লালমনিরহাটে লোভনীয় আশ্বাসে বাড়ছে তামাক চাষ


প্রকাশিত: ০৫:০৮ এএম, ০৪ মার্চ ২০১৬

সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাট জুড়ে বাড়ছে তামাক চাষ। কৃষি বিভাগ তামাক চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করলেও কোম্পানির লোভনীয় আশ্বাসে তামাক চাষের দিকেই ঝুঁকে পড়ছেন তারা। বিনা সুদে ঋণ, বিনামূল্যে বীজ, সার ও নগদ অর্থসহ প্রদানের নিশ্চয়তার লোভেই দিন দিন তামাক চাষের দিকে ঝুঁকে পড়ছেন এ অঞ্চলের চাষিরা।
 
লালমনিরহাট কৃষি সসম্প্রসারণ অধিদফতর জানিয়েছে, ২০১৪ সালে লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলায় তামাক চাষ হয়েছিল ১১ হাজার ৩৮৫ হেক্টর জমিতে। যা বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৫ সালে চাষ হয়েছিল ১১ হাজার ৪১০ হেক্টর জমিতে। ২০১৬ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত চাষ হয়েছে ১১ হাজার ৭০ হেক্টর জমি। যা চলমান রয়েছে।  

তবে কৃষকরা দাবি করছেন চলতি বছর এ জেলায় দ্বিগুণ পরিমাণে অর্থাৎ ২২ হাজার হেক্টরেরও বেশি জমিতে তামাক চাষ হয়েছে।

লালমনিরহাটের পাঁচটি উপজেলায় মাঠের পর মাঠ এখন চোখে পড়ে শুধু তামাকের ক্ষেত। কৃষকরা দিন দিন ধান, গম, সরিষা, ভুট্টা, আলু, বেগুন, লাউ, শিম, মুলা ও কফিসহ বিভিন্ন ধরনের সবজির দাম কম পাওয়া চাষবাদ হারিয়ে ফেলছেন।

কৃষকরা জানান, ফসল চাষের সময় কৃষকরা অর্থ সঙ্কটে ভোগেন আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তামাক কোম্পানিগুলো চাষিদের মাঝে কার্ড দিয়ে বীজ বিনামূল্যে সরবরাহ করেন। সেই সঙ্গে কোনো শর্ত ছাড়াই ঋণে সার ও নগদ অর্থ প্রদান করেন।

দেখা গেছে, তামাক চাষ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর জেনেও অধিক মুনাফা লাভের আশায় পরিবারের শিশুসহ নারীরাও সমানভাবে কাজ করছেন তামাক ক্ষেতে।

tobacco

বিভিন্ন জাতের তামাক মতিয়ার, গোদরা, জাতী, ভারজিন চাষবাদ হয়ে থাকে। তামাকের বাজার মূল্য প্রতিমণ বিক্রি হয় দুই হাজার থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত।
   
কালীগঞ্জ উপজেলার আনারুল হক জাগো নিউজকে জানান, তামাক আবাদের জন্য কোম্পানি অগ্রীম ঋণ, সার ও নগদ টাকা দেয়। এই টাকা দিয়ে তামাক চাষ করি। তামাক বিক্রি করতে কোনো ঝামেলা হয় না। তামাক নিয়ে গিয়ে কোম্পানিকে দিলেই হয়ে যায়।

আদিতমারী উপজেলার তামাক চাষি রবিদাস জাগো নিউজকে বলেন, সরকার যদি কোম্পানির মত বিনা শর্তে ঋণসহ ফসল ক্রয়ের নিশ্চয়তা দেন তবেই তারা তামাক চাষ ছেড়ে দিয়ে অন্যান্য ফসলের চাষ করবেন। এজন্য সরকারের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন তারা।

চাষিদের সুবিধার জন্য কোম্পানিগুলো লালমনিরহাট জেলার বিভিন্ন এলাকায় গড়ে তুলেছেন বড় বড় অনেক ক্রয় কেন্দ্র ও গোডাউন। যেখানে চলে যায় কৃষকদের উৎপাদিত তামাক। কোম্পানিগুলো হলো ঢাকা টোব্যাকো, আবুল খায়ের টোব্যাকো, নাসির টোব্যাকো, আকিজ টোব্যাকো ও বিডিসি টোব্যাকো।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ সাফায়েত হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, তামাক চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করতে কৃষি বিভাগ যথেষ্ট আন্তরিক। কিন্তু চাষিরা অধিক মুনাফার আশায় তামাক চাষে ঝুঁকে পড়েছেন।

রবিউল হাসান/এমজেড/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।