অভিযোগ আমলে নিচ্ছে না ইসি


প্রকাশিত: ০৬:০৫ এএম, ১২ মার্চ ২০১৬

ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে সারাদেশে সহিংসতা এবং অনিয়ম বাড়লেও তা আমলে নিচ্ছে না নির্বাচন কমিশন (ইসি)। অভিযোগ সুস্পষ্ট নয়-এমন দাবি করে দায় এড়াচ্ছে কমিশন। অথচ এসব অভিযোগের বেশির ভাগের ক্ষেত্রেই কমিশন তদন্ত করার ক্ষমতা প্রয়োগ করেনি। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনের অভিযোগ বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, প্রথম ধাপে কোনো সুর্নির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তাই ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে সুনির্দিষ্ট অনেক অভিযোগ পাওয়ায় ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়েছে।

প্রথম ধাপে ৭৩২টি ইউপির নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হবে ২২ মার্চ। দ্বিতীয় ধাপের ৬৭২টিতে ভোট হবে ৩১ মার্চ। দুই ধাপে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা হওয়া অভিযোগের তুলনায় ব্যবস্থা নেওয়ার সংখ্যা নগণ্য। বিশেষ করে প্রথম ধাপের অভিযোগগুলো আমলে নেয়নি কমিশন।

কমিশনের কর্মকর্তাদের দাবি, দ্বিতীয় ধাপে কিছু ব্যবস্থা নেওয়ায় অনিয়মের সংখ্যা কমেছে। এ কারণে প্রথম ধাপে ৬২টিতে একজন করে প্রার্থী থাকলেও দ্বিতীয় ধাপে এমন ইউপির সংখ্যা নেমেছে ১৩টিতে। প্রথম ধাপে বিএনপির প্রার্থী নেই ১১৯টিতে।

প্রথম ধাপের ক্ষেত্রে বিএনপি থেকে একাধিকবার অভিযোগ করা হয়, ৮৩টির বেশি ইউপিতে সরকারদলীয় ব্যক্তিদের বাধার কারণে তাদের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি। অনেকের মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে বাতিল করা হয়েছে। এ কারণে প্রথম ধাপে ১১৯টিতে বিএনপির প্রার্থী নেই।

কমিশন সচিবালয়ের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, ১১৯টি ইউপিতে বিএনপির প্রার্থী না থাকা এবং ৬২টিতে কেবল আওয়ামী লীগের প্রার্থী থাকা অস্বাভাবিক। এ বিবেচনাতেই কমিশন এসব ইউপির নির্বাচন স্থগিত করতে পারত, যা তারা দ্বিতীয় ধাপে এসে ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরামে করেছে। কমিশন পরশুরামের তিনটি ইউপির নির্বাচন স্থগিত এবং ফুলগাজীর ৬টির নির্বাচন বাতিল করেছে।

এ ছাড়া আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে পাবনা-২ আসনের সরকারদলীয় সাংসদ আজিজুল হককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে। আর বরগুনা-২ আসনের সরকারদলীয় সাংসদ শওকত হাচানুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আচরণবিধি লঙ্ঘনের কারণে কমিশনের সুপারিশে ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা পরিষদের সরকারদলীয় চেয়ারম্যান আবদুল আলিমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া দ্বিতীয় পর্যায় থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তার দফতর ছাড়াও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতে অনলাইনে জমা দেওয়ার ব্যবস্থা রাখার কথা ভাবা হচ্ছে। কমিশনের এসব পদক্ষেপের ফলে নির্বাচনী অনিয়ম প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে।

প্রথম ধাপে ৮৩ জন প্রার্থীকে মনোনয়নপত্র জমা দিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ স্থানীয়ভাবে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে দেয় বিএনপি। প্রতিকার না পেয়ে ঢাকায় নির্বাচন কমিশনেও অভিযোগ করা হয়। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেয়নি ইসি।

এইচএস/জেএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।