রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের উল্টো কাজ করছে সরকার


প্রকাশিত: ১১:৪৪ এএম, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

সরকার রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের সম্পূর্ণ উল্টো কাজই করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। বুধবার বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
 
রিজভী আহমেদ বলেন, কয়েকদিন আগে ডেইলি স্টারের ২৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে মহামান্য রাষ্ট্রপতি গনমাধ্যমকে “সাহস করে সাদাকে সাদা এবং কালোকে কালো বলার” পরামর্শ দেন।
 
তিনি গণতন্ত্রের জন্য মুক্ত গণমাধ্যমের অপরিহার্যতার কথা উল্লেখ করে বলেন, “সংবাদপত্রের বিরুদ্ধে আক্রমণ গণতন্ত্রের জন্য হুমকি”। কিন্তু বাস্তবে আমরা কী দেখতে পাচ্ছি ? সরকার রাষ্ট্রপতির এ বক্তব্যের উল্টো কাজ করছে।

তিনি বলেন, আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান আজ দীর্ঘদিন ধরে কারারুদ্ধ রয়েছেন। প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে তিনি আজ সরকারের সীমাহীন জুলুমের শিকার। উচ্চ আদালত থেকে তার সবগুলো মামলার জামিন হয়েছে এবং কোর্ট থেকে বেইলবন্ড বা জামিননামাও যথারীতি কারাগারে পৌঁছেছে। কিন্তু তাকে মুক্তি দেয়া হচ্ছে না।

তার সর্বশেষ মামলার জামিননামা গত বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬) সন্ধ্যায় কাশিমপুর কারাগারে পৌঁছে। নিয়ম অনুযায়ী পরদিন শুক্রবার সকালেই তাকে ছেড়ে দেয়ার কথা। কিন্তু সরকার একটি মানহানির মামলায় পিডব্লিউ বা প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট প্রত্যাহার না করার অজুহাত দেখিয়ে তাকে সম্পূর্ণ অন্যায় এবং অবৈধভাবে আটকে রেখেছে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা আইসিটি মামলায় হাইকোর্টের দেয়া জামিন বাতিলের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এ মামলার জামিনের বিরুদ্ধে সরকারের এটর্নি জেনারেল এর অফিস মহামান্য সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে স্থগিতাদেশ চেয়েছে। গতকাল চেম্বার জজ আদালত মামলাটি না শুনে বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের ফুল বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন।
 
রিজভী বলেন, আমরা আশংকা করছি, মাহমুদুর রহমান যাতে জেল থেকে বের হতে না পারেন সেজন্য সরকার নানা অপচেষ্টা চালাচ্ছে এবং তাকে আরও মিথ্যা, হয়রানিমূলক মামলায় জড়ানোর পাঁয়তারা করছে। আমরা কালক্ষেপণ না করে অবিলম্বে মাহমুদুর রহমানের মুক্তি দাবি করছি।
 
তিনি আরো বলেন, বিডিআর হত্যাকাণ্ড, বিচারপতির স্কাইপ কেলেঙ্কারি, শেয়ার মার্কেট কেলেঙ্কারি, পদ্মা সেতু-হলমার্ক-বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারি নিয়ে তার পত্রিকায় অনুসন্ধানী রিপোর্ট ছাপা হয়েছে। সরকার তার প্রতি বিরাগভাজন হওয়ার এটাই কারণ। এ জন্যই সরকার মাহমুদুর রহমানকে সহ্য করতে না পেরে অন্যায়ভাবে, আইন কানুনের কোনো তোয়াক্কা না করে ২০১৩ সালের ১১ এপ্রিল অত্যন্ত বর্বর কায়দায় গ্রেফতার করে। এরপর ১৯দিন রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন চালায়। তার বিরুদ্ধে একের পর এক ৭০টি মামলা দেয়া হয়।

আমরা এই মূহুর্তে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার, মির্জা আব্বাস, শওকত মাহমুদ, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী এবং মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে তাঁদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন আলম, যুব বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সাংবাদিক সৈয়দ আবদাল আহমেদ প্রমুখ।

এমএম/এসকেডি/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।