ধর্ষিতাকে মামলা তুলে নিতে হুমকির অভিযোগ
চট্টগ্রামে ধর্ষিতা প্রতিবন্ধী কিশোরীকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে ধর্ষকরা। অভিযোগ উঠেছে- মামলার আসামিদের পক্ষে স্থানীয় কাউন্সিলর প্রতিবন্ধী মেয়ের পরিবারকে এ হুমকি দিচ্ছেন। বুধবার দুপুরে চট্টগ্রম প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ তুলে ধরা হয়।
বেসরকারি সংস্থা ‘নারী যোগাযোগ কেন্দ্রের’ সহায়তায় সংবাদ সম্মেলন আসে নির্যাতিতা প্রতিবন্ধী মেয়েটি।
এ ঘটনায় মামলা হওয়ার পর এক মাস পেরিয়ে গেলেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন কিশোরীর মা।
নারী যোগাযোগ কেন্দ্রের চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সমন্বয়কারী নাদিরা সুলতানা হেলেন জানান, তারা ‘সুবিচার পেতে’ ওই পরিবারকে আইনি সহায়তা দিচ্ছেন।
প্রতিবন্ধী কিশোরীর মায়ের অভিযোগ, পটিয়ার দুই নম্বর ইউনিয়ন পরিষদের কাউন্সিলর রূপক সেন মামলা তুলে নিতে তাদের চাপ দিচ্ছেন।
তিনি বলেন, আমি সুষ্ঠু বিচার চাই। মামলা তুলে নিতে আমাকে সবসময় হুমকি দিচ্ছে। আমাদের পেছনে লোক লাগিয়ে রেখেছে। আমাকে মারধরও করেছে।
কিশোরীর মা সাংবাদিকদের আরো জানান, গত বছরের ২১ জুন ছয়জন যুবক তাদের বাসায় ঢুকে তার ১৭ বছর বয়সী মানসিক প্রতিবন্ধী মেয়েকে ধর্ষণ করে। তার মেয়ে বর্তমানে আট মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা। ঘটনার পরপরই স্থানীয় সালিশে ছয়জন ধর্ষণের বিষয়টি স্বীকার করে আপসের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু আমি তাতে রাজি হইনি। পরে পটিয়া থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। এর পর আমরা গত ৪ জানুয়ারি চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ছয় জনের বিরুদ্ধে মামলা করি।
মামলায় পিয়াল দে (২০), ইমন দে (২০), জনি দে (২৬), সুজন দে (২২), সজীব দে (২২) ও নয়ন দে (২০)- নামের ছয় যুবককে আসামি করা হয়। এদের মধ্যে তিনজন একই এলাকার বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
নির্যাতিতার মা এলাকায় গৃহপরিচারিকার কাজ করেন। কিশোরীর মা বলেন, ঘটনার দিন আমি বাসায় ছিলাম না। বাসায় এসে ঘটনা জানতে পারলেও আমরা অসহায় বিধায় কিছুই করতে পারিনি।
এরপর মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে শহরের একটি হাসপাতালে নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর অন্তঃস্বত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন তার মা।
তিনি বলেন, কাউন্সিলর রূপক সেন বলছে মামলায় কিছুই হবে না। আমার অন্য মেয়ে কলেজে পড়ে। আসামিরা তার কলেজে যাওয়ার সময় অনুসরণ করছে। আমার এক মেয়ের ক্ষতি হয়েছে। এই মেয়ের কিছু হলে কি করব?
এ ব্যাপারে কাউন্সিলর রূপক সেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে পটিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ রেফায়েত উল্লাহ চৌধুরী বলেন, আদালত ঘটনার বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছেন। আমরা প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর আদালত সিদ্ধান্ত দেবেন তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হবে কি না।
জীবন মুছা/এসএইচএস/আরআইপি