতাপাতা ছড়িয়ে রয়েছে।

শিশু পার্কটিতে কোনো শ্রমিককে কাজ করতে দেখা যায়নি। আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিংয়ে পানি জমে মশার লার্ভা ছড়াতে দেখা গেছে।

PARK-3.jpg

শনিবার (৩০ এপ্রিল) বিকেলে ছেলে নিলয় ইসলামকে নিয়ে শাহবাগ এলাকায় ঘুরতে যান এলিফ্যান্ট রোডের স্থানীয় বাসিন্দা ইফতেখার উদ্দিন। তিনি চট্টগ্রামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। ঈদের ছুটিতে ঢাকায় এসেছেন। তাই দীর্ঘদিন পর বাপ-ছেলে ঘুরতে বেরিয়েছেন। বিকেল চারটার দিকে শাহবাগ শিশু পার্কের সামনে আসেন তারা। কিন্তু পার্কের সামনে তালা দেখে ফিরে যান।

যাওয়ার আগে জাগো নিউজের সঙ্গে কথা বলেন ইফতেখার উদ্দিন। তিনি বলেন, দুই বছর আগে দেখেছি এ শিশু পার্ক সংস্কারের কাজ চলছে। ভেবেছিলাম এখন শিশু পার্কের কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু এসে দেখি আগের অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। প্রধান ফটকে তালা লাগানো। অথচ সামনে ঈদ। ঈদের ছুটিতে শিশু-কিশোরদের বেড়ানোর জন্য ঢাকায় কোনো জায়গা নেই।

ইফতেখার উদ্দিনের সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল পাশে দাঁড়িয়েছিলেন শাহবাগের ফুল বিক্রেতা সোবহান মোল্লা। তিনি বলেন, এ শিশু পার্কে মাত্র ১০ টাকা হারে ৬টি রাইড ব্যবহার করতে পারতো শিশুরা। ঢাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিন হাজারো শিশু-কিশোর আসতো। আর ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার মতো আনন্দঘন সময়ে কয়েকগুণ শিশু-কিশোর বেড়ে যেত। তিন বছর ধরে পার্কটি বন্ধ থাকায় এখন শিশু-কিশোরদের সেই কোলাহল নেই।

ডিএসসিসি যান্ত্রিক বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আনিছুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, এক বছর আগে ওই প্রকল্প স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে প্রকল্পটি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে গেছে। কিন্তু একনেকে অনুমোদনের জন্য তা উপস্থাপন হয়নি। কিছু কাজ বাকি আছে। আগামী জুনের মধ্যে প্রকল্প অনুমোদনের পর অর্থ ছাড় হলে দরপত্র আহ্বান প্রক্রিয়া ও পার্কের অবকাঠামো উন্নয়নকাজ শুরু হবে।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রকল্প বাস্তবায়নে পরিকল্পনাতেই বড় গলদ ছিল। এ জন্য ঢাকার শিশু–কিশোরদের একমাত্র বিনোদনকেন্দ্রের আজ এ অবস্থা হয়েছে। পার্কটি বন্ধ করার আগেই ঠিক করা দরকার ছিল যে কবে নাগাদ চালু করা যেতে পারে। ঢাকায় জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত কাজ শেষ করা উচিত।

এ প্রকল্পের পরিচালক মো. হাবিবুল ইসলাম। তিনি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব হিসেবে আছেন। গত ২৯ এপ্রিল থেকে ২ মে (সোমবার) পর্যন্ত মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। প্রতিবেদকের নাম-পরিচয় জানিয়ে মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি কোনো উত্তর দেননি।

শহীদ জিয়া শিশু পার্ক এখন ‘হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী শিশু পার্ক’: ২০২১ সালের ৩০ ডিসেম্বর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) দ্বিতীয় পরিষদের ১১তম বোর্ড সভায় শহীদ জিয়া শিশু পার্কের নাম ‘হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী শিশু পার্ক’ নামকরণ করা হয়েছে। এর আগে গত ২২ ডিসেম্বর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকার সড়ক, ভবন ও স্থাপনা নামকরণ সংক্রান্ত উপ-কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সভার সুপারিশের আলোকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কেন্দ্রীয় শিশু পার্কটির নাম ‘হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী শিশু পার্ক’ নামে নামকরণের প্রস্তাব করা হলে তা সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন পায়। বোর্ডসভায় ডিএসসিসি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস সভাপতিত্ব করেছিলেন।

এমএমএ/এমআইএইচ/এসএইচএস/এমএস

শিশু পার্কটির আধুনিক রাইড স্থাপনের কাজটি করবে ডিএসসিসি। এর জন্য স্বাধীনতাস্তম্ভ নির্মাণ (৩য় পর্যায়) প্রকল্পের মূল বরাদ্দ ২৬৫ কোটি টাকা থেকে ৭৮ কোটি টাকা ডিএসসিসি দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু ডিএসসিসি শুরু থেকেই বরাদ্দ নিয়ে আপত্তি জানায়।

পার্কের ভেতরে যে রাইডগুলো ছিল এখন তার অধিকাংশ রাইডের অস্তিত্ব নেই। চরকি জাতীয় পৃথক দুটি রাইড আট ফুট উঁচু টিন দিয়ে ঘেরা। পার্কের পশ্চিম পাশে ঝোপঝাঁড়ে ফেলে রাখা হয়েছে বিমানবাহিনীর উপহার দেওয়া সেই জেট বিমান। আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিংয়ে পানি জমে মশার লার্ভা ছড়াতে দেখা গেছে।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।