শসার ছবি আঁকায় জঙ্গি নজরদারীতে ৪ বছরের শিশু


প্রকাশিত: ০৩:৫৮ পিএম, ১১ মার্চ ২০১৬

চার বছরের শিশুটি নার্সারি ক্লাশে শসার ছবি এঁকেছিল। কিন্তু ক্লাসের শিক্ষক শিশুটির কথা শুনে এই ছবিকে বোমার ছবি মনে করে পুলিশে খবর দেন। এরপর এ নিয়ে হৈ চৈ শুরু হয়।

ব্রিটেনে জঙ্গীবাদের হুমকি মোকাবেলায় সরকারের গৃহীত কর্মসূচির কারণে কিভাবে চার বছর বয়সী শিশুকে পর্যন্ত হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে, শিক্ষকরা এটিকে তার একটি উদাহারণ হিসেবে উল্লেখ করছেন।

ব্রিটিশ সরকারের এই সন্ত্রাস প্রতিরোধ কর্মসূচীর নাম দেওয়া হয়েছে ‘প্রিভেন্ট’। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি কেউ জঙ্গিবাদের দিকে ঝুঁকছে বলে আলামত পাওয়া যায়, তখন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই বিষয়টি পুলিশ এবং সোশ্যাল সার্ভিসের নজরে আনতে হবে। কিন্তু সরকারের এই কর্মসূচির তীব্র সমালোচনা করছে শিক্ষকদের বিভিন্ন ইউনিয়ন। তারা বলছে, সরকারের এই নজরদারির নীতি বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে সন্দেহ আর অবিশ্বাস সৃষ্টি করছে।

শসার ছবি নিয়ে চার বছর বয়সী শিশুকে সন্দেহের ঘটনাটি ঘটে বেডফোর্ডশায়ারে, লন্ডন থেকে ৭০ কিলোমিটার উত্তরে। ছেলেটির মা বিবিসিকে বলেন, নার্সারিতে তার আঁকা ছবির মধ্যে ছিল ভেঙ্গে পড়া প্রাসাদ দূর্গ, গোলায় উড়ে যাওয়া প্রহরী এবং ছুরি দিয়ে শসা কাটার ছবি।

নার্সারি শিক্ষক ছেলেটির কাছে জানতে চেয়েছিলেন তার আঁকা ছবি সম্পর্কে। ছেলেটি বলেছিল, সে ‘কুকার বম্বের (কিউকাম্বার) ছবি এঁকেছে। আতংকিত নার্সারি শিক্ষক বিষয়টি সরকারের জঙ্গীবাদ নিরোধ কর্মসূচী ‘চ্যানেল’কে জানাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ছেলেটির মা-বাবার তীব্র আপত্তির মুখে তারা নিরস্ত হন।

ছেলেটির মা জানান, তাঁর ছেলে কিউকাম্বারকে বলে কুকারবম্ব। সেটাকেই নার্সারী শিক্ষক বোমা বলে ভুল করেছেন। তারপরও পুলিশ এবং সোশ্যাল ওয়ার্কারদের এক কমিটির কাছে এই বিষয়টি জানানো হয়েছিল। যদিও সেখানে এটির নিষ্পত্তি হয়েছে।

শিক্ষকদের ইউনিয়নগুলো বলছে, সরকার যেহেতু সন্দেহজনক যে কোন কিছু কর্তৃপক্ষের গোচরে আনা বাধ্যতামূলক করেছে, তাই শিক্ষকরা অনেক সময়েই সংশয়ে ভোগেন তাদের কি করা উচিত। ২০১২ সালের জানুয়ারি হতে গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্রিটেনে পনের বছরের কম বয়সী প্রায় দু হাজার শিশু-কিশোরকে এরকম সন্দেহজনক বলে রিপোর্ট করা হয়েছে। শিক্ষকদের ইউনিয়নগুলো এ জন্যে সরকারী নীতি নিয়ে নতুন করে চিন্তা-ভাবনার আহ্বান জানিয়েছে।

এসআইএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।