শরীয়তপুরে ধনিয়া চাষে বাম্পার ফলন
শরীয়তপুরে ধনিয়া চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকদের চোখে মুখে হাসির ঝিলিক ফুটে উঠেছে। গত বছর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া এবং অতিবৃষ্টির কারণে কৃষকরা ধনিয়া চাষে ক্ষতির সম্মুখীন হলেও এবছর ভালো ফলন হওয়ায় গত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছেন।
শরীয়তপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, এ বছর ৫ হাজার ৩৬৫ হেক্টর জমি ধনিয়া চাষের জন্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল কিন্তু ১ হাজার ১৯৫ হেক্টর বেশি অর্জিত হয়েছে। শরীয়তপুর জেলার ছয়টি উপজেলায়ই কম-বেশি ধনিয়া চাষ হয়।
এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৬৬২ হেক্টর, নড়িয়া উপজেলায় ৬৪৪ হেক্টর, জাজিরা উপজেলায় ৩০০৫ হেক্টর, ভেদরগঞ্জ উপজেলায় ২০৬৭ হেক্টর, ডামুড্যা উপজেলায় ৭১ হেক্টর এবং গোসাইরহাট উপজেলায় ১১১ হেক্টর জমিতে ধনিয়া চাষ করা হয়।
জাজিরা উপজেলার ঠাকুরকান্দি গ্রামের ধনিয়া চাষী সিরাজুল ইসলাম বলেন, এ বছর ধনিয়ার ফলন ভালো হয়েছে। আমাদের উৎপাদিত ধনিয়া বিদেশেও রফতানি হচ্ছে। কিন্তু আমরা প্রকৃত দাম পাচ্ছি না।
আরেক ধনিয়া চাষী লিয়াকত খলিফা বলেন, গত বছর ধনিয়া চাষ করে অনেক লোকসান হয়েছে। অতিবৃষ্টির কারণে অনেক ধনিয়া নষ্ট হয়ে গেছে। এ বছর ধনিয়ার ফলন ভালো হয়েছে।
সদর উপজেলার তুলাসার ইউনিয়নের বাইশরশি গ্রামের ধনিয়া চাষী ইদ্রিস মাদবর বলেন, এ বছর আমি এক কানি জমিতে ধনিয়া চাষ করেছি। গত বছর ধনিয়া চাষ করতে গিয়ে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে অনেক লোকসান হয়েছে। এ বছর ধনিয়ার ফলন ভালো হয়েছে। আশা করছি গত বছরের লোকসান এ বছর পুষিয়ে নিতে পারবো।
একই গ্রামের ধনিয়া চাষী বাবুল চৌকিদার বলেন, ধনিয়া চাষ করতে আমাদের অনেক খরচ হয়। এক একর জমিতে ধনিয়া চাষ করতে ৩০ হাজার টাকার উপরে খরচ হয়ে যায়। অথচ সরকারের কাছ হতে আমরা কোনো সুযোগ সুবিধাই পাই না।
ভেদরগঞ্জ উপজেলার ধনিয়া চাষী মান্নান হাওলাদার বলেন, এবার আমাদের ধনিয়া ভালো হয়েছে। আশা করছি এবার বাজার মূল্য অনেক ভালো পাবো।
নড়িয়া উপজেলার ধনিয়া চাষী জুয়েল চৌকিদার বলেন, আমরা গরিব কৃষক। ধনিয়া চাষ করতে আমাদের অনেক খরচ হয়। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ধনিয়া ভালো হয়েছে। এবার খরচ পুশিয়ে নিতে পারবো এবং লাভও হবে।
এ ব্যাপারে শরীয়তপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. কবির হোসেন বলেন, এ বছর ধনিয়ার আবাদ ভালো হয়েছে। আমরা যে পরিমাণ ধনিয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিলাম তার চাইতেও বেশি ফলন হয়েছে। আশা করছি গত বছরের ক্ষতি এ বছর কৃষকেরা পুষিয়ে নিতে পারবেন।
মো. ছগির হোসেন/বিএ