বসন্তের আগমনে সজীব ইবি


প্রকাশিত: ০৩:২৪ এএম, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

হে কবি নীরব কেন ফাগুন যে এসেছে ধরায়/ বসন্তে বরিয়া তুমি লবে না কি তব বন্দনায়/ কহিল সে সিগ্ধ আঁখি তুলি/ দখিণ দুয়ার গেছি খুলি?/বাতাবী লেবুর ফুল ফুটেছি কি? ফুটেছে কি আমের মুকুল?/ দখিণা সমীর তার গন্ধে গন্ধে হয়েছে কি অধীর আকুল? কবি বেগম সুফিয়া কামাল তাহারেই পড়ে মনে বিখ্যাত গীতি কবিতায় এভাবেই ফাগুনকে স্মরণ করেছেন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন, ‘আহা আজি এ বসন্তে/ কত ফুল ফোটে/ কত বাঁশি বাজে/ কত পাখি গায়...।’ শুধু কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নয়, বসন্তের দক্ষিণ হাওয়া আজ মানব মনে ও প্রকৃতির সবখানেই বইছে। সবার মনে ভালোবাসার ঝঙ্কার আনবে। এসেছে যে বসন্ত। সব ফুল পাঁপড়ি মেলে, সব পাখি উড়ে যাবে সুদূরে, সব সুর গান হয়ে যাবে বসন্তের আগমনে।

সময়ের ভেলায় চড়ে নিয়মের নৌকা বেয়ে এই জনপদে প্রতিটি দুয়ারে নোঙ্গর করেছে ঋতুরাজ ও তার প্রথম দুহিতা ফাল্গুন মাস। শীতের শেষে প্রকৃতির নিয়মে ঋতুরাজ বসন্তের আগমন হয়েছে। ঋতুর পালাবদলে বৈচিত্র্যময় এই দেশে ঐশ্বর্যশীল বসন্ত আসে অনুপম নৈসর্গিক সুষমা নিয়ে। আবারও আগমন ঘটেছে চিরনবীন ও চিরসবুজের প্রতীক ঋতুটির। ‘ফাল্গুনী’ তারার নামে ফাল্গুন মাস আর ‘চিত্রা’ তারার নামের সঙ্গে মিল রেখে রাখা হয়েছে চৈত্র মাসের নাম। ফাল্গুন আর চৈত্র মাস মিলে ষড়ঋতুর বাংলার সর্বশেষ ঋতুরাজ বসন্ত। শীতের প্রকোপে ঝিমিয়ে পড়া প্রকৃতি বসন্তের আগমনে সাজে নতুন সাজে। শীতের রুক্ষতা মুছে প্রকৃতি হয়ে ওঠে সজীব-কোমল। শীতের প্রচণ্ডতায় পাতা ঝরা গাছগুলো কঙ্কাল মূর্তি থেকে মুক্তি পেয়ে কচি পাতার সমাহারে ফিরে পায় নতুন জীবন। গাছে গাছে ফুটে থাকে নাম জানা অজানা হাজারো ফুল।

প্রকৃতির কাছে কবি বেগম সুফিয়া কামালের প্রশ্ন ছিল বাতাবী লেবুর ফুল ফুটেছে কি? ফুটেছে কি আমের মুকুল?

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় আজ সদ্য ফোটা আমের মুকুলের ঘ্রাণে অধীর। ক্যাম্পাসের আড়াই শতাধিক গাছে ফুটেছে আমের মুকুল। সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে আম্র মুকুলের পাগল করা ঘ্রাণ।  বাতাবী লেবুর ফুলও ফুটেছে ক্যাম্পাসের গাছে গাছে। শীতের রুক্ষতায় সবুজ ক্যাম্পাসের গাছগুলো কঙ্কালের মত দাঁড়িয়ে ছিল বহুদিন। বসন্তের আগমনে গাছে গাছে নতুন কচি পাতা বের হওয়ায় গাছগুলো মুক্তি পেয়েছে তার মরণ দশা থেকে।

ইতোমধ্যেই শীতের প্রকোপ কমে গিয়ে বইতে শুরু করেছে দক্ষিণা বাতাস। মাঝে মধ্যেই কানে ভেসে আসে কোকিলের ডাক।

ফাল্গুনের শুরুতে দক্ষিণা বাতাস বইতে শুরু করেছে। তাদের মনেও লেগেছে সেই হৃদয় জুড়ানো বাতাস। তারা আবারও মেতেছে আড্ডা আর গানে। ক্যাম্পাস ফিরে পেয়েছে তার সেই চিরচেনা রূপ।

এসএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।